ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

জাতিসংঘে অনন্য বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৪:০৪ এএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবতার স্বার্থে বিশ্ব থেকে সংঘাত দূর করে শান্তির পথে এগিয়ে যেতে অভিন্ন অবস্থানে উপনীত হতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি যে আহ্বান জানিয়েছেন তা অত্যন্ত গুরুত্ববহ। প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় সময় গত বুধবার বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন। এ সময় তিনি ক্ষুধা, দারিদ্র্য, বৈষম্য,  সন্ত্রাস, জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত সমস্যা, শরণার্থী সমস্যা, নারীর ক্ষমতায়নসহ নানা বিষয় তুলে ধরেছেন  তার বক্তব্যে। এর মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাদেশকে তুলে ধরেছেন উচ্চাসনে। বাংলাদেশ যে নানা ক্ষেত্রে রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে সেটিও তিনি তুলে ধরেছেন। এটি নিঃসন্দেহে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতা এবং অনন্য নেতৃত্বেরই বহিঃপ্রকাশ।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ‘এক মানবতার’ জন্য কাজ করার উদ্দেশ্যে আমরা সকলে এখানে সমবেত হয়েছি। মতের ভিন্নতা থাকা সত্বেও আসুন ন্যূনতম বিষয়ে সকলে একমত হয়ে অভিন্ন অবস্থানে উপনীত হই এবং মানবতার স্বার্থে বিশ্ব থেকে সংঘাত দূর করে শান্তির পথে এগিয়ে নিয়ে যাই। শেখ হাসিনা বলেন, এটা করার জন্য জাতিসংঘ আমাদের একটি অনন্য প্লাটফর্ম উপহার দিয়েছে। জাতিসংঘকে টেকসই ও প্রাসঙ্গিক একটি সংস্থা তৈরিতে আসুন আমরা নতুন করে শপথ গ্রহণ করি।

বিশ্বব্যাপী চলমান সন্ত্রাসের ভয়াবহতা নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমেরিকা থেকে ইউরোপ, আফ্রিকা থেকে এশিয়ায় সন্ত্রাসীরা অগণিত নিরীহ মানুষকে অহরহ হত্যা করছে। আমরা মনে করি, সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম, বর্ণ বা গোত্র নেই। এদের সকল রূপে ও প্রকাশে সমূলে মূলোৎপাটন করার সংকল্পে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সন্ত্রাস ও সহিংস চরমপন্থার মূল কারণগুলো আমাদের চিহ্নিত করতে হবে। একইসঙ্গে এদের পরামর্শদাতা, মূল পরিকল্পনাকারী, পৃষ্ঠপোষক, অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহকারী এবং প্রশিক্ষকদের খুঁজে বের করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী ভাষণের শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর একটি ভাষণের অংশ তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে এই মহান সাধারণ পরিষদে বলেছিলেন, ‘শান্তির প্রতি যে আমাদের পূর্ণ আনুগত্য, তা এই উপলব্ধি থেকে জন্মেছে যে, একমাত্র শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই আমরা ক্ষুধা, দারিদ্র্য, রোগ-শোক, অশিক্ষা ও বেকারত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করার জন্য আমাদের সকল সম্পদ ও শক্তি নিয়োগ করতে সক্ষম হবো’।

প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে উজ্জ্বল এক বাংলাদেশকেই তুলে ধরেছেন বিশ্ববাসীর সামনে। বিশ্বব্যাপী চলমান সন্ত্রাস মোকাবেলায় তার সরকার যে কঠোর নীতি নিয়েছে সেটিও তিনি তুলে ধরেছেন। নারীর ক্ষমতায়ন ছাড়াও বিভিন্ন অর্জনে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। ক্ষুধা, দারিদ্র্য মোকাবেলায় বিশ্বনেতাদের এক কাতারে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি মানবতার জয়গানই গেয়েছেন। জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবেলায় উন্নত বিশ্বকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া শরণার্থী সমস্যা সমাধানে তিনি বিশ্বনেতৃবৃন্দকে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যার সমাধানেও তিনি সহযোগিতা চেয়েছেন। ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বৈষম্যমুক্ত এক নিরাপদ বিশ্ব গড়ে তোলার যে আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে এসেছে- বিশ্ব নেতাদের এক মানবিক পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য এসকল বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

এইচআর/এবিএস

আরও পড়ুন