বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করুন
দেশজুড়ে চলা প্রচণ্ড দাবদাহে জনজীবন বিপর্যন্ত। তারওপর লোডশেডিং দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে। সামনেই রমজান। এসময় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা অত্যন্ত জরুরি। সবদিক বিবেচনায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ বজায় রাখাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।
একথা সত্যি আওয়ামী লীগ সরকার দুই মেয়াদে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি করেছে। ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জনের সাফল্য সরকার গত বছর উদ্যাপন করেছে। লোকজন লোডশেডিং কি ভুলতেই বসেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা হচ্ছে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি শোচনীয় আকার ধারণ করেছে। খোদ রাজধানীতেই লোডশেডিং চরম আকার ধারণ করেছে। সবচেয়ে করুণ অবস্থা গ্রামের। কোনো কোনো অঞ্চলে এক নাগাড়ে দুই দিন পর্যন্ত বিদ্যুতের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রামের লোকজনকে। মোবাইল ফোন চার্জ দেয়ার মত বিদ্যুতও থাকছে না।
গ্রীষ্মকালে চাহিদা বাড়ার কারণে বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দিয়েছে-এমনটিই বলছেন কর্তৃপক্ষ। এ সময় যে চাহিদা বৃদ্ধি পাবে সেটি তো বলার অপেক্ষা রাখেনা। তাহলে সে অনুযায়ী প্রস্ততি নেয়া হয়নি কেন? আর যদি নেয়াই হয়ে থাকে তাহলে তো পরিস্থিতি এতোটা নাজুক হওয়ার কথা নয়। রমজান মাসে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য। এই কাজ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ করতে হবে।
এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন ও চাহিদার মধ্যে বিস্তর ব্যবধান রয়েছে। সরকার ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতার কথা বললেও বাস্তবতা হচ্ছে সর্বোচ্চ ৯ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়নি। এই শুভঙ্করের ফাঁকিও বিদ্যুৎ ঘাটতির আরেক কারণ। এখনো অনেক অঞ্চলে বিদ্যুৎ পৌঁছেনি। তাছাড়া শহর ও গ্রামের বণ্টন ব্যবস্থায়ও রয়েছে বিস্তর ব্যবধান। এই বৈষম্য দূর করতে হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনকে কাঙ্খিত মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। যা এই সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও ছিল। লোডশেডিংমুক্ত দেশ দেখতে চায় মানুষজন।
এইচআর/পিআর