স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সূচিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগান
বহুল প্রতীক্ষিত দক্ষিণ এশীয় স্যাটেলাইট ‘জিএসএটি-০৯’ এর সফল উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত আশার কথা। গত শুক্রবার বিকেল পাঁচটা তিন মিনিটে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে এই স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হয়। এই স্যাটেলাইট দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে টেলিযোগাযোগ, টেলি-মেডিসিন, টেলি-এডুকেশন ও অন্যান্য খাতে দ্রুত সেবা প্রদানে অবদান রাখবে।
ভারতের উদ্যোগে ২০১৪ সালে সার্ক সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশকে এই উপগ্রহে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। পাকিস্তান ছাড়া সার্কের অন্যান্য দেশগুলো এতে যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশের নিজস্ব কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ‘জিএসএটি-০৯’য়ের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হবে না এমন তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর সাউথ এশিয়া স্যাটেলাইটে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কৃত্রিম এই উপগ্রহ উৎক্ষেপণের ৪০ কোটি ডলারের পুরো ব্যয় বহন করছে ভারত। এই স্যাটেলাইটের ১২টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে একটি বিনামূল্যে পাচ্ছে বাংলাদেশ এবং তা যেভাবে ইচ্ছা ব্যবহার করতে পারবে।
কৃত্রিম উপগ্রহ আধুনিক একটি প্রযুক্তি। টেলিকমিউনিকেশন, টেলিভিশন সম্প্রচার, জলবায়ু বা আবহাওয়ার সর্বশেষ গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে জানার অন্যতম উপায় হচ্ছে কৃত্রিম উপগ্রহ। দুর্যোগ মোকাবেলা, প্রতিরক্ষা পরিকল্পনার ক্ষেত্রেও এই প্রযুক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু তৃতীয় বিশ্বের অনেক দেশই অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকায় এই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। উপগ্রহ উৎক্ষেপণ উপলক্ষে আয়োজিত ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও মালদ্বীপের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা। উপগ্রহ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো তথা এর জনগণ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে এমন আশাই ব্যক্ত করেন দক্ষিণ এশীয় নেতারা। পাশাপাশি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার সমৃদ্ধির লক্ষ্যে আগামী দিনগুলোতে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র আরো সম্প্রসারিত হবে এমন আশাও করেন তারা।
বাংলাদেশও অচিরেই স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করবে। তবে তার আগে দক্ষিণ এশীয় স্যাটেলাইটে যুক্ত হওয়াটা নিঃসন্দেহে প্রযুক্তিখাতে বড় উন্নতি। তাছাড়া পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়ে যে অনেক কঠিন ও ব্যয়সাধ্য কাজও সম্পন্ন করা যায় তার উদাহরণ হচ্ছে এই স্যাটেলাইট। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সূচিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে যোগাযোগ, শিক্ষা, গবেষণা, প্রযুক্তি হস্তান্তরসহ নানা বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরি হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।
এইচআর/জেআইএম