ধর্ষকরা কি পার পেয়ে যাবে?
রাজধানীর বনানীর একটি অভিজাত হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে সাফাত আহমেদ নামে এক বন্ধুর জন্মদিনে যোগ দিতে এসে বন্ধুদের যোগসাজশে ধর্ষণের শিকার হন ওই দুই ছাত্রী। ধর্ষণের শিকার ওই দুই ছাত্রী গত শনিবার (৬ মে) সন্ধ্যায় বনানী থানায় ধর্ষণের অভিযোগে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। এরা হচ্ছেন সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিব, সাফাতের গাড়ি চালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী সাকিফ।
আসামিদের মধ্যে সাফাত ও নাঈম দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তারা ওই দুই ছাত্রীর বন্ধু। অস্ত্রের মুখে তারা ওই দুই ছাত্রীকে জিম্মি করে হোটেলের একটি কক্ষে নিয়ে রাতভর আটকে রেখে মারধর এবং হত্যার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেন। সেটা তারা ভিডিও করেন। আসামিদের অপর তিনজন ধর্ষণে সহায়তা ও ভিডিওধারণ করেন বলে মামলায় বলা হয়েছে।
ধর্ষণ নারীর বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্য অপরাধ। মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। গ্রেফতার করতে হবে অভিযুক্তদের। এ ধরনের অপরাধের শাস্তি না হলে তার পুনরাবৃত্তি হতেই থাকবে। ভুক্তভোগীরা আশঙ্কা করছেন অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা ভিন্নখাতে নেয়ার অপচেষ্টা হতে পারে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আমরা দেখতে চাই কাজেও এর প্রমাণ দিবে পুলিশ।
একটি দুর্ভাগ্যজনক প্রবণতা হচ্ছে অনেক সময় অপরাধীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যায়। তাছাড়া নির্যাতিতাকেও নানাভাবে নাজেহাল করা হয়। ধর্ষণের বিচার প্রক্রিয়াটিও অত্যন্ত জটিল। এখানে নির্যাতিতাকে আক্ষরিক অর্থেই নানা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ৪০ দিন পর মামলা হওয়ায় ধর্ষণের আলামত পাওয়ায় কষ্টসাধ্য এমনটিও বলা হচ্ছে। এমনকি অভিযুক্ত ধনীর দুলালদের একজনের পিতা গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ‘কিছু হয়ে থাকলেও সেটা আপোসেও হতে পারে’। কী ভয়ানক কথা। সমাজ থেকে এই অন্ধকার দূর করতে হবে। বিভিন্ন দিক থেকেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে, মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে। এসব উন্নতি বিফলে যাবে যদি নারী নির্যাতন বন্ধ করা না যায়। বিশেষ করে ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধের শাস্তি হতেই হবে। অপরাধীরা যতোই প্রভাবশালী হোক না কেন।
এইচআর/জেআইএম