ডিএসসিসির বাজেট ও জনপ্রত্যাশা
২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৩ হাজার ৩৩৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। গতকাল সোমবার নগর ভবনে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে নিজের তৃতীয় এ বাজেট ঘোষণা করেন ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন। বাজেটে প্রস্তাবিত রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ও অন্যান্য আয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি ১২ লাখ টাকা। এছাড়া সরকারি ও বৈদেশিক উৎস থেকে আয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ১২৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। রাজস্ব ব্যয় বাজেটের সমান ধরা হয়েছে। এর মধ্যে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫৬৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা। বাজেটে সর্বাধিক রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে হোল্ডিং, পরিচ্ছন্নতা ও লাইটিং থেকে ৫১৫ কোটি টাকা।
সিটি কর্পোরেশনের কাছে নগরবাসীর প্রত্যাশা অনেক। তাই তারা ট্যাক্স দিবেন কিন্তু সে অনুযায়ী সেবা পাবেন না-এটি হতে পারে না। তাই জনপ্রত্যাশা পূরণে সিটি কর্পোরেশনকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে। বিশেষ করে এই সময়ের আলোচিত বিষয় হচ্ছে মশা। এডিস মশার আক্রমণে ব্যাপক আকারে লোকজন চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গু প্রভৃতি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এজন্য সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম প্রশ্নের মুখে পড়েছে। মশক নিধনে একটা বড় অংকের বরাদ্দ রাখা হয় বাজেটে। কিন্তু সে অনুযায়ী কাজ হয় না। হলে মহামারী আকারে কোনো মশাবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারতো না। বর্ষা মৌসুম চলছে। বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। সেই সাথে রাস্তাঘাটের খোঁড়াখুঁড়ি মিলিয়ে এক অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বলতে গেলে দুঃসহ জীবন-যাপন করছে নগরবাসী।
ঢাকা সিটিকে দুইভাবে বিভক্ত করে উত্তর ও দক্ষিণ দুটি সিটি কর্পোরেশন করা হয়। যাতে প্রশাসনকে জনসাধারণের দোর গোড়ায় নিয়ে যাওয়া যায় এবং মানুষজন আরো বেশি করে সেবা পায়। দক্ষিণ সিটি মেয়র সাঈদ খোকন তৃতীয় বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করলেন। এরই মধ্যে সময় অনেক গড়িয়ে গেছে। নির্বাচনের আগে তিনি অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। যানজটমুক্ত সবুজ, পরিচ্ছন্ন, তিলোত্তমা ঢাকা উপহার দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি। এখন বাস্তবের সাথে মিলিয়ে দেখতে হবে সেই অঙ্গীকার কতোটা বাস্তবায়ন হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের ক্ষমতা নেই-কিংবা সমন্বয়হীনতার কথা বলে একের দায় অন্যের উপর চাপিয়ে পার পাওয়া যাবে না। মানুষজন আসলে কাজ দেখতে চায়। একটি বাসযোগ্য ঢাকা বিনির্মাণে মেয়র কাজ করে যাবেন-এমনটিই আশা করছেন নগরবাসী।
এইচআর/পিআর