ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

গ্যাস সংকটে দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ০৩:৫৭ এএম, ১১ ডিসেম্বর ২০১৬

রান্নার জন্য অত্যাবশ্যকীয় জ্বালানি গ্যাস সংকটের কারণে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন রাজধানীর অধিকাংশ এলাকার মানুষজন। গ্যাস না থাকায় অনেকের রান্নাঘরে চুলা জ্বলছে না। তাই পরিবারের জন্য রান্না করা কঠিন হয়ে পড়েছে।  এ অবস্থায় অবিলম্বে গ্যাস সংকট দূর করে জনদুর্ভোগ লাঘব করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

জাগো নিউজের এ সংক্রান্ত এক রিপোর্ট থেকে জানা যায়, গত শুক্রবার (০৯ ডিসেম্বর) ছুটির দিনে উত্তরা ও গুলশানের জরুরি গ্যাস নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে মোট ১০টি টেলিফোনে অভিযোগের ৭টিই ছিল গ্যাসের অপ্রতুল সরবরাহ সংক্রান্ত। সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় সংসদ ভবনের ক্যান্টিনেও গ্যাস সরবরাহ নেই বলে অভিযোগ এসেছে। এছাড়া লালমাটিয়া, উত্তরা, ইব্রাহিমপুর, ডিওএইচএস, বসুন্ধরা, মিরপুর আলীবাগ, আশকোনা প্রেমবাগান, ধানমন্ডি, লালবাগ, আজিমপুর, কামরাঙ্গীরচরসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের এ সংকট চলছে। তিতাস গ্যাস কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিবছর শীতকালে গ্যাস লাইনের পাইপে বরফ জমে গ্যাসের সরবরাহের গতি কমে যায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ-বাখরাবাদ ও ঘোড়াশাল থেকে বছরের অন্যান্য সময়ে পাইপের মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবে গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলেও এ সময় তা সম্ভব হয় না।

গ্যাস মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। অনেকদিন ধরেই এর সঠিক ব্যবহার নিয়ে যুক্তিতর্ক চলছে। রান্না-বান্নার কাজসহ যানবাহনের জ্বালানি, শিল্পকারখানা এমনকি বিদ্যুত উৎপাদনেও গ্যাসের ব্যবহার হচ্ছে। বিদ্যুৎ-ব্যবস্থা উন্নত রাখার জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ (পিডিবি) বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে বেশি হারে গ্যাস দিতে হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে আবাসিক গ্যাস সরবরাহে। গ্যাস প্রাকৃতিক সম্পদ। বাংলাদেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে কী পরিমাণ গ্যাস মজুদ আছে সেটিও এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে বলতে পারছেন না জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কারেরও সম্ভাবনা কতটুকু এ নিয়েও পরিষ্কার কোনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে মজুদ গ্যাসে কতদিন চলবে সেটিও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। অথচ গ্যাস ব্যবহারের সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। একই গ্যাস আমরা ব্যবহার করছি রান্না-বান্নার কাজে। প্রাইভেট পরিবহন থেকে শুরু করে পাবলিক পরিবহন চলছে গ্যাসে। বিদ্যুত উৎপাদনের মতো বড় কাজেও ব্যবহৃত হচ্ছে গ্যাস। একদিকে ব্যবহার করতে গিয়ে অন্যদিকে টান পড়ছে। তাছাড়া এখনই যদি জ্বালানি নীতি ঠিক করা না হয় তাহলে অদূর ভবিষ্যতে যখন গ্যাসের মজুদ ফুরিয়ে আসবে তখন কিভাবে সবকিছু চলবে সেটি কি ভেবে দেখা হয়েছে? মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ আমরা রান্না করে শেষ করবো নাকি ধনীদের প্রাইভেটকারের জ্বালানি হবে এই গ্যাস। গ্যাসে রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি দেয়া হয়। এই ভর্তুকির ফল যাতে এদেশের মালিক সাধারণ মানুষ পায় সেটি নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি।

জ্বালানি নীতিমালাতো করতেই হবে। তারও আগে নিশ্চিত করতে হবে গ্যাসের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। বিশেষ করে আবাসিক ভবনে এখন যে গ্যাস সংকট চলছে সেটি দূর করতে হবে সবার আগে। গ্যাসের ক্ষেত্রে রেশনিং এর কথা বলা হচ্ছে। প্রয়োজনে সেটি করতে হবে। বন্ধ করতে হবে অপচয়, অপব্যবহার। এছাড়া দুর্নীতির যে অভিযোগ এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একটি সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে প্রাকৃতিক এই সম্পদের সুফল যাতে সবাই পায় নিশ্চিত করতে হবে সেটিও।

এইচআর/এমএস

আরও পড়ুন