ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

শান্তি ও সমৃদ্ধির বার্তা নিয়ে আসে ঈদ

প্রকাশিত: ০২:৩১ এএম, ০৬ জুলাই ২০১৬

ঈদ মানে খুশি আনন্দ তথা উৎসব। দেশে দেশে বসবাসকারী মুসলিমগণ চাঁদের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ঈদ করছেন। সে কারণে কেউ একদিন আগে, কেউ একদিন পরে। তবে সবাই আনন্দের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে যুক্ত হয়। ঈদ উদযাপনের একটি পর্ব হচ্ছে ধর্মীয়-যা ঈদগাহে নামাজ পড়া কেন্দ্রিক। এক সময় শুধু পুরুষরাই ঈদগাহে গিয়ে নামাজ পড়তো। এখন নারীরাও ঈদের নামাজে অংশ নিচ্ছেন। ভবিষ্যতে নারী-পুরুষের অংশ গ্রহণ হয়তো আরো বিস্তৃত হতে পারে। সেটিই হওয়া বাঞ্ছনীয়। ঈদগাহে ছোট বড়, ধনী-গরিব সকলেই একসঙ্গে নামাজ পড়ে, নামাজ শেষে কোলাকুলি করে। ধর্মীয় এই পর্বও এখন দিন দিন নানা বর্ণে সজ্জিত হচ্ছে। পোশাকে দিন দিন দ্রুত পরিবর্তন আসছে। খুবই বর্ণিলভাবে সজ্জিত হয় ঈদগাহ, নামাজ পড়তে আসা মানুষজনও।

ঈদের দ্বিতীয় দিকটি হচ্ছে পারিবারিকভাবে সকলে মিলিত হওয়া। পরিবারের সদস্যগণ মিলিত হতে শহর থেকে গ্রামে ছুটে আসে। বাড়ির অন্যরাও চেষ্টা করেন ঈদ উদযাপনে একত্রিত হতে। সে কারণে সবাই ‘নাড়ির টানে বাড়ি ফেবার’ কষ্ট করেন। দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা এই ঐহিত্য এখন আরো বেশি বিস্তৃত হচ্ছে। ছেলে বুড়ো সবাই ঈদ উপলক্ষে গ্রামে ছুটছে, গাড়ি, স্টিমার, রেল সর্বত্র উপচে পড়া ভিড়। সব কিছু ঠেলেঠুলে মানুষ যাচ্ছে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে। গ্রামেগঞ্জে  যারা আছেন তারাও অপেক্ষায় থাকেন। কখন আসবেন তাদের প্রিয়জনরা। তারা আসলে সকলেরই যেন খুশির সীমা থাকে না।

এই ঈদে নানা রঙের কাপড়-চোপড়, জুতা-স্যান্ডেল কেনাকাটা করে লোকজন। এ উপলক্ষে নানা রঙের জিনিসপত্র বাজারে বিক্রি হচ্ছে। মানুষ গোটা মাসই অনেক কিছু কিনছে। প্রতি বছরই নতুন নতুন পণ্য সামগ্রী এসে বাজার মাৎ করে দিচ্ছে। মিডিয়াগুলো নানা আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপনও প্রচার করছে এসব পণ্যের। মানুষ কিনছে, উপহার দিচ্ছে প্রিয়জনদের, শিশু আর বয়স্কদের, গরিবদের দেওয়া হয় কাপড় অর্থ এবং খাবার দাবার। এখন বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ, বদলে যাচ্ছে ঈদ উৎসবও। ভীষণভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছে ঈদের বাজার, ঈদের অর্থনীতি। এ বছর কত টাকা ঈদ উপলক্ষে লেনদেন হচ্ছে- তা হয়তো শিগগিরই জানা যাবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে এ বছর এক লাখ হাজার কোটি টাকায় তা ছাড়িয়ে যাবে। এর ফলে মানুষের হাতে টাকা আসছে, জীবনমান উন্নত হচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে পরিবর্তনের এমন ধারা অব্যাহত ছিল। ফলে আশা করা যাচ্ছে এ বছরও ঈদ উৎসব উৎযাপিত হচ্ছে নতুন নতুন সমৃদ্ধিতে।

ঈদের উৎসব অনেকটাই সামাজিকভাবে সকলকে ধারণ করার শিক্ষা দিচ্ছে। তাতে ধনী-গরিব, এমন কি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদেরও সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। আমাদের নিকট প্রতিবেশি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরাও এ দিন আমাদের উৎসবে যোগদান করে থাকে, খাওয়া-দাওয়ায় অংশ নিয়ে থাকে। এর মাধ্যমে সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় হওয়ার সুযোগ পায়।

এ বছর ঈদ আমাদের জাতীয় জীবনে বেশ কিছু সমৃদ্ধিও পাশাপাশি দেশি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ কিছু উদ্বেগ উৎকণ্ঠার বিষয়ও ভাবিয়ে তুলেছে। গুলশানে বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করা, জিম্মি দশার রক্তাক্ত অবসান,  ঈদের আগে মানুষের মধ্যে নতুন করে ভাবনার সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান তাদের ভাণ্ডব, হত্যাকাণ্ড আমাদেরকে আতঙ্কগ্রস্থ করে তুলছে। যদিও এর সঙ্গে পবিত্র ধর্ম ইসলাম এবং বৃহত্তর মুসলমানদের সমর্থন নেই, কিন্তু একটি উগ্র-হঠকারি গোষ্ঠী দেশে দেশে উগ্রজঙ্গিবাদের নামে যে সব তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে তাতে মুসলমানদের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, বিশ্বশান্তি বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা বেড়েই চলছে। এবারের ঈদে আমাদের সকলের কামনা একটাই তা হচ্ছে এসব জঙ্গিদের বোধোদয় যেন ঘটে, এমন মানবাবিরোধী পথ থেকে তারা যেন সরে আসে।

পৃথিবী মানুষেরই জন্যে, হানাহানির জন্যে নয়, ঈদ মানুষের সুখ-শান্তির শিক্ষাই দিচ্ছে। সেই শিক্ষা প্রতিটি মানুষ যেন যথাযথভাবে বুঝতে এবং, গ্রহণ করতে পারে সেটিই এ বছরের ঈদে ঐকান্তিক কামনা হোক।

patoary

এইচআর/পিআর

আরও পড়ুন