ভোক্তাস্বার্থ দেখবে কে?
রমজানকে সামনে রেখে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। অসাধু মুনাফালোভী চক্র মূল্যবৃদ্ধির নানা উসিলা খুঁজছে। সরবরাহে ঘাটতি, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, হাওর অঞ্চলে ফসলহানির মতো নানা অজুহাত সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে। অথচ সরবরাহ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে। এ অবস্থায় রমজানে যেন কোনো অবস্থায়ই বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। রক্ষা করতে হবে ভোক্তাস্বার্থ।
রমজানে অধিক মুনাফার লোভে সক্রিয় হয়ে উঠে অসাধু ব্যবসায়ী চক্র। এই সময়ে যে সমস্ত পণ্য বেশি চলে সেসবের দাম বাড়ানো হয় কৃত্রিমভাবে। এরই মধ্যে বেড়েছে চাল, চিনি ও তেলের দাম। রমজানে আড়াই লাখ টন করে সয়াবিন তেল ও চিনি, ১৫ হাজার টন খেজুর, ৫০ হাজার টন ডাল ও তিন লাখ টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। গত সপ্তাহে বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সব পণ্যের যথেষ্ট মজুদ রয়েছে । বরং তা অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি। সুতরাং সরবরাহে ঘাটতির যুক্তি দেখিয়ে দাম বাড়ানোর কোনো কারণই থাকতে পারে না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এরইমধ্যে পাঁয়তারা শুরু হয়ে গেছে। এটা বন্ধ করা উচিত।
দেশে বাজারকে স্বাভাবিক রাখতে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর, টিসিবি, প্রতিযোগিতা কমিশন, ট্যারিফ কমিশন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাজার মনিটরিং বিভাগসহ আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাজ করে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মতৎপরতা অনেকটাই স্থবির হয়ে আছে। যথাযথ নজরদারি না থাকায় নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে অসাধু ব্যবসায়ীচক্র। ফলে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে ভোক্তা অধিকার। প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে ভোক্তাস্বার্থ দেখবে কে?
যে কোনো উসিলায় দ্রব্যমূল্য বাড়ানো একটি দুর্ভাগ্যজনক প্রবণতায় পরিণত হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থায়ও গড়ে উঠেনি। টিসিবিকে সক্রিয় করে বাজারে একটি প্যারালাল সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রাখার কথা বলা হয় সবসময়। কিন্তু আজো টিসিবিকে সেই মাত্রায় কার্যকর করা যায়নি। সামনে রমজান মাস। এই মাসে এমনিতেই দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর একটি অপতৎপরতা থাকে। এরই মধ্যে যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে লক্ষণ কিন্তু ভালো নয়। তাই অবিলম্বে নিত্যপণ্যের বাজার স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি রমজানে বাজার যাতে অস্থিতিশীল হতে না পারে সেজন্য এখনই সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
এইচআর/এমএস