কালোবাজারির বিরুদ্ধে কঠোর হোন
চালের দাম বৃদ্ধিতে চালকল মালিকদের সিন্ডিকেটের বিষয়টি এবার সরকারের পক্ষ থেকেও স্বীকার করা হল। এদের কারসাজিতেই চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে বলা হল এমনটিও। শুধু তাই নয় এ রকম অসাধুতার জন্য কালোতালিকাভুক্তির শাস্তির খড়গও সিন্ডিকেটধারীদের বিরুদ্ধে। এটা নিঃসন্দেহে স্বস্তির বিষয়। অন্যদিকে চালের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে জরুরি ভিত্তিতে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যে কোনো মূল্যে চালের দাম কমানোই এই মুহূর্তের করণীয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, যে সমস্ত চাল মিল মালিকরা অসাধুভাবে চাল মজুদ করেছেন, বাজারে দাম বাড়ানোর ভূমিকা রেখেছে; তাদের আমরা কালো তালিকাভুক্ত করছি। এ রকম মিল মালিকের সংখ্যা ১৬ হাজার। আগামী তিন বছর এসব মিল মালিকদের কাছ থেকে সরকার চাল কিনবে না।
মিল মালিকদের কারসাজিসহ নানাবিধ কারণে কয়েক দফা দাম বেড়ে চাল বিক্রি হয়েছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়। একটু ভালো মানের অন্যান্য চালের দাম গিয়ে ঠেকে ৬২ টাকায়। এর প্রেক্ষিতে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে আমদানি শুল্কহার কমানো, ব্যবসায়ীদের জন্য বাকিতে এলসি খোলার সুযোগ এবং ভিয়েতনাম থেকে আড়াই লাখ টন চাল আমদানির ঘোষণা দেয় সরকার। এসব উদ্যোগের ফলে চালের দাম কমবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বাংলাদেশের কৃষকদের এক মণ চাল উৎপাদন করতে ৭০০ থেকে সাড়ে ৭০০ টাকা খরচ হয়। কিন্তু কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের সঠিক মূল্য পায় না। চালের মূল্য বাড়লেও এর সুফল কিন্তু কৃষকরা পাবে না। এটা পাবে মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেটধারীরা। দুঃখজনক হচ্ছে চালকল মালিকরা বরাবরই নানা রকম ফন্দিফিকির করে চালের দাম বাড়ায়। তারা কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে। দাদন ব্যবসা করে অনেক কৃষককে বাধ্য করে কমদামে ধান বিক্রি করতে। কিন্তু সুযোগ বুঝে সিন্ডিকেট করে এরাই আবার চালের মূল্য বাড়িয়ে দেয়। একদিকে কৃষক উৎপাদন খরচ পায় না। অন্যদিকে ভোক্তাদের পকেট কাটা হয় দাম বাড়িয়ে। এই অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। শুধু কালো তালিকাভুক্তি করলেই হবে না। এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে সিন্ডিকেট করার সাহস না দেখাতে পারে। আর বাজারে একটি প্যারালাল সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে যাতে সিন্ডিকেধারীরা সুবিধা করতে না পারে। কৃষক ও ভোক্তাস্বার্থে সিন্ডিকেটধারীদের সকল অপতৎপরতা কঠোর হাতে দমন করতে হবে।
এইচআর/এমএস