প্রশ্নফাঁসের ফাঁস থেকে কবে মুক্তি?
এটা খুবই দুঃখজনক যে প্রশ্ন ফাঁসের মত গুরুতর অপরাধের ঘটনা ঘটেই চলেছে। নানা রকম উদ্যোগ সত্ত্বেও প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো যাচ্ছে না। বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা থেকে শুরু করে চাকরির প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস হচ্ছে। সবশেষ এসএসসি পরীক্ষায় গণিতের প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, যদি প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে প্রয়োজনে আবার গণিত পরীক্ষা নেয়া হবে। কিন্তু এতেই কি সমাধান মিলবে?
গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, অনেক এসএসসি পরীক্ষার্থী আগের রাতেই প্রশ্নপত্র পেয়ে যায় এবং পর দিন পরীক্ষার হলে দেয়া প্রশ্নপত্রের সঙ্গে তা হুবহু মিলে যায়। ফলে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী, যারা প্রশ্নপত্র পায়নি, তাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পরীক্ষা বাতিলের দাবিও উঠেছে। যারা প্রশ্ন ফাঁসের মত হীন কর্মকাণ্ডে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথাও বলা হচ্ছে জোরেশোরে।
এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে প্রশ্নফাঁসকারী একাধিক চক্র বিরাজমান। তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে। তারা প্রযুক্তির অপব্যবহার করেও প্রশ্ন ফাঁস করছে। এদের পেছনে শক্তিশালী হাত থাকাও অসম্ভব কোনো ব্যাপার নয়। অভিযোগ আছে সর্ষের ভেতরেই রয়েছে ভূত। নাহলে এই চক্রকে কেন সামাল দেয়া যাচ্ছে না। প্রশ্নফাঁসের কারণে দেখা দিচ্ছে বিশৃ্ঙ্খলা। পরীক্ষার্থীরা নানা রকম গুজবে কান দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অভিভাবকরাও যার পর নাই চিন্তিত। এ অবস্থায় যে কোনো মূল্যে প্রশ্ন ফাঁস রোধ করতে হবে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধানসহ আইন রয়েছে। কিন্তু সেই আইনে কারো সাজা হয়েছে এমন নজির মেলা ভার। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন ছাড়া সমাজে আইন প্রতিষ্ঠা কঠিন। যত ব্যবস্থার কথাই বলা হোক না কেন অপরাধীর শাস্তি না হলে কোনো অবস্থায়ই অপরাধ বন্ধ করা যাবে না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে সর্ষের ভেতরের ভূত আগে তাড়াতে হবে। অভ্যন্তরীণ কোনো সহযোগিতা ছাড়া প্রশ্নফাঁস অসম্ভব ব্যাপার। এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশ্নফাঁস রোধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
এইচআর/পিআর