বিশ্ববাসীর সঙ্গে এক কাতারে বাংলাদেশ
প্রধানমন্ত্রী দুইদিনের মঙ্গোলিয়া সফর শেষে দেশে ফিরেছেন। জঙ্গিবাদের হিংস্র উত্থান আজ মানবতার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় গোটা বিশ্বকেই সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেদিক থেকে মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটরে অনুষ্ঠিত ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোর শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগদান ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
এশিয়া-ইউরোপ মিটিং বা আসেমের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এবারের একাদশতম শীর্ষ সম্মেলনটি নানা দিক থেকেই ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউরোপের ৩০টি ও এশিয়ার ২১টি দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানদের পাশাপাশি বিভিন্ন আঞ্চলিক সংস্থার প্রধানরাও যোগদান করেন এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনে অংশ নিয়ে আঞ্চলিক যোগাযোগব্যবস্থা সম্প্রসারণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন।এ সময় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে কিছু আঞ্চলিক সমস্যা সমাধান নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল সাম্প্রতিক গুলশান হামলার প্রেক্ষাপটে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক।
জাপান আমাদের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী দেশ। গুলশান ট্র্যাজেডিতে জাপানি নাগরিক নিহত হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে দুই দেশই রয়েছে উৎকণ্ঠায়। তবে আশার কথা হচ্ছে শিনজো আবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় অবস্থানের শুধু প্রশংসাই করেননি একই সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ দমনে জাপান সরকার বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তাছাড়া গুলশান ট্র্যাজেডির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপান সরকারের ভূমিকার কোনো পরিবর্তন হবে না, উন্নয়ন সহযোগিতা আগের মতোই অব্যাহত থাকবে-এমন কথাও তিনি বলেছেন অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জাপান সরকারের এই মনোভাবকে স্বাগত জানিয়েছেন। নিহতদের পরিবারের প্রতিও তিনি জানিয়েছেন গভীর সমবেদনা।
আসেম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার সময়ই ঘটেছে ফ্রান্সে নিস হামলার ঘটনা। সঙ্গত কারণেই এই হামলা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে সন্ত্রাস দমনে। বিশ্বব্যাপী উগ্রবাদি শক্তির আস্ফালনের মুখে এ ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের গুরুত্ব আরো বেড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশও সন্ত্রাসের ভয়াল থাবা থেকে মুক্ত নয়। তাই সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বিশ্ববাসীর সঙ্গে এক কাতারে থেকে বাংলাদেশকেও ভূমিকা রাখতে হবে। আসেম সম্মেলনেও যেটি দেখা গেল।
এইচআর/এমএস