এমপি বদির সাজা : দুদক আরো গতিশীল হোক
দুদকের দায়ের করা মামলায় কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) আবদুর রহমান বদিকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে ক্ষমতাসীন দলের একজন এমপির সাজা হওয়ার ঘটনা বিরল ব্যতিক্রম বলা যায়। সেদিক থেকে আদালতের এই রায় আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে এক বড় অগ্রগতি। বিশেষ করে দুর্নীতিবিরোধী একটি সমাজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও এ ধরনের বিচার ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
গত বুধবার সকালে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহম্মেদ জমাদ্দার এ রায় ঘোষণা করেন। নিজের তিন কোটি ৮৪ লাখ ৩৯ হাজার ৪২৩ টাকার সম্পদ গোপন করার অপরাধে দুদক আইনের ২০০৪ সালের ২৬(২) ধারায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এই কারাদণ্ড দেয়া হয়। এমপি বদির বিরুদ্ধে দুদক ২০১৪ সালে দুটি অভিযোগে মামলা করেছিল। একটি ছিল সম্পদের তথ্য গোপন করা এবং অন্যটি ছিল জ্ঞাত আয়ের বাইরে অতিরিক্ত সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ। ২০১৫ সালের ৭ মে দুদকের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদ আদালতে বদির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহম্মেদ জমাদ্দার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীন দলের এমপিদের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার নজির খুব একটা নেই। এজন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে মানুষের অনেক প্রত্যাশা। দুদক সংসদ সদস্য বদির ক্ষেত্রে মামলা দায়ের থেকে শুরু করে অভিযোগ প্রমাণ পর্যন্ত যে দক্ষতা ও আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছে, তা অভিনন্দনযোগ্য। দুদকের এই গতিশীলতা ধরে রাখতে হবে। আরো যাদের বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত করছে তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। শুধু ক্ষমতাসীন দলই নয়, যে কারো দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদককে আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। সরকারকেও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দুদকের যে কোনো পদক্ষেপকে সহায়তা করতে হবে। সমাজে দুর্নীতিবিরোধী একটি মনোভাব গড়ে তোলাও অত্যন্ত জরুরি।
মনে রাখা প্রয়োজন, যতো উন্নয়ন-অগ্রগতিই হোক না কেন দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে না পারলে কোনো কিছুই টেকসই হবে না।
এইচআর/পিআর