ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক স্থাপনা নয়

প্রকাশিত: ০৪:০০ এএম, ০৭ জুলাই ২০১৭

রাজধানীর গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ধানমন্ডি এলাকার সকল অবৈধ স্থাপনা আগামী ১০ মাসের মধ্যে সরিয়ে ফেলার জন্য নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে, আবাসিক এলাকার মধ্যে স্থাপিত সকল বাণিজ্যিক স্থাপনাও এই সময়ের মধ্যে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। সুষ্ঠু ও পরিকল্পিত নগরী গড়ে তুলতে এ ধরনের নির্দেশনা কার্যকর ভূমিকা রাখবে। আমরা আশা করবো কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

রিটকারী আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এবিএম আলতাফ হোসেন।এ সংক্রান্ত ২৩৭টি রিটের নিষ্পত্তি করে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন। ওই চার এলাকার অবৈধ স্থাপনা মালিকদের সরাতে ১০ মাস সময় দিয়েছেন আদালত। এ সময়ে রাজউক কোনো উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে পারবে না। পানি, বিদুৎ, গ্যাসের লাইনও বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না। ১০ মাসের মধ্যে যদি না সরায় তাহলে বিনা নোটিশে উচ্ছেদ করতে পারবে। তবে আদালত ১০ মাস সময় দিয়েছেন। এর মধ্যে যারা রাজউক থেকে অনুমতি নিতে পারবে তারা থাকবে। আর যারা পারবে না তাদের উচ্ছেদ হতে হবে। কারণ আবাসিক এলাকায় সীমিত আকারে বাণিজ্যিক কার্যরক্রম চালানো যেতে পারে। মূলত ২০১৬ সালে হলি আর্টিজান হামলার পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অনুমতিবিহীন হোটেল ও স্থাপনাসহ ৫৫২টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা করে রাজউক। এ প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদের জন্য ২৫ জুলাই থেকে কার্যক্রম শুরু করেছিলো রাজউক। এরপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে।

সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহর গড়ে উঠেছে একেবারেই অপরিকল্পিতভাবে। নাগরিক সুযোগ সুবিধার অনেক কিছুই এখানে অনুপস্থিত। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপে বিশ্বের বসবাসের উপযোগিতার বিবেচনায় সবচেয়ে অযোগ্য শহর হিসেবে ঢাকার নাম ওঠে এসেছে বার বার। এরচেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে! এই অবস্থা যে আমাদের জন্য গৌরবজনক নয় সেটি কি বলার অপেক্ষা রাখে?

আসলে পরিকল্পিত নগর বলতে বুঝায় একটি পরিকল্পিত জনবসতি। যার সবকিছু হবে পরিকল্পনা অনুযায়ী। কোথায় স্কুল কলেজ হাসপাতাল হবে, অফিস আদালত কোথায়, কোথায় বসবাসের জায়গা সবকিছুই হবে পরিকল্পনামাফিক। পরিকল্পনামাফিক সবকিছু হলে প্রত্যেক নগরেই মানুষ শৃঙ্খলাপূর্ণ নাগরিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করে। এতে তার নাগরিক জীবন হয় মর্যাদাপূর্ণ, গ্রাম কিংবা মফস্বলের তুলনায় উন্নততর, স্বস্তিদায়ক। কিন্তু এই নগরই আবার পরিকল্পনাহীনভাবে বেড়ে উঠলে তাতে নাগরিকদের জীবন অস্বস্তিকর হয়ে হঠে। জনজীবনকে তা বিপর্যস্ত করে ফেলে। মানুষের ভোগান্তির কোনো শেষ থাকে না।

বস্তুত ঢাকা এখন নানা দিক থেকেই ভোগান্তির নগরীতে পরিণত হয়েছে। তাই একে বাস উপযোগী করে গড়ে তুলতে হলে পরিকল্পনামাফিক সবকিছু হতে হবে। আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদে হাইকোর্টের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে হবে। নগরী যাতে বিশিষ্টতা না হারায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে দেখতে চায় মানুষজন।

এইচআর/এমএস

আরও পড়ুন