ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

সেপটিক ট্যাংকে মৃত্যুর মিছিল বাড়ছেই

প্রকাশিত: ০৭:১০ এএম, ১৩ আগস্ট ২০১৬

পিরোজপুরের পিটিআই সড়কে সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে বিষক্রিয়ায় দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।  এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। দেশে প্রায়শই সেপটিক ট্যাংকে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ ধরনের মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু এটা প্রতিরোধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। ফলে ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেই চলেছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সক্রিয় হবেন এমনটিই প্রত্যাশিত।
 
মূলত সচেতনতার অভাবেই ঘটছে এই ধরনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা। আর দরিদ্র শ্রেণির লোকজনই এর শিকার হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন সচেতনতা সৃষ্টি করা গেলে এ ধরনের মৃত্যু রোধ করা সম্ভব। বদ্ধ ট্যাংকে যে বিষাক্ত গ্যাস জমে থাকে- এ ধারণা না থাকা, ট্যাংকে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের উপস্থিতি নিশ্চিত না করে এবং প্রয়োজনীয় সুরক্ষাব্যবস্থা না নিয়ে নামার জন্যই এসব দুর্ঘটনা ঘটছে।

শ্রমিকের অজ্ঞতা এবং তাকে নিয়োগ দেওয়া মালিকের অজ্ঞতার সঙ্গে উদাসীনতা ট্যাংকে মৃত্যুর কারণ। বিষাক্ত গ্যাসের উপস্থিতি বিষয়ে শ্রমিকেরা অনেক সময় সচেতন থাকেন না। আবার নিয়োগকর্তাও শ্রমিকের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নেন না। সরকারি স্তরে সচেতনতামূলক প্রচার কর্মসূচি এবং নিয়োগকর্তা-মালিকের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে এই সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব।

সাধারণ কিছু নিয়ম মানলেই এই দুর্ঘটনা রোধ করা যেতে পারে।  এর মধ্যে রয়েছে সেপটিক ট্যাংক খোলার পরপরই ভেতরে না ঢোকা। নিজে ঢোকার আগে মোমবাতি বা লণ্ঠন জ্বালিয়ে ট্যাংকে ঢোকাতে হবে, যদি ওই আলো নিভে যায়, তবে মনে করতে হবে যে ট্যাংকে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাব রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ঢোকার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

আরেকটি পদ্ধতি হলো, পানি দিয়ে পুরো ট্যাংক ভরে ফেলা। আবার ফ্যানের বাতাস বা ব্লোয়ার দিয়ে ট্যাংকে থাকা বিষাক্ত গ্যাসকে সহনীয় করে তোলা।  কথা হচ্ছে যা-ই করা হোক না কেন, ট্যাংকে প্রবেশের আগে সেখানে অক্সিজেনের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়াটা জরুরি।

এখন এই নিশ্চিত টা কে নিশ্চিত করবে। সাধারণ শ্রমিক তো আর অক্সিজেন বুঝে না। এ জন্য নিয়োগকর্তাকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসকেও দায়িত্ব নিতে হবে। সেফটিক ট্যাংকের নিরাপত্তার বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা চালাতে হবে। প্রয়োজনে সেফটিক ট্যাংকে শ্রমিক নামার আগে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পরীক্ষা করে তার পরই অনুমোদন দিতে হবে। আর এতে বেঁচে যাবে অনেক প্রাণ। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা দায়িত্বশীল হবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা। আমরা এ ধরনের দুঃখজনক মৃত্যুর ঘটনা আর দেখতে চাই না।

এইচআর/এবিএস

আরও পড়ুন