ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

ইলিশ রক্ষায় জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিন

প্রকাশিত: ০৪:১২ এএম, ১২ মার্চ ২০১৭

ইলিশ আমাদের  জাতীয় সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষায় এগিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরি। ইলিশের সহনশীল উৎপাদন বজায় রাখার লক্ষ্যে ‘জাটকা ইলিশ ধরবো না, দেশের ক্ষতি করবো না’ এই স্লোগানে গতকাল ১১ মার্চ থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত সারা দেশে ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০১৭’ পালিত হচ্ছে। এই সপ্তাহ পালনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেশে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতে জাটকা সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে সর্বসাধারণ  বিশেষ করে  জেলে, মৎস্যজীবী সম্প্রদায় ও ইলিশের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ী, আড়তদার, বরফকল মালিক, বোট মালিক, দাদনদার এবং ভোক্তাসহ সবাইকে সচেতন ও উদ্বুদ্ধকরণ। একইসঙ্গে ব্যাপক প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে বিষয়টিকে সামাজিক আন্দোলনে রূপ দেয়া। গতকাল শনিবার সকালে মৎস্য ভবন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে  ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করতে জাটকা ধরা, বেচা-কেনা এবং খাওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক। বলা বাহুল্য এই নিষেধাজ্ঞা সাময়িক। এবং দেশ ও জাতির স্বার্থে এটা অবশ্যই মেনে চলতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

ইলিশ শুধু জাতীয় মাছ ও সম্পদই নয়। বহু মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে ইলিশের ওপর। অর্থনীতিতেও রয়েছে বিরাট অবদান। পরিসংখ্যান মতে, দেশের মোট মাছ উৎপাদনের ১৩ ভাগ (যার আনুমানিক অর্থমূল্য আট হাজার ১২৫ কোটি টাকা) আসে ইলিশ মাছ থেকে। জিডিপিতে ইলিশ মাছের অবদান প্রায় দুই শতাংশ। প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ ইলিশ আহরণে সরাসরি এবং ২০ থেকে ২৫ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। পৃথিবীর সব দেশেই এ মাছের চাহিদা রয়েছে। প্রতিবছর ইলিশ মাছ রপ্তানি করে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছে।  যদি প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা ও জাটকা নিধন বন্ধ থাকে তাহলে ২১ থেকে ২৪ হাজার কোটি নতুন পরিপক্ব ইলিশ পাওয়া যাবে। এতে বছরে সাত হাজার কোটি টাকা মূল্যের ইলিশের বাজার সৃষ্টি সম্ভব হবে বাংলাদেশে।

সম্ভাবনার ইলিশকে তাই রক্ষা করতে হবে যে কোনো মূল্যে। এটা করতে হবে নিজেদের স্বার্থেই। যারা ইলিশের ওপর জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন তাদের জন্য ইলিশ ধরা বন্ধ মৌসুমে সরকার আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে। ইলিশ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে এমন ১৫টি জেলার ২ লাখ ২৪ হাজার ১০২ জেলেকে পরিচয়পত্র দিয়ে তাদের বছরে তিন মাস সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে সরকার। এটা খুবই কার্যকর একটি পন্থা। ভবিষ্যতে এর আওতা আরো বাড়ানো যায় কিনা সেটি নিয়ে ভাবতে হবে। তবে জেলেদের দায়িত্ব হচ্ছে নগদ প্রাপ্তির লোভ ছেড়ে দিয়ে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অসময়ে জাটকা ইলিশ না ধরা। যদি সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে জাটকা ইলিশ ধরা হয় সেটি হবে আত্মঘাতী। জাতীয় স্বার্থে জাটকা ইলিশ না কেনাটাও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এ সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনা অবশ্যই মেনে চলতে হবে। যারা মানবে না তাদের জন্য কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ কিছু সংখ্যক স্বার্থান্বেষী মানুষের কাছে জাতীয় স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।

এইচআর/এমএস

আরও পড়ুন