ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

জলাবদ্ধতায় সীমাহীন ভোগান্তির শেষ কোথায়?

সম্পাদকীয় | প্রকাশিত: ০৩:৪৭ এএম, ২৬ জুলাই ২০১৭

দেশজুড়ে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশেই বৃষ্টিজনিত ভোগান্তি বেড়েছে। বিশেষ করে রাজধানী শহর ঢাকা এবং বিভাগীয় নগরী চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে লোকজনকে। এই দুর্ভোগ থেকে মানুষজনকে কিভাবে মুক্তি দেয়া যায় সে ব্যাপারে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

রাজধানীতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে বিভিন্ন স্থানে। বিশেষ করে অনেক রাস্তা হাঁটু সমান পানিতে তলিয়ে গেছে। খানা-খন্দকে ভরে থাকা রাস্তায় পানি জমে তৈরি হয়ছে অচলাবস্থার। তারওপর খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সৃষ্ট গর্তে পানি জমে দুর্ভোগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ যানজটের। ৩০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে লেগে যাচ্ছে ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। অন্যদিকে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম প্রায় ডুবে গেছে জলাবদ্ধতায়। এক মাসে পাঁচবার এই ডুবন্ত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। নৌকা নিয়ে অফিস করছেন লোকজন। ভারী বর্ষণের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম অঞ্চলের জনজীবন। ডুবে গেছে রাস্তাঘাটসহ বন্দর নগরীর অনেক এলাকা। সোমবার সন্ধ্যা ৬টার পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ২৩২ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস।

এদিকে ভারী বৃষ্টিপাত ও জোয়ারের পানিতে গত সোমবার দেশের ভোগ্যপণ্যের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ-আসাদগঞ্জের রাস্তাঘাট ছিল হাঁটু পানির নিচে। বেশিরভাগ আড়ৎ ও দোকানে পানি ঢুকে পড়েছে। পানি ঠেকাতে সামনে-পেছনে ইট-সিমেন্টের বাঁধ দিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। দোকানিদের অনেকেই ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন দোকানে ঢুকে পড়া পানিসেচে। খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগীর আহমদ দাবি করেছেন, সেখানকার বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেই পানি ঢুকে যাওয়ায় প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ব্যবসায়ীদের। এছাড়া নগরীর আগ্রাবাদ, সিডিএ, এক্সেস রোড, শান্তিবাগ, বেপারিপাড়া, ছোটপুল, হালিশহর, ষোলশহর, প্রবর্তক, বাকলিয়া, চকবাজার, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, চান্দগাঁও সব জায়গাই এখন হাঁটু থেকে গলা পানির নিচে তলিয়ে আছে। অন্যদিকে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পাহাড় ধস ছাড়াও ভূমি ধসের শঙ্কা রয়েছে। সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে তাই ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যেতে বলেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

জলাবদ্ধতা নিরসন নিয়ে কথা কম হয়নি। কিন্তু পরিস্থিতি দিন দিন আরো ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। পানি নিষ্কাশন নিয়ে সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপের পাশাপাশি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাও রাখতে হবে। ওয়াসার সেবা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে। শহর-বন্দর জলাবদ্ধ হয়ে থাকলে এর প্রভাব হবে মারাত্মক। খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে পানি প্রবেশের প্রভাব যে নিত্যপণ্যের বাজারে পড়বে না তার কি নিশ্চয়তা আছে? জলাবদ্ধতা নিরসনে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মেয়ররা নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ তেমন কিছু হয়নি। উন্নয়নের মহাসড়কে দেশ- কিন্তু রাজধানী কিংবা বন্দরনগরীর রাস্তায় যদি নৌকা চলে সেই উন্নয়ন আসলে কতোটা অর্থবহ এটা নিয়ে ভাবতে হবে।

এইচআর/পিআর

আরও পড়ুন