চাল নিয়ে চালবাজি বন্ধ হোক
চালের মূল্য অব্যাহতভাবে বৃদ্ধির মুখে সরকার আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেয়। পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। এরফলে চালের দাম কমে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে। উচ্চ দ্রব্যমূল্যের যাঁতাকলে পিষ্ট মানুষজন অত্যাবশ্যকীয় পণ্য চালের মূল্য বৃদ্ধিতে যার পর নাই ভোগান্তিতে আছে। এই ভোগান্তি যত তাড়াতাড়ি দূর হয় ততোই মঙ্গল।
ঈদের আগে কয়েক দফা দাম বেড়ে চাল বিক্রি হয়েছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়। একটু ভালো মানের অন্যান্য চালের দাম গিয়ে ঠেকে ৬২ টাকায়। এর প্রেক্ষিতে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে আমদানি শুল্কহার কমানো, ব্যবসায়ীদের জন্য বাকিতে এলসি খোলার সুযোগ এবং ভিয়েতনাম থেকে আড়াই লাখ টন চাল আমদানির ঘোষণা দেয় সরকার। এসব উদ্যোগের ফলে ঈদের পর দাম কেজি প্রতি কমপক্ষে ৬ টাকা কমার আশা করলেও এখনও অস্থির চালের বাজার। সরকারের এসব উদ্যোগের কোনোটার প্রভাব এখনও বাজারে পড়তে শুরু করেনি। তবে চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে অর্থাৎ ভিয়েতনাম থেকে চাল দেশে পৌঁছালেই চালের দাম কমতে পারে।
জিটুজি চুক্তির ভিত্তিতে ভিয়েতনাম থেকে সরকার আড়াই লাখ টন চাল আমদানি করছে। এর মধ্যে ২০ হাজার টন চাল নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে এসে পৌঁছবে ১০ জুলাই। ১১ জুলাই দ্বিতীয় জাহাজে আসবে ২১ হাজার ৩০০ টন চাল। বাকি চাল আসবে পর্যায়ক্রমে। এই চাল বাজারে আসলেই মূল্য কমতে শুরু করবে। এছাড়া কারসাজি করে যেসমস্ত চালকল মালিকরা চাল বিক্রি বন্ধ করেছিল তারাও বাধ্য হবে চাল বাজারে ছাড়তে। সবমিলিয়ে চালের দাম স্বাভাবিক হতে বেশি সময় লাগবে না- এমনটিই আশা করা যাচ্ছে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এমনিতেই জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। তারওপর চালের মতো অপরিহার্য পণ্যের দামও যদি নাগালের বাইরে চলে যায় সেটি অত্যন্ত দুর্ভোগের কারণ হবে। কৃষক একদিকে ধানের উৎপাদন খরচও পায় না। অন্যদিকে চড়া মূল্যে এখন চাল কিনতে হচ্ছে। এই টাকাও কিন্তু কৃষকের ঘরে যাবে না। এ অবস্থার অবসান জরুরি। খাদ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। কৃষক যাতে তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যদিকে চালের মূল্যও ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে। এবারের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে চাল নিয়ে যেন কোনো চালবাজি হতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
এইচআর/এমএস