আনন্দমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হোক দুর্গোৎসব
বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ দেশে প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব শান্তিপূর্ণ উপায়ে অনুষ্ঠিত হোক এটাই কাম্য। এবার পূজা উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মানুষজন যাতে আনন্দমুখর পরিবেশে পূজা উৎসবে অংশ নিতে পারে সেটি নিশ্চিত করাটাই হবে সকলের জন্য মঙ্গলজনক।
মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে গতকাল শুক্রবার শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসব। পাঁচ দিনের দুর্গোৎসবের প্রথম দিনে গতকাল ষষ্ঠীতিথিতে মণ্ডপে মণ্ডপে দেবীর অধিষ্ঠান হয়। দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস ছাড়াও সব মণ্ডপে পুষ্পাঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও ভোগ-আরতির আয়োজন করা হয়। আজ মহাসপ্তমী। আজ সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মণ্ডপে মণ্ডপে চলবে আরতি। এই আরতি দেখতে সন্ধ্যা থেকেই মণ্ডপগুলোতে দর্শনার্থীদের ঢল নামবে।
মণ্ডপে মণ্ডপে ঢাকের বাদ্য, শঙ্খ আর উলুধ্বনির শব্দ দেবী দুর্গার মর্ত্যে আগমনের কথা জানান দিচ্ছে। এ ছাড়া পূজার মন্ত্রোচ্চারণ, আরতি আর মাইকের আওয়াজে এখন মাতোয়ারা পূজা মণ্ডপগুলো। হিন্দুদের পাশাপাশি অন্য ধর্মের মানুষও এসব মণ্ডপে ঘুরতে আসায় উৎসব সার্বজনীন রূপ নিয়েছে। বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব।
এবার রাজধানীর ২২৯টিসহ সারাদেশে মোট ২৯ হাজার ৩৯৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে। পূজাকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সারাদেশে। প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশ, আনসার-ভিডিপির পাশাপাশি কোথাও কোথাও নিযুক্ত করা হয়েছে র্যা ব-বিজিবি সদস্যদের। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যদরা আছেন সতর্ক পাহারায়। অনেক মণ্ডপে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরে কড়া তল্লাশির মধ্য দিয়ে মণ্ডপে প্রবেশ করতে হচ্ছে দর্শনার্থীদের। তবে এতসব কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছেদ ফেলেনি পূজার আনন্দমুখরতায়।
এবার পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এমন এক সময় যখন ধর্মীয় উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। দেশে ঘটে গেছে গুলশান হামলার মতো ট্র্যাজিক ঘটনা। তাই বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে পূজামণ্ডপকে ঘিরে। পূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। একারণে পূজার উৎসবে বিপুল জনসমাগম হয়। উৎসবের আনন্দে মাতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এদেশে এটাই কাম্য। মানুষে মানুষে যে মহাসম্মিলন তা নানা উৎসবকে কেন্দ্র করে আরো জোরদার হয়। যার যার অবস্থান থেকে সকলেরই দায়িত্ব রয়েছে প্রতিটি উৎসব নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে। আমরা যেন সেই দায়িত্বটুকু ভুলে না যাই। সবাইকে শারদীয় শুভেচ্ছা।
এইচআর/এমএস