ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব: নিরাপদ পানির সরবরাহ বাড়ান
গ্রীষ্মের দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত। এরই মধ্যে নানা রকম রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে লোকজন। বিশেষ করে ডায়রিয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। রাজধানীর মহাখালীতে আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতালে প্রায় প্রতি তিন মিনিটে একজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছেন। বিশেষ করে শিশুরাও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। কলেরা হাসপাতাল হিসেবে সমধিক পরিচিত এ হাসপাতালে গত সপ্তাহে গড়ে প্রতিদিন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ছিল ৪শ’ জন। এছাড়া সারাদেশব্যাপীই ডায়রিয়ার প্রদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে জরুরি ভিত্তিতে।
মৃদু দাবদাহজনিত কারণে এক সপ্তাহের ব্যবধানে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৫শ’ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়ে আইসিডিডিআরবিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। স্বস্তির বিষয় যে, রোগীদের অধিকাংশই স্বল্প মেয়াদের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠছেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত দূষিত পানি পান ও খাবার খাওয়ার ফলে পানিবাহিত এ রোগটি হচ্ছে। জীবিকার সন্ধানে ব্যবসায়ী, দিনমজুর ও রিকশাচালকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন। অত্যধিক গরমের কারণে মানুষ প্রচুর পরিমাণে ঘামছে। গরমে স্বস্তি পেতে রাস্তার ধারে বরফমিশ্রিত বিভিন্ন ধরনের শরবত ও ফলমূল (আখ, লেবু, বেল, আনারস, আম ইত্যাদি) খাচ্ছেন। দূষিত পানির শরবত ও খোলা পরিবেশে ধুলাবালি মিশ্রিত ফলমূল খেয়ে ডায়রিয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া জরুরি।
গরমে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি থেকে মুক্ত থাকতে বেশি বেশি পানি পান করার কথা বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বিশুদ্ধ পানিরও সংকট। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে তৃষ্ণা মেটানোর জন্য রাস্তার ধারের দোকান থেকে যে পানি বা শরবত পান করছে তা বিশুদ্ধ নয়। এ কারণে রোগ সারার বদলে আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এই অস্বাস্থ্যকর শরবত বিক্রি বন্ধ করতে হবে। তারও আগে করতে হবে বিশুদ্ধ পানির সংস্থান। ওয়াসাকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে। ওয়াসার পানি নিয়েও নানা কথা আছে। এ ব্যাপারেও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।সহজলভ্য করতে হবে স্যালাইন।ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা যেন চিকিৎসা পায় নিশ্চিত করতে হবে সেটিও।
এইচআর/এমএস