ক্লিন ঢাকার জন্য নতুন বিন
পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ে তোলার দাবি বহুদিনের। আশার কথা হচ্ছে ঢাকা সিটির দুই মেয়র এ ব্যাপারে তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রাখতে শুরু করেছেন। পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজধানীর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নগরীর বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট ৫ হাজার নতুন ডাস্টবিন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। খুব শিগগিরই পুরো এলাকায় এ ডাস্টবিনগুলো স্থাপনের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের। কালো রঙের ডাস্টবিনগুলোতে দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন-এর একটি আহ্বানও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। আহ্বানে বলা হয়েছে- “বর্জ্যগুলো বিনে ফেললেই পরিচ্ছন্ন থাকবে আপনার শহর, বিনীত অনুরোধ, সাঈদ খোকন।”
অন্যদিকে নগরী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে প্রায় তিন হাজার নতুন ধরনের সবুজ ডাস্টবিন বসাবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে হাজার খানেক ডাস্টবিন বসানো হয়েছে। সবুজ রঙের ধাতব ডাস্টবিনগুলো একটি লোহার ফ্রেমে আটকানো। এর গায়ে সাঁটানো নোটিশে শুধু শুকনো বর্জ্য ফেলার বিষয়ে নগরবাসীকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ ডাস্টবিনে নগরবাসী শুকনো বর্জ্য ফেলবেন। নির্দিষ্ট সময়ে সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা এসব ডাস্টবিন থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করবেন।
রাজধানীতে বর্জ্য ফেলার জন্য ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অধীনে প্রায় ছয়শ’ ডাস্টবিন রয়েছে। আর কনটেইনার রয়েছে পাঁচশ’। এছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগে বসানো ডাস্টবিনের সংখ্যা দু’শ’। এসব ডাস্টবিন বসানো হয়েছে রাস্তার বড় অংশ দখল করে। এছাড়া রাস্তার ওপর যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়েছে কনটেইনার। তবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এবার নতুন নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ডিএনসিসি। এর ধারাবাহিকতায় নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে ৭২টি বর্জ্য ট্রান্সফার স্টেশন বসানো হবে।
পরিচ্ছন্ন নগরী ঘরে তোলার জন্য সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি নাগরিকদের দায়িত্বও কম নয়। নাগরিক সচেতনতা ও দায়িত্ববোধ ছাড়া নগরীকে সম্পূর্ণরূপে পরিচ্ছন্ন করা অসম্ভব। নিজেদের শহর নিজেরা পরিষ্কার না রাখলে শুধু সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মীরা তা পারবে না। আমরা ঘরদোর পরিষ্কার রাখছি। ভালো জামা-কাপড় পরে রাস্তায় নামছি। লাইন ধরে বাসে উঠছি। বিদেশে গিয়ে সে দেশের নিয়ম মেনে রাস্তায় থুতুও ফেলছি না। অথচ সেই মানুষই আবার নিজ দেশে যত্রতত্র ময়লা ফেলছি। এই অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। এ জন্য যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলার প্রবণতা রোধে নাগরিকদের সচেতন করে তোলার পাশাপাশি প্রয়োজনে জরিমানার বিধান চালু করা যেতে পারে। এছাড়া শুধু ডাস্টবিন বসালেই হবে না।এ ছোট ডাস্টবিনগুলো চুরি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। চুরি রোধ করতেও নাগরিক সচেতনতার বিকল্প নেই। আমরা যে কোনো মূল্যে ঢাকাকে পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে দেখতে চাই।
এইচআর/এমএস