ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

পুঁজিবাজারবান্ধব বাজেট চাই

প্রকাশিত: ০১:৫০ এএম, ০২ জুন ২০১৬

আজ ২ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করা হবে। আর এই বাজেটকে কেন্দ্র করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। যার কারণে অনেকেই বাজার পর্যবেক্ষণ করছে কি আসতে যাচ্ছে এবারের বাজেটে । প্রতিবছর বাজেট বাস্তবায়নের জন্য সরকার নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও বাজেট বাস্তবায়ন এখন এই সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ । তবে এবারের বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কি আসতে যাচ্ছে তা নিয়ে উৎসাহের কমতি নেই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের।
 
আসন্ন বাজেটকে কেন্দ্র করে প্রাক বাজেট আলোচনায় দুই স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। বাজারে ইতিবাচক ধারা বজায় রাখতে উৎসে কর কমানোসহ আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে ছয় দফা অন্তর্ভুক্তির দাবি  জানিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। এবারের বাজেটকে সামনে রেখে ডিএসই’র পক্ষ থেকে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনায়, ডিএসই-কে ৫ বছরের জন্য আয়কর থেকে শতভাগ অব্যাহতি, ট্রেকহোল্ডারদের উৎসকর ০.০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.০১৫ শতাংশ, কর মুক্ত লভ্যাংশ আয়সীমা ২৫ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকায় উন্নীতকরণের কথা বলা হয়েছে। বাজারে ইতিবাচক ধারা বজায় রাখতে ট্রেকহোল্ডারদের ডি-মিউচ্যুয়ালাইজড শেয়ার হস্তান্তরে স্ট্যাম্প ডিউটি প্রত্যাহার, ট্রেকহোল্ডারদের মাধ্যমে দেয়া মার্জিন ঋণ মওকুফ গ্রাহকের আয় হিসাবে গণ্য না করার দাবি জানিয়েছে ডিএসই। আর এগুলো বাস্তবায়ন হলে বাজারের পরিবর্তন আসবে এমনটিই আশা করা হচ্ছে।

এদিকে ডিএসইর প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে, ট্রেকহোল্ডারদের উৎসকর ০.০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.০১৫ শতাংশ, কর মুক্ত লভ্যাংশ আয় সীমা ২৫ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকায় উন্নীতকরণ, কোম্পানি সমূহ আয়ের উপর প্রদেয় কর কর্তন করে লভ্যাংশ দেয় বিধায় লভ্যাংশে উৎসে কর কর্তনের বিধান বাতিল, ১ জুলাই থেকে শেয়ার বিক্রয়ে মূলধনী লাভের উপর (১ বছরের জন্য ৫ শতাংশ হারে ও এক বছরের অধিক সময়ের জন্য শূন্য শতাংশ) কর নির্ধারণ করা যেতে পারে। ফটওয়্যার মেইনটেনেল ফি এর উপর উৎস কর কর্তনের হার ১০ শতাংশ ও মূল্য সংযোজন কর কর্তনের হার ২ শতাংশ নির্ধারণ করা যেতে পারে। লোকসান সমন্বয়ে আরো ৮ বছর সময় দেওয়া যেতে পারে। এছাড়াও মার্চেন্ট ব্যাংকের বিদ্যমান কর হার ৩৭.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করা হয়। এসকল প্রস্তাবনা বাস্তববায়ন করা গেলে বাজারের গতি আরো বৃদ্ধি পাবে।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে বর্তমান বাজারের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় ক্রমহ্রাসমান হারে আয়কর অব্যাহতির পরিবর্তে শতভাগ করমুক্ত রাখার কথা বলা হয়েছে। অন্যান্য প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে, ট্রেকহোল্ডারদের উৎসকর ০.০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.০১৫ শতাংশ, কর মুক্ত লভ্যাংশ আয় সীমা ২৫ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকায় উন্নীতকরণ, কোম্পানি সমূহ আয়ের উপর প্রদেয় কর কর্তন করে লভ্যাংশ দেয় বিধায় লভ্যাংশে উৎসে কর কর্তনের বিধান বাতিল, ১ জুলাই থেকে শেয়ার বিক্রয়ে মূলধনী লাভের উপর (১ বছরের জন্য ৫ শতাংশ হারে ও এক বছরের অধিক সময়ের জন্য শূন্য শতাংশ) কর নির্ধারণ করা যেতে পারে। এদিকে, সিএসই`র পক্ষ থেকে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে প্রণোদনা হিসাবে ২৫ শতাংশ কর হার কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়। তাদের মতে, এতে করে মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলো বাজারে তালিকাভুক্ত  হতে উৎসাহিত হবে।

বাজারকে স্থিতিশীল করতে আসছে বাজেটে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে যেসকল প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে তার বাস্তবায়ন হলে পুঁজিবাজারের জন্য সহায়ক হবে। পুঁজিবাজারবান্ধব বাজেট বাস্তবায়ন করার জন্য পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান যেমন ডিএসই, সিএসই, মার্চেন্ট ব্যাংক এসোসিয়েশন, ব্রোকারেজ এসোসিয়েশন এবং অন্যান্য যারা আছে তাদের সুপারিশমালা যথাযোগ্য ভাবে বিবেচনা করা দরকার। এ বিবেচনার পরিপ্রেক্ষিতে যেই সুপারিশমালাগুলোকে বাস্তবিকভাবে পুঁজিবাজারের জন্য সহায়ক মনে হবে সেগুলোকে সরকারের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ। এতে পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এসকল প্রস্তাবনা বাজারের স্বার্থে এবারের বাজেটে বিবেচনা করা হলে পুঁজিবাজারেও তার প্রভাব পড়বে। তবে বাজেট পাসের পর বাজেট বাস্তবায়ন এখন আমাদের অর্থনীতির বড় অন্তরায় । সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের মধ্যে যারা একাজগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট তাদের উচিৎ বাজেট বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত মনিটরিং এর ব্যবস্থা করা। তাই পুঁজিবাজারবান্ধব বাজেট পাসের সাথে সাথে বাজেটে আসা বিষয়গুলোর বাস্তবায়নও চায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এখন শুধু অপেক্ষা ,পুঁজিবাজারবান্ধব বাজেট এবং তার বাস্তবায়ন।
লেখক :  বিজনেস এডিটর, এটিএন বাংলা। একাধারে সাংবাদিক, লেখক, সংবাদপাঠিকা এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালক। এছাড়াও অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার বিষয়ে রয়েছে তার সংবাদ ও টেলিভিশন টক শো।  সদস্য, এফবিসিসিআই।  কো-চেয়ারম্যান এসএমই, পাট, ইয়াং এন্টারপ্রাইনার ও পুঁজিবাজার বিষয়ক স্টান্ডিং কমিটি । বর্তমানে এশিয়ান প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশনের সার্টিফাইড প্রশিক্ষক এবং উদ্যোক্তা।

এইচআর/এবিএস

আরও পড়ুন