ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নয়

প্রকাশিত: ০৭:০১ এএম, ১৭ আগস্ট ২০১৬

গ্যাসের দাম বৃদ্ধির জন্য তোড়জোড় শুরু হয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে।এ জন্য  গণশুনানির ব্যবস্থাও রয়েছে। শুনানিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, বিইআরসি, ভোক্তা প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলগুলোর অংশ নেয়। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা বলে গণশুনানি অনেকটা লোকদেখানো আনুষ্ঠানিকতা। সিদ্ধান্ত যা নেওয়ার তাই থাকে। এ কারণে  শুনানিতে অংশ নিতেও সংশ্লিষ্টদের বিশেষ কোনো আগ্রহ থাকে না। বিশেষ করে সাধারণ  ভোক্তারা থাকে উপেক্ষিত। অথচ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির  সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে তাদের ওপরই। এ অবস্থায় ভোক্তাস্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক-এটিই সংশ্লিষ্টরা চান।

আমরা বরাবরাই দেখেছি ভর্তুকির কথা বলে মূল্যবৃদ্ধির শর্টকাট পথে সরকার এগোয়। দুর্মূল্যের বাজারে এমনিতেই জনসাধারণের নাভিশ্বাস উঠেছে। এর ওপর গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হলে তা হবে তাদের জন্য ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’। অধিকাংশ যানবাহন এবং ট্রাক, লরি এখন গ্যাসচালিত।গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ফলে যাত্রীভাড়া বাড়বে। বাড়বে পণ্য-দ্রব্য বহনের খরচও। এর ফলে নিত্যপণ্যের বাজার আরও অস্থির হবে।  এই বৃদ্ধির কুফল মানুষজনকে নানা ভাবে ভোগাবে।

বিষেজ্ঞরা বলছেন, এবারের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের তাৎক্ষণিক, মধ্যম মেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের বস্ত্র খাতে। বিশেষ করে সামগ্রিকভাবে রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পে। তাই বাংলাদেশের এ শিল্পের কোনো বিপর্যয়ে প্রতিবেশী দেশের লাভবান হবে। ভারত যেখানে গত অক্টোবরে গ্যাসের দাম ১৮ শতাংশ হ্রাস করেছিল। সেখানে আমাদের দেশে কেন দাম বাড়ানো হচ্ছে। এটা তো এক আত্মঘাতী প্রবণতাই বলা যায়। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা গোল্ডম্যান স্যাক্স বলেছে, ভারতের শিল্পোদ্যোক্তারা চীন, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার চেয়ে কম দামে গ্যাস ব্যবহার করতে পারছেন। ফলে তাদের পণ্যের উৎপাদন খরচ কম পড়ছে। এ কারণে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকছে ভারতীয় পণ্য।

এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন ভর্তুকি কমানোর জন্য মূল্যবৃদ্ধির শর্টকাট রাস্তায় চলে। অথচ দুর্নীতি কমানো, সিস্টেমলস বন্ধ করাসহ নানাবিধ উপায়ে আয় বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। সেটি করা গেলে জনসাধারণকে আর বাড়তি পয়সা গুণতে হতো না। খোঁড়া যুক্তি দেখিয়ে দাম বাড়ালে শেষ পর্যন্ত এর সুফল পাওয়া যায় না। ভোক্তা অধিকারের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিলে মূল্যবৃদ্ধির এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের দিকে যেতে হয় না। এখনও সময় আছে। আমরা আশা করবো জনসাধারণের সার্বিক দুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রেখে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জনহিতকর সরকারের এটিই দায়িত্ব।

এইচআর/এবিএস

আরও পড়ুন