চালের মূল্য স্থিতিশীল হবে কবে?
চালের দাম বেড়েই চলেছে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ভোক্তাস্বার্থ বলে যদি কিছু থাকতো তাহলে এই অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হতো না। মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের এমনিতেই কোনো ছলের অভাব হয় না। এবার হাওর অঞ্চলের দুর্যোগকে চালের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এছাড়া সরকারের কাছে পর্যাপ্ত মজুদ না থাকাও চালের দাম বৃদ্ধির কারণ। যদিও সরকার বলছে মজুদ যথেষ্টই। এরপরও কেন দাম কমছে না বরং বেড়েই চলেছে সেটি দেখবে কে?
ঈদের আগে কয়েক দফা দাম বেড়ে চাল বিক্রি হয়েছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়। একটু ভালো মানের অন্যান্য চালের দাম গিয়ে ঠেকে ৬২ টাকায়। এর প্রেক্ষিতে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে আমদানি শুল্কহার কমানো, ব্যবসায়ীদের জন্য বাকিতে এলসি খোলার সুযোগ এবং ভিয়েতনাম থেকে আড়াই লাখ টন চাল আমদানির ঘোষণা দেয় সরকার। এসব উদ্যোগের ফলে ঈদের পর দাম কেজি প্রতি কমপক্ষে ৬ টাকা কমার আশা করলেও এখনও অস্থির চালের বাজার। সরকারের এসব উদ্যোগের কোনোটার প্রভাব এখনও বাজারে পড়তে শুরু করেনি। তবে চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে অর্থাৎ ভিয়েতনাম থেকে চাল দেশে পৌঁছালেই চালের দাম কমত পারে।
সরকারি বাজার নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কপোরেশন অব বাংলাদেশর (টিসিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবারের খুচরা বাজারদরের মূল্য তালিকায় রাজধানীর বাজারগুলোতে মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ঈদের আগের মতোই ৪৬ থেকে ৪৭ টাকায়, পাইজাম এবং লতা উন্নত মানের চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা, পাইজাম ও লতা নিম্ন মানের ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়। নাজিরশাইল ও মিনিকেট উন্নত মানের ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সাধারণমানের চালের দাম ছিল ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা। এছাড়া সরু চাল বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে। টিসিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঈদের আগের সপ্তাহেও এসব চালের দাম ছিল এমন। আর এক মাস আগে ছিল অধিকাংশ ৫ থেকে ৭ শতাংশ কম।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এমনিতেই জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। তারওপর চালের মতো অপরিহার্য পণ্যের দামও যদি নাগালের বাইরে চলে যায় সেটি অত্যন্ত দুর্ভোগের কারণ হবে। কৃষক একদিকে ধানের উৎপাদন খরচও পায় না। অন্যদিকে চড়া মূল্যে এখন চাল কিনতে হচ্ছে। এই টাকাও কিন্তু কৃষকের ঘরে যাবে না। এ অবস্থার অবসান জরুরি। খাদ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। কৃষক যাতে তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। অন্যদিকে চালের মূল্যও ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে।
এইচআর/এমএস