ভয়ঙ্কর কিশোর অপরাধ : পরিবারকে দায়িত্ব নিতে হবে
এটা খুবই উদ্বেগজনক খবর যে দেশে কিশোর অপরাধ বাড়ছে। অবস্থা এমন হয়েছে খুনখারাবির মত ঘটনাও ঘটছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা করা হচ্ছে। বখে যাওয়া কিশোর অপরাধীরা ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান। তারা হত্যাকাণ্ড, অপহরণ ছিনতাই থেকে শুরু করে সব ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। এমনকি টাকা পেলে যে কাউকে হত্যা করতে দ্বিধা করে না। তারা স্কুল ব্যাগের পাশাপাশি জুতার মধ্যে করে অস্ত্র বহন করে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে বিক্রি করছে।পাড়া-মহল্লায় গ্রুপ বেঁধে চলাফেরা করে। গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডায় লিপ্ত থাকে। স্কুল-কলেজের মেয়েদের দেখলেই নানাভাবে হয়রানি করে। এ অবস্থার অবসান হওয়া অত্যন্ত জরুরি।
গত ৬ জানুয়ারি উত্তরায় কিশোর গ্রুপের হাতে প্রতিপক্ষ গ্রুপের সদস্য ও স্কুল ছাত্র আদনান কবির নিহত হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনার পরই ভয়ঙ্কর কিশোর গ্রুপের অপরাধের বিষয়টি আলোচনায় ওঠে আসে। এ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে গোয়েন্দারা চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন। উত্তরায় ডিসকো বয়েজ, নাইন স্টার গ্রুপ, ভাইপার গ্রুপ, রেড অ্যালার্ট, রেড অ্যালার্ট বয়েজ গ্রুপ, এইচ স্টার গ্রুপ ও এইট স্টার গ্রুপ নামে বেশ কয়েকটি গ্রুপ সক্রিয়। এসব গ্রুপের সদস্যরা বেপরোয়া। তারা যে কোনো ধরনের অপরাধকর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে। বড়লোকের বখাটে সন্তানরা অপরাধ করে ধরা পড়লেও তদবির করে তাদের ছাড়িয়ে নেয়া হয়। প্রভাবশালী হওয়ায় অভিযোগ করারও সাহস পান না ভুক্তভোগীরা।
কিশোর এসব অপরাধীর ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কোনো বিকল্প নেই। বিপথগামী এসব কিশোরদের যদি এখনই ফেরানো না যায় তাহলে এর চরম মূল্য দিতে হবে। বয়ঃসন্ধিকালের এসব কিশোরদের হিতাহিত জ্ঞান খুব একটা কাজ করে না। অনেক ক্ষেত্রে এরা পারিবারিক সান্নিধ্য থেকেও বঞ্চিত হয়। ফলে হয়ে ওঠে আরো বেপরোয়া। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলনও গড়ে তুলতে হবে। সমাজকে অবক্ষয় থেকে বাঁচাতে হবে। পারিবারিক বন্ধন, নৈতিক শিক্ষা, অনুশাসনও এদের বিপথ থেকে ফেরাতে পারে। কাজেই এ ব্যাপারে পরিবারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। সন্তান কোথায় যায়, কী করে, কার সাথে মেশে- এটা নজরদারিতে রাখলে অনেক সমস্যা থেকেই মুক্তি পাওয়া যাবে।
এইচআর/এমএস