ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

বাংলাদেশ শুধু সীমান্ত খোলেনি, খুলেছে মানবতার দরজাও

মিরন নাজমুল | প্রকাশিত: ০৪:১১ এএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সন্ত্রাস দমনের অজুহাত ও মুসলিম বাঙালি পরিচয় দিয়ে মিয়ানমার সরকার প্রায় ২০ লক্ষ মানুষের একটি জাতিগোষ্ঠীকে চরম অস্তিত্বের সঙ্কটের মুখে ফেলে দিয়েছে। তাদের জাতিগত পরিচয় হচ্ছে- তারা রোহিঙ্গা। সাম্প্রতিক সময়ের ব্যাপক আলোচিত ঘটনা এটি। এই জাতিগোষ্ঠীর ওপর চরম হিংসা ও বিদ্বেষমূলক আচরণ করে তাদেরকে জাতিগতভাবে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার নির্মম খেলায় মেতেছে মিয়ানমার সরকার। অথচ এই সংখ্যালঘু নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠী আবহমান কাল ধরে বসবাস করে আসছে তাদের দেশে। আমাদের উপমহাদেশের মানব সভ্যতা বিবর্তনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, রোহিঙ্গারা আসলে জাতিগতভাবে হাজার হাজার বছর ধরে আরাকান রাজ্যে (বর্তমান রাখাইন রাজ্য) বসবাস করে এসেছে। এই রোহিঙ্গারাই যে আরাকানের ভূমিপুত্র তা ইতিহাসই নির্ধারণ করে দিয়েছে।

আমাদের উপমহাদেশের ইতিহাস ও ভুগোল পর্যবেক্ষণ করে জানা যায়, পূর্ব ভারত হতে প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ বছর পূর্বে অস্ট্রিক জাতির একটি শাখা ‘কুরুখ’ নৃগোষ্ঠী বঙ্গোপসাগরের উপকূল বরাবর পাহাড়, টিলা ও জঙ্গলে আবৃত্ত জনমানবহীন এই এলাকায় প্রথম বসতি স্থাপন করে। ক্রমান্বয়ে বাঙালি হিন্দু (যারা পরবর্তীতে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হয়েছে), পার্সিয়ান, তুর্কি, মোগল, আরবীয় ও পাঠানরা এখানে বসতি স্থাপন করে। আর এ সকল নৃগোষ্ঠীর শংকরজাত জনগোষ্ঠী হলো রোহিঙ্গা। রাখাইন রাজ্যের মানব সভ্যতার ইতিহাসের ধরনের সাথে আমাদের বাঙালি জাতির ইতিহাসের মিল আছে। আমাদের জাতিগত ইতিহাস পরিক্রমায় পেছনে তাকালেও তেমনটা ই দেখতে পাই, নৃগোষ্ঠীয় শংকরজাত জনগোষ্ঠী থেকেই বাঙালি জাতির উৎপত্তি। ভাষার সংমিশ্রণের কারণে রোহিঙ্গাদের কথ্য ভাষায় চট্টগ্রামের স্থানীয় উচ্ছারণের প্রভাবসহ তাদের শব্দভান্ডারে উর্দু, হিন্দি, আরবি শব্দও রয়েছে। ১৫৮১ থেকে ১৬৬৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের চট্টগ্রাম সম্পূর্ণভাবে আরাকান রাজাদের অধীনে শাসিত হয়। মুঘল সাম্রাজ্যের বাংলার সুবেদার শায়েস্তা খাঁ চট্টগ্রাম দখল করার পর চট্টগ্রাম আরাকান থেকে পৃথক হয়। কিন্তু দীর্ঘ ৮৫ বছর চট্টগ্রাম আরাকান রাজ্যের অধিনে থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অন্যান্য সামাজিক প্রয়োজনে রোহিঙ্গাদের অবাধ যাতায়াত ছিল চট্টগ্রামে।

খ্রিস্টপূর্ব ১৫০৭ থেকে পরবর্তী ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আরাকান রাজ্যটি এই সাড়ে তিন হাজার বছর চারটি পিরিয়ডে আনুমানিক ১১টি রাজতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এর মধ্যে ১০৪৪ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীন আরাকান রাজ্য দখল করে কট্টর বৌদ্ধ বর্মী রাজা আনাওহতা। এই রাজা রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলের রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করে মগদের নিয়ে বৌদ্ধ বসতি স্থাপন করেন। পরে মগরা তৎকালীন বাঙলার কিছু অংশও দখল করে নেন। যা পরবর্তী বাংলার মোগল শাসকরা উদ্ধার করে।

ইতিহাসের পরিক্রমায় পরে ১৪৩০ থেকে ১৭৮৪ সাল পর্যন্ত ২২ হাজার বর্গমাইল আয়তনের আরাকান একটি স্বাধীন রাজ্য ছিল। ১৭৮৪ সালে মিয়ানমারের রাজা বোদাওফায়া এটি দখল করে বার্মার (বর্তমানে মিয়ানমার) অনুগত রাজ্যে পরিণত করলে আরকানবাসীর দুর্ভোগ শুরু হয়। পরবর্তীতে বার্সা বৃটিশ সাম্রাজ্যের অধিনে শাসিত হয়। ১৯৪৮ সালে বৃটিশদের কবল থেকে বার্মা স্বাধীনতা লাভ করে কিন্তু রোহিঙ্গাদের দুর্দশা লাঘব হয় নি। বরং আরাকানি বৌদ্ধ ও মুসলিম রোহিঙ্গাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে শুরু করে। পরে স্বাধীন বার্মার প্রথম প্রধানমন্ত্রী বিদ্রোহ দমনের নামে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে প্রথম সেনা অভিযান পরিচালনা করে ১৯৫০ সালে। এর দু’বছর পর ‘অপারেশন মায়ু’নামে দ্বিতীয়বার সেনা অভিযান পরিচালনা করে হত্যা নির্যাতন করা হয় রোহিঙ্গাদের। এই অত্যাচার নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দানা বাধতে থাকে রোহিঙ্গাদের মধ্যে। বিদ্রোহী রোহিঙ্গাদের অনেকে বিদ্রোহীর খাতায় নাম লেখায় এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। কিন্তু ১৯৫৪ সালে ‘অপারেশন মুনসুন’ নামে জোরালো সেনা অভিযান শুরু করলে ১৯৬১ সালে বিদ্রোহীরা যুদ্ধবিরতী ঘোষণা করতে বাধ্য হয়।

পরের বছর ১৯৬২ সালে বার্মার সেনাবাহিনী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পরে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়। শাসকরা রোহিঙ্গা নিধনের নীল নকশা তৈরি করে আরাকান রাজ্যকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করে এবং ১৯৭৪ সালে আরাকান রাজ্যের নাম পাল্টিয়ে রাখাইন নামকরণ করে। এরপর সেখানকার স্থায়ী অধিবাসী রোহিঙ্গাদের বহিরাগত হিসেবে সম্বোধন করে তাদের তাড়ানোর জন্য সেনাবাহিনী ১৯৭৮ সালে ‘অপারেশন কিং ড্রাগন’ পরিচালনা করে। ঐ অপারেশনে হত্যা, ধর্ষণ, নির্বিচারে গ্রেফতার, বসতবাড়িতে আগুন দেয়াসহ রোহিঙ্গাদের ভূমির মালিকানা কেড়ে নিতে থাকে। এই অত্যাচারে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা প্রাণের ভয়ে নিজেদের বসত-ভিটা ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। পরবর্তীতে রাখাইন থেকে সমূলে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করার জন্য ছকে বাঁধা পরিকল্পনা অংশ হিসেবে ১৯৮২ সালে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা কর্তৃক করা নতুন নাগরিকত্ব আইনে রোহিঙ্গাদের রাখা হয়নি। এই আইনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের প্রায় ৭০ বছর ধরে করে আসা দাবি ও সংগ্রামকে অগ্রাহ্য করা হয়। এরপর ১৯৯১ সালে আবার শুরু হয় অত্যাচার নিপীড়ন। সেনা অভিযান চালে ‘অপারেশন ক্লিন এন্ড বিউটিফুল’নামে। সে সময় প্রায় ২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে। পরে ২০১২ সালে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করতে ব্যাপক পরিকল্পনা করে মিয়ানমার। যার অনুমোদন দেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট থিন সেন। সেটি এখন বাস্তবায়ন করছেন বর্তমান সেনাবাহিনীর প্রধান মিন অং হিলাইং। ২০১২ সাল থেকে চলমান নিপীড়ন ও সহিংসতা অতিতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। রোহিঙ্গাদের ওপর ধারাবাহিক নির্মমতায় ২০১৬ সালে সেনাবাহিনী আবার নামে নিধন অভিযানে এবং সর্বশেষ গত আগস্ট থেকে শুরু হওয়া ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ নিমর্মতা গোটা বিশ্বকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

দুই.
মিয়ানমারে দীর্ঘ ৫৪ বছর সামরিক শাসনের পর ২০১৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হয় মিয়ানমারে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের ওপর চলে আসা সামরিক জান্তার নীতি অনুসরণ করছে সু চির সরকারও। বরং সেটার চূড়ান্তরূপ পরিলক্ষিত হচ্ছে, কারণ রাখাইন রাজ্য প্রায় রোহিঙ্গাশূন্য হয়ে পড়েছে। বৃটিশ শাসন থেকে বার্মার মুক্তি-পরবর্তী সময় থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করার যে ছক কষেছিল দেশটির সামরিক জান্তা সেটার বাস্তবায়ন যেন হচ্ছে সেনা সমর্থিত সু চির কথিত গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে। সামরিক অভিযানের পালে হাওয়া দিতে গিয়ে শান্তিতে নোবেল জয়ী মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী ভাষ্য দিয়েছেন- রোহিঙ্গারা বহিরাগত। তারা মুসলমান বাঙালি। এর পূর্বে তিনি তার নোবেল বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘যখন মানুষের নিপীড়ন গ্রাহ্য করা হয় না, তখন সংঘাতের বীজ বপন করা হয়।’ এখন সু চি নিজেই যে রোহিঙ্গাদের নিপীড়ন গ্রাহ্য করছেন না, সে ক্ষেত্রে সঙ্ঘাতের বীজ থেকেই রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ বিদ্রোহী হয়ে ওঠতে পারে। ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু চৌকিতে রোহিঙ্গা কর্তৃক হামলা হয়ে থাকলে সেটার কারণ সু চির এই বক্তৃতার কোডের ভেতরেই আছে। রোহিঙ্গাদের একটি জাতি হিসেবে স্বীকৃতি না দিয়ে বরং বরাবরই তাদের বিদেশী আখ্যা দিয়েছে মিয়ানমার। তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। নামাজসহ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে বাধা দেয়া হচ্ছে। সম্পত্তি জোর করে কেড়ে নেয়াসহ বাধ্যতামূলক শ্রমে নিয়োজিত করা হচ্ছে। তাদের স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নেই, বিয়ে করার অনুমতি নেই। সন্তান হলে নিবন্ধন নেই। নানা অজুহাতে সেনা অভিযান চালিয়ে তাদের বাড়িঘরে আগুন দেয়া হয়। নানাভাবে শারীরিক নির্যাতন করা হচ্ছে। নির্বিচারে গুলি করে মারা হচ্ছে। পরিবারের সামনে নারী-শিশুদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। একটা জাতি-গোষ্ঠি যুগের পর যুগ এই নির্মমতায় শিকার হলে সে বিদ্রোহী হয়ে ওঠবেই।

ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের উপর সবচে বেশি প্রভাব পড়ছে। অতীতের ৫ লাখ শরণার্থী এবং ২০১৬ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আরো ৪ লাখ যোগ হয়ে বাংলাদেশে মোট রোহিঙ্গা শরণার্থী সংখ্যা দাঁড়ালো ৯ লাখ। এই বড় সংখ্যার শরণার্থীদের বেঁচে থাকার ন্যূনতম সুবিধাগুলো দিতে গেলেও বাংলাদেশের ওপর যথেষ্ট চাপ পড়বে। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের উপর সদয় হয়ে তাদের স্বভূমিতে ফেরত না নিলে বাংলাদেশের জন্য এই শরণার্থী সঙ্কট জটিল আকার ধারণ করবে। আর রোহিঙ্গাদের অস্তিত্বের সঙ্কট আরো গুরুতর হবে। আশ্রয় শিবিরের ক্ষুদ্র পরিসরে মানুষ তার মৌলিক চাহিদা নিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে না। আশ্রয় শিবিরের মানুষগুলোর স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে মিয়ানমারকেই। সেনা অভিযানে সু চির ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বিশ্বব্যাপী তিনি যে সমালোচনার ঝড় ওঠেছে, অনুমান করা হচ্ছে সেটার ধাক্কা সামলানোর জন্যই তিনি জাতিসংঘের ৭২তম অধিবেশনে যোগ দেননি সু চি। তবে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার প্রেক্ষিতে সু চি ১৮ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন। কিন্তু রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বাস্তবতা এড়িয়ে গেছেন। তবে বক্তব্যে, বাংলাদেশে অবস্থানরত শরণার্থীরা তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর মায়ানমারে ফিরে যেতে পারবে বলে যে আশ্বাস দিয়েছেন। সেটা বাস্তবায়ন হলে রোহিঙ্গা উদবাস্তু সঙ্কট দ্রবীভূত হবার আশা করা যায়।

মিয়ানমার আয়তনে বাংলাদেশ থেকে ৫ গুণ বড়, জনসংখ্যা বাংলাদেশের প্রায় ৩ ভাগের এক ভাগ। জনসংখ্যার ভারে ভারাক্রান্ত বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ছাড়াও মিয়ানমারের মগ জাতিগোষ্ঠীর বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সম্প্রদায়ের মানুষ বহু আগে থেকেই আমাদের দেশে বসতি গেড়েছে। বাংলাদেশের কক্সবাজার, টেকনাফ, উখিয়া, নাইক্ষ্যাংছড়ি, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়িসহ বিভিন্ন পার্বত্য অঞ্চলে ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় মিয়ানমারের মগ জাতিগোষ্ঠির লক্ষাধিক মানুষ জীবিকার প্রয়োজনে এদেশে স্থায়ীভাবে বসতি গড়েছে। তারা নাগরিকত্ব নিয়ে শান্তিতে বসবাস করে আসছে। তাদের সাথে আমাদের সম্প্রীতি বহাল আছে। সরকার তাদের সাথে কোন বৈষম্যমূলক নীতি প্রণয়ন করেনি, নির্যাতন তো দূরের কথা। পক্ষান্তরে মিয়ানমারে হাজার বছর ধরে বসবাস করে আসা সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বাঙালি মুসলিম আখ্যা দিয়ে দেশছাড়া করতে স্মরণকালের ভয়াবহ নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে।

অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়া চিত্র, মিডিয়ার সংবাদ এবং পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মুখের বর্ণনার চিত্র অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের উপর চালানো সেনা অভিযানের বীভৎসতা ছিল ভয়াবহ। বাংলাদেশ যথা সময়ে রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত না করলে হতাহতের সংখ্যা কোথায় গিয়ে দাঁড়াতো সেটা কল্পনা করাও কঠিন। নাফ নদী আর সমুদ্রে ডুবে মানবতার সলিল সমাধি রচিত হতো। কিন্তু মিয়ানমারের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিপরীতে বাংলাদেশ মানবতাকে টিকিয়ে রেখে বিশ্বের সামনে। পৃথিবীতে ভবিষ্যতে মানবতার ইতিহাস লেখা হলে বাংলাদেশরে নাম সেখানে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবতার দৃষ্টান্তকে সাধুবাদ জানাই। ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের শিকার থেকে বেঁচে আসা আতঙ্কিত অর্ধমৃতপ্রায় বৃদ্ধ, শিশু আর অসহায় নারীদের ঢল দেখে বাংলাদেশ প্রাথমিক অবস্থায় দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকলেও পরে লাখো শরণার্থীদের আমাদের দেশে ঢোকার প্রবেশাধিকার দিয়েছে। এতে শুধু সীমান্তই খুলে দেয়নি বাংলাদেশ, খুলে দিয়েছে মানবতার দরজাও।

লেখক : প্রবাসী লেখক ও সাংবাদিক
[email protected]

এইচআর/এমএস

আরও পড়ুন