ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

অধিকার ও অর্জন

প্রকাশিত: ০৭:০২ পিএম, ২২ জুন ২০১৬

১৯৪৯ সালে ২৩ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেন আওয়ামী লীগের আত্মপ্রকাশের একটা ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশী যুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক পরাজয়ে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। ওই দিনের আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকে স্বার্থক করে তোলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর ঐতিহাসিক আহ্বানে ১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বই মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতার অর্জন করে।

১৭৫৭ সালে ২৩ জুন পলাশীর যে আম্রকাননে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য আস্তমিত হয়েছিল, ১৯৭১ সালে একই আম্রকাননেই সেই স্বধীনতার সুর্যের উদয় হয় যে মহানয়কের নেতৃত্বে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্বের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস রেখে যে বাঙালিরা নিখিল বঙ্গ মুসলিম লীগের আশ্রয় খুঁজেছে, সেই তারাই আওয়ামী লীগকেই বেঁছে নিয়েছে বাঁচার দাবিতে। আর এই বাঁচার সংগ্রামে আওয়ামী লীগ তৈরি করেছে এক বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ইতিহাস, এই ইতিহাসের পরদে পরদে মিশে আছেন আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নাম ও অবদান। ভাষা আন্দোলন, ৫৪ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ছাত্র সমাজের ৬২ আন্দোলনসহ প্রতিটি সংগ্রামে আওয়ামী লীগ চালকের আসনে। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করলেন বাঙালি মুক্তি সনদ ৬ দফা যার ধারাবাহিকতায় আন্দোলন পরিশেষে আমাদের স্বাধীনতা, যার নেতৃত্বে ছিল আওয়ামী লীগ।

স্বাধীন দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক তখনি ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বিশ্বাস ঘাতকরা প্রায় স্বপরিবারে হত্যা করে সর্ব কালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে। জেলখানায় হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে।

এরপর থেকে স্বাধীনতার সংগ্রামে ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া এই দলটিকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়, আর এই লক্ষ্যেই সামরিক জান্তা জিয়া স্বাধীনতা বিরোধী আর বঙ্গবন্ধুর খুনীদের নিয়ে দেশকে বিকৃত ইতিহাসের দিকে নিয়ে যাওয়ার হীন চেষ্টা করে, আর প্রতিবাদী জনগণকে দাবিয়ে রাখার জন্য সান্ধ্যা আইন দিয়ে দেশ পরিচালনা করেন।

এমন একটি সময় আওয়ামী লীগের হাল ধরেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। ১৯৮১ সালে ১৭ মে দেশে ফিরেই যিনি বলেছিল ক্ষমতা নয় অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাব। এই অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অসংখ্যবার তাঁকে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু দাবিয়ে রাখতে পারেনি, আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের নিয়ে তিনি এগিয়ে গিয়েছেন। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, বঙ্গবন্ধু খুনীদের রায় কার্যকর হয়েছে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে রায়ও কার্যকর হয়েছে, দেশ হয়েছে কলঙ্কমুক্ত।

তাঁর নেতৃত্বে বাংলার জনগণ পেয়েছে ভোট ও ভাতের অধিকার। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত হয়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে, জীবন যাত্রার মান বেড়েছে, বেড়েছে দেশের রিজার্ভ। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এসেছে ব্যাপক সম্মান ও সফলতা। দেশ এখন নিম্ন মধ্যম আয়ে প্রদার্পণ করেছে।

যোগাযোগ ব্যবস্থার আমুল উন্নতি সাধিত হয়েছে, নিজেস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের পথে। আন্তর্জাতিক বিশ্বের সাথে যোগাযোগ, তথ্য প্রযুক্তিতে পৃথিবী এখন হাতের মুঠোয়, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, এ যেন আলোকিত বাংলাদেশ। আর এই সংগামে আলোর দিশারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা।

কাজেই আওয়ামী লীগ মানে অধিকার, আওয়ামী লীগ মানে সম্ভাবনা, আওয়ামী লীগ মানে এগিয়ে যাওয়া, আওয়ামী লীগ পারে, আওয়ামী লীগই পারবে।

লেখক : সাংগঠনিক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

এসকেডি/বিএ