চাকরির প্রবাহ ঠিক রাখতে হবে
প্রতিবছর যে হারে শিক্ষিত চাকরি প্রার্থী তৈরি হচ্ছে সে হারে চাকরির ক্ষেত্র ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার সমন্বয় থাকতে হবে। নইলে এক পাহাড়সম সমস্যা তৈরি হবে। আদতে হয়েছেও তাই। চাকরি প্রার্থীর তুলনায় সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে চাকরির সংখ্যা খুবই কম। যা রয়েছে সেগুলোতেও যদি নিয়ম মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু রাখা না হয় এরচেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে একদিকে পাহাড়সম বেকারত্ব বাড়ছে অন্যদিকে সরকারি চাকরিতে হাজার হাজার শূন্য পদ থেকে যাচ্ছে। এগুলোতে নিয়োগের যেন কোনো তাগিদ নেই। এক অদৃশ্য শক্তির ইশারায় দিনের পর দিন বন্ধ থাকছে শূন্যপদে নিয়োগ।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কথাই ধরা যাক। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে অনেক শূন্য পদ রয়েছে। কিন্তু নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে ৭ হাজার ২৬২টি পদের জন্য। এর জন্য আবেদন করেছেন ৩০ লাখ চাকরিপ্রার্থী। কিন্তু দীর্ঘদিন এই নিয়োগ পরীক্ষায়ই হচ্ছে না, নিয়োগ দেয়া হবে তো দূরের কথা। বেকারত্বের এদেশে এটা স্পষ্টতই দায়িত্বে চরম অবহেলা। বেকারদের বঞ্চনাকে আরো বাড়িয়ে দেয়া। এটা কোনো অবস্থাতেই কাম্য হতে পারে না।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার দায়িত্ব ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটির (বিএসসি)। কিন্তু ২০১৫ সালে এই কমিটি গঠনের পর থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া যেখানে ত্বরান্বিত হওয়ার কথা সেখানে তা স্থবির হয়ে আছে। মাত্র ১৯ জনের লোকবল নিয়ে চলা প্রতিষ্ঠানটি নিজেই রয়েছে স্থবিরতায়। সুতরাং যে উদ্দেশে এই প্রতিষ্ঠান করা হয়েছিল তা কার্যত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। ফলে তারা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। এখন হয় প্রতিষ্ঠানটিকে সচল করতে হবে নইলে এ বিষয়ে বিকল্প চিন্তা করতে হবে।
যেখানে দিন দিন বেকারত্ব বাড়ছে সেখানে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ৭ হাজারেরও বেশি পদ দীর্ঘদিন খালি থাকা এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পরও আবেদনকারীদের পরীক্ষা না নেয়া ও সে অনুযায়ী নিয়োগ না দেয়া রীতিমত অন্যায়। শুধু এক্ষেত্রে নয় যে কোনো ক্ষেত্রে শূন্যপদের নিয়োগ দ্রুততর করতে হবে। এতে একদিকে কর্মসংস্থান হবে বেকারদের অন্যদিকে শূন্য পদ থাকার কারণে কাজের যে ক্ষতি হচ্ছে সেটিরও সমাধান হবে। ঠিক থাকবে চাকরির প্রবাহও। এ ব্যাপারে অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে-এমনটিই দেখতে চায় মানুষজন।
এইচআর/এমএস