ত্রাণ নিয়ে অনিয়ম, গাফিলতি নয়
বন্যায় ভাসছে উত্তরাঞ্চল। বানভাসি মানুষের দুঃখ দুর্দশার কোনো অন্ত নেই। ঘর-বাড়ি গেছে। গেছে জমি-জমা ক্ষেতের ফসলও। গবাদি পশু নিয়েও সংকট। ঘটছে প্রাণহানির ঘটনাও।মানুষজন আশ্রয়ের জন্য ছুটছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় উদ্ধার কাজে সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে। সরকার ত্রাণ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সব ধরনের সহায়তা পাবে বন্যার্তরা। বানভাসি মানুষজনের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে যথা সম্ভব সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জানমাল রক্ষায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী নানা ব্যবস্থা সত্ত্বেও উত্তরাঞ্চলে লাখ লাখ বানভাসি মানুষ দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। বাঁধ, উঁচু রাস্তা ও স্কুল-কলেজে আশ্রয় পেলেও দুর্গতরা অর্ধহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। কারো পাতে সামান্য খাবার জুটলেও অনেকেই অনাহারে থাকছে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ত্রাণ তৎপরতা থাকলেও তা খুব সামান্য। যে এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা রয়েছে সেখানকার জনপ্রতিনিধি, প্রভাবশালী নেতারা অনিয়ম করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
যেসব দুর্গত অনেক এলাকায় এখনো ত্রাণ পৌঁছায়নি কিংবা পৌঁছালেও অপর্যাপ্ত সেসব এলাকায় দ্রুততার সাথে ত্রাণ দিতে হবে। দেশের ২১ জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩২ লাখ ৮৭ হাজার মানুষ। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত প্রায় সাত লাখ ৫২ হাজার পরিবার আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এক হাজার ৫৯৯টি। এগুলোতে আশ্রয় নেওয়া মানুষের সংখ্যা চার লাখ ১১ হাজার।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ৯ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত তিন হাজার ২৫৫ মেট্রিক টন চাল ত্রাণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে। নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে প্রায় এক কোটি ৩২ লাখ টাকা। আর ১৬ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে যতদিন পর্যন্ত বন্যা কবলিত এলাকায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসে। কোনো অনিয়ম, দুর্নীতি বা গাফিলতি যেন না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের যে সুনাম রয়েছে সেটি ধরে রাখতে হবে। বানভাসি মানুষজনের দুঃখ দুর্দশা লাঘব হোক-এটিই প্রত্যাশা।
এইচআর/আইআই