মৌসুমী রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে বাঁচান
চলছে বর্ষা মৌসুম। এই মৌসুমে ছড়িয়ে পড়ছে চিকুনগুনিয়াসহ নানা রোগ। মানুষজন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এই দুর্ভোগ থেকে লোকজনকে রক্ষা করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জনদুর্ভোগ লাঘবে নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে এবার বর্ষা মৌসুমে দেশে একযোগে ১০টি রোগ জেঁকে বসেছে। ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার ভয় সর্বব্যাপী। সেই সঙ্গে আছে ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, ফাইলেরিয়া এমনকি জাপানিজ এনসেফালাইটিস আতঙ্ক। সঙ্গে আছে জিকা প্রবেশের ভয়। দেশে কম-বেশি প্রকোপ আছে কলেরা, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টেরও। দেখা দিচ্ছে চর্ম রোগও। এসব রোগে কম-বেশি মৃত্যুর নজির আছে বিশ্বের কোথাও না কোথাও। মশাবাহিত রোগের জন্য বিশেষজ্ঞরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, সেই সঙ্গে সরকারেরই স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিটি করপোরেশনের আগাম প্রস্তুতিতে গাফিলতিকে দায়ী করছেন। চিকুনগুনিয়ার বিস্তারে কীটনাশকের মান অকার্যকর হয়ে পড়েছে কি না কিংবা মশা কীটনাশক প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে কি না তা-ও সঠিকভাবে গবেষণার তাগিদ দিচ্ছেন কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ। পানিবাহিত রোগ হিসেবে ডায়রিয়া প্রতিরোধে ওয়াসার দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করছে খোদ ঊর্ধ্বতন মহল। দেখা যাচ্ছে একজনের দায় অন্যজনের ওপর চাপিয়েই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব এড়াতে চাইছে। এজন্য সমস্যা আরো বাড়ছে।
চিন্তার বিষয় হচ্ছে গ্রাম-গঞ্জেও ছড়িয়ে পড়ছে এসব রোগ। হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে আক্রান্তদের। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য, বিশ্বে বছরে মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটছে। ডেঙ্গুর ঝুঁকিতেই আছে ১০০টি দেশের প্রায় আড়াই বিলিয়ন মানুষ। বাংলাদেশও অন্যতম একটি ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত। এডিস মশাসহ বিভিন্ন জাতের মশার কারণেই চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গুসহ নানা ধরনের রোগ বাড়ছে। এ জন্য মশা নিধনে সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে। বাসা-বাড়ি, ঝোপ-ঝাড় পরিষ্কার রাখতে হবে। জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত প্রভাবে যে সমস্ত রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে সে ব্যাপারে আগাম সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নতুন নতুন রোগব্যাধির ব্যাপারেও গবেষকদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সবধরনের প্রস্তুতি রাখতে হবে।
এইচআর/জেআইএম