ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করুন
দেশের বন্যাকবলিত এলাকায় শুকনো খাবারসহ ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উজান থেকে নামা ঢল ও বৃষ্টির পানিতে দেশের ১৬টি জেলার ৫৯টি উপজেলা এখন ভাসছে বানের পানিতে। এ অবস্থায় বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো মানবিক দায়িত্ব। শুধু সরকার নয় বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক সংগঠনগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে এই বিপর্যয়ে। বন্যার্ত মানুষরা যেন তাদের অসহায় না ভাবে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
দেশের উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। ডুবে গেছে বসতবাড়ি। দেখা দিয়েছে খাদ্যাভাব। সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, সুনামগঞ্জ, জামালপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, মানিকগঞ্জ ও রাজশাহীতে এখন বন্যার্ত মানুষেল দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। উত্তরাঞ্চলের নদ-নদী থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও এখনও অনেক স্থানে বিপদসীমার ওপর দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার যমুনা ব্রহ্মপুত্র, আত্রাই, পদ্মা ও তিতাস নদীর পানি বিভিন্ন স্থানে কমলেও এখনও ১৮টি স্থানে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বানভাসি মানুষ এখনও চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। পাশাপাশি গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মধ্যাঞ্চলে বিশেষ করে মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুরের নিম্নাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। বন্যার কারণে ইতোমধ্যে দেশে বিভিন্ন জেলায় কয়েকশ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অবকাঠামোর যেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব এলাকায় ক্লাস ও পরীক্ষায় স্থগিত রয়েছে। ক্ষতি হয়েছে আমন ও সবজির। পানিবন্দী অনেকেই ত্রাণ পাচ্ছেন না এমন অভিযোগও উঠেছে। যদিও ত্রাণ বিতরণকালে মঙ্গলবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকায় একজন মানুষও না খেয়ে মারা যাবে না। যাদের বাড়িঘর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখতে চায় মানুষ।
বন্যার দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ যেমন নিতে হবে তেমনি তাৎক্ষণিক আঘাত থেকে বাঁচার জন্য বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। ভাঙন রোধে নিতে হবে তাৎক্ষণিত ব্যবস্থা। দুর্গত মানুষ-পশুপাখি যেন আশ্রয় পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, স্যালাইনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ত্রাণের কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বন্যাজনিত পানিবাহী রোগব্যাধি থেকে মানুষজনকে রক্ষা করার জন্যও নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। প্রয়োজনে বন্যার্তদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে। বন্যার্ত একজন মানুষও যেন ত্রাণ কার্যক্রমের আওতার বাইরে না থাকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে যে কোনো মূল্যে।
এইচআর/আরআইপি