আর কতো রিশাকে এভাবে চলে যেতে হবে?
রিশার মৃত্যুর কোনো সান্ত্বনা নেই। একটি ফুল না ফুটতেই ঝরে গেল। অষ্টম শ্রেণিতে পড়া এই মেয়েটিকে নিয়ে পরিবারের কতোই না স্বপ্ন ছিল। কিন্তু মুহূর্তেই সব চুরমার হয়ে গেল। দুঃখজনক হচ্ছে এই ধরনের অপমৃত্যুর মিছিল দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে। কে নেবে এই মৃত্যুর দায়ভার? হত্যাকারী কি আদৌ ধরা পড়বে? ধরা পড়লেও কি কতসব আইনি জটিলতা আর মামলার পাহাড় ডিঙিয়ে শেষ পর্যন্ত ঘাতকের শাস্তি নিশ্চিত করা যাবে? বিবেকবান মানুষের এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা অাজ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
গত বুধবার রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশাকে পথচারী পারাপার সেতুতে ছুরিকাঘাতে মারাত্মক জখম করে এক বখাটে যুবক। গতকাল রোববার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে। ইস্টার্ন মল্লিকা মার্কেটের একটি দর্জির দোকানের কর্মচারী ওবায়েদ প্রায়ই তাকে উত্ত্যক্ত করত। সেই শেষ পর্যন্ত ঘাতকরূপে আবির্ভূত হল।
এই মৃত্যু অনেক প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। যে মুহুর্তে মেয়েরা প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। এমনকি সদ্য ঘোষিত এইচএসসির ফলাফলেও ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা এগিয়ে, সে মুহূর্তে এ ধরনের মৃত্যু মেনে নেওয় যায় না। একদিকে আমরা দেখছি উন্নয়ন প্রগতি, অন্যদিকে নারীর ওপর হিংস্র হায়েনাদের ছোবল। খোদ রাজধানীতে এক ঘাতক কি করে একজন স্কুলগামী শিক্ষার্থীকে এভাবে হত্যা করতে পারে সেটা ভাবিয়ে তুলছে সবাইকে। রাস্তা পারাপারের ফুটওভারব্রিজের নিরাপত্তা নিয়েও ভাবতে হবে। আর ঘটনার পাঁচদিন পরও ঘাতককে আটক না করতে পারাটা এক ধরনের ব্যর্থতাই। পুলিশ যখন ভয়ঙ্কর জঙ্গিদের আস্তানায় হানা দিয়ে তাদের খতম করছে তখন নারীর শত্রু এই ঘাতকদের খুঁজে বের করাটা এমন কোনো দুঃসাধ্য নয়।
রিশার পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার কোনো ভাষা আমাদের জানা নেই। কেবল অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করে আর কোনো রিশার চলে যাওয়ার পথ বন্ধ করতে পারলেই কিছুটা স্বস্তি মিলবে। সে লক্ষে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
এইচআর /এমএস