ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

মাইস ইন্ডাস্ট্রি উন্নয়নে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ভূমিকা

আবু মোখলেছ আলমগীর হোসেন | প্রকাশিত: ১০:০৫ এএম, ২১ অক্টোবর ২০২৪

স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রসার এবং দেশীয় পর্যটন শিল্পের বিকাশে MICE Industry ( মাইস শিল্প) একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফরম হিসেবে বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে সমাদৃত। ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠান এ শিল্পের কল্যাণে স্ব-স্ব শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামালের জোগান উৎস ( Supply Source) এবং সম্ভাব্য বিদেশি ক্রেতা (Potential Foreign Buyer) অন্বেষণ খুব সহজেই করতে পারেন। তবে এ খাতের বিষয়ে অংশীজনদের ধারণা কিছুটা অস্পষ্ট বিধায় তা স্পষ্টীকরণ করা প্রয়োজন। দেশে পর্যটন শিল্পের সাথে মাইসকে সম্পৃক্ত করা হয়, তবে এর পরিধি/ব্যাপ্তি আরও বিস্তৃত। এ খাতের বিষয়ে পরিপূর্ণভাবে জানার জন্য আমাদের MICE এর প্রতিটি উপাদান সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন, যা পরে আমাদের আরও গভীরে প্রবেশের বিষয়ে আগ্রহ জোগাবে।

MICE চারটি শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ-মিটিং(Meeting),ইনসেনটিভ(Incentive),কনফারেন্স (Conference) এবং প্রদর্শনী/ইভেন্ট (Exhibition)। প্রতিটি উপাদানের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি নিম্নরূপ:
১. মিটিং (সভা) : আলোচনা, তথ্য বিনিময় বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য একটি সংগঠনের সব অংশীজনের ছোট আকারের সমাবেশকে বোঝায়। মিটিংগুলো অভ্যন্তরীণ টিম মিটিং থেকে শুরু করে বড় করপোরেট সম্মেলন পর্যন্ত হতে পারে।

২. প্রণোদনা : প্রণোদনামূলক ভ্রমণ প্রোগ্রামগুলো
কর্মচারী/ক্লায়েন্ট/অংশীজনদের অনুপ্রাণিত এবং তাদের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কৃত করার জন্য আয়োজন করা হয়। কোম্পানিগুলো প্রায়ই উচ্চ কর্মক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি বা দলকে তাদের অবদানের স্বীকৃতি এবং উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে এ ধরনের প্রণোদনামূলক কর্মসূচির আয়োজন করে।

৩. সম্মেলন: সম্মেলন হচ্ছে বৃহত্তর পরিসরের নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট, যা কোনো একটি নির্দিষ্ট শিল্প অথবা ক্ষেত্রের পেশাদার বা বিশেষজ্ঞদের বিশেষায়িত জ্ঞান অন্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ে তাদের মতামত এবং পর্যবেক্ষণ বিনিময়ের জন্য আয়োজন করা হয় ।

৪. প্রদর্শনী/ইভেন্ট: ট্রেড শো, এক্সপো বা মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান (Exhibitor) তাদের পণ্য এবং সেবা সম্ভাব্য ক্রেতাদের ( Potential Buyer) কাছে উপস্থাপন করে। প্রদর্শনীতে পণ্য ও সেবা প্রদর্শনের পাশাপাশি সাইড ইভেন্ট হিসেবে পণ্যভিত্তিক সেমিনার এবং বিটুবি সভা ও ম্যাচ ম্যাকিং সভার আয়োজন করা হয়। মাইসের মধ্যে সোর্সিং প্রকৃতির ( যেখানে শুধু পণ্য বা সেবা প্রদর্শন করা হয় যে কোনো ধরনের খুচরা বিক্রি নিষিদ্ধ) International Trade Fair অন্যতম অবদানকারী ইভেন্ট।

ব্যবসায়িক মিথষ্ক্রিয়া, বিশেষায়িত জ্ঞান বিনিময়ে প্রসার, ভ্রমণ, বাসস্থান এবং ইভেন্ট পরিষেবাগুলোর সাথে সম্পর্কিত অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ বৃদ্ধিতে MICE শিল্প অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। মাইস শিল্পের সাথে ইভেন্ট ব্যবস্থাপক, ভেন্যু রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান, আতিথেয়তা পরিষেবা, ট্রাভেল এজেন্সি এবং এ খাতের অন্য নেতৃত্বস্থানীয় অংশীজন (ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান) নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। MICE শিল্পের বিকাশে মুখ্য ভূমিকা পালনকারী ক্ষেত্র বিষয়ে জানা প্রয়োজন, যা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-

১. ইভেন্ট পরিকল্পনাকারী: পেশাদার প্রতিষ্ঠান আয়োজক প্রতিষ্ঠান স্থানীয়ভাবে এরা Event Management Firm নামে পরিচিত। ইভেন্টের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে এর সার্বিক সমন্বয়সহ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করে ।
২. ভেন্যু: মিটিং, সম্মেলন এবং প্রদর্শনী আয়োজন করার জন্য বিভিন্ন সুবিধা সম্বলিত জায়গা, যা ভেন্যু নামে পরিচিত । সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থা/ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় ইভেন্ট আয়োজনের জন্য এ ধরনের ভেন্যু রয়েছে। ভেন্যু হিসেবে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ব্যবস্থাপনায় দেশের সর্ববৃহৎ প্রদর্শনী কেন্দ্র বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের নাম উল্লেখ করা যেতে পারে ।
৩. আতিথেয়তা পরিষেবা: হোটেল, ক্যাটারিং পরিষেবা, পরিবহন প্রদানকারী এবং অন্য ব্যবসাগুলো MICE ইভেন্টগুলোর জন্য সহায়তা পরিষেবা প্রদান করে৷
৪. ট্রাভেল এজেন্সি: ইভেন্টে অংশগ্রহণকারীদের জন্য ভ্রমণের ব্যবস্থা সহজতর করার জন্য এরা প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে।

MICE Industry বিকাশে এর বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে ট্রেড ইভেন্ট / আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে । প্যারিসভিত্তিক গ্লোবাল এসোসিয়েশন অব দ্য এক্সিবিশন ইন্ডাস্ট্রি -UFI এর তথ্যানুযায়ী বিশ্বে ট্রেড ফেয়ারের বিশ্ববাজার মূল্য প্রায় ৪৪.০২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্য মতে, বিশ্বে প্রতি বছর ৩১,০০০ আন্তর্জাতিক মেলা অনুষ্ঠিত হয়; যেখানে ৪.৪ মিলিয়ন এক্সিবিটর এবং ২৬০ মিলিয়ন সম্ভাব্য ক্রেতা অংশগ্রহণ করে । তথ্য থেকে স্পট প্রতীয়মার হয় যে মাইস শিল্পে ট্রেড ইভেন্ট / এক্সিবিশনের ভূমিকা অপরিসীম । আন্তর্জাতিক মেলা আয়োজনে সরকারি পর্যায়ে ট্রেড প্রমোশন সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং বেসরকারি পর্যায়ে বিজনেস প্রমোটর - CEMS Global , Savor International , ASK , E-3 Solution , I-Station Limited ,স্থানীয় বণিক সমিতি ট্রেড এসোসিয়েশন এবং বিদেশি প্রতিষ্ঠান হিসেবে GPE EXPO PVT. LTD এবং SD Promo Media Limited উল্লেখযোগ্য। MICE শিল্পে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ভূমিকা পরিষ্কার বোঝার জন্য নিম্নরূপ ক্ষেত্র থেকে মূল্যায়ন করা যেতে পারে-

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি বাণিজ্য সহায়ক সংস্থা, যা নীতি সহযোগিতা প্রদান করে পণ্য এবং বাজার বহুমুখীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানি সম্প্রসারণ কাজে সহায়তা প্রদান করছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সরকারের কৌশলগত পরিকল্পনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণের জন্য বার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। সরকারের পরিকল্পনা এবং উদ্দেশ্য প্রক্ষেপণ করে বাস্তবায়নকারী সংস্থা এবং ইভেন্ট পরিকল্পনাকারী হিসেবে ইপিবি বার্ষিক মেলা ক্যালেন্ডার প্রস্তুত করে।

টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণের জন্য মাইস শিল্পকে প্রাধান্য দেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা সময়ের দাবি।

ইপিবির বাজার উন্নয়ন কর্মসূচির অধীন প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী ৩০-৩৫টি স্বনামধন্য এবং স্বীকৃত/আইকনিক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় অংশগ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার পাশাপাশি নতুন সম্ভাব্য ক্রেতা অন্বেষণ এবং সম্ভাব্য রপ্তানি আদেশ প্রাপ্তির জন্য এ সব মেলায় দেশীয় স্বনামধন্য এবং নবীন ও উদীয়মান সম্ভাবনাময় রপ্তানিকারকদের নিয়ে অংশগ্রহণ করা হয়। মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সম্ভাব্য ক্রেতার সাথে ম্যাচ মেকিং/বি-টু-বি সভায় মিলিত হোন এবং মেলা পরবর্তী এ সব কন্টাক্ট পয়েন্টের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন অনুসন্ধানের সমাধান করে রপ্তানি আদেশ প্রাপ্ত হোন। বিদেশে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় অংশগ্রহণের শৃঙ্খল প্রতিক্রিয়ায় (domino effect) প্রতি বছর প্রচুর বিদেশি ক্রেতা বাংলাদেশে আসেন। উপরন্তু, সম্ভাব্য ক্রেতারা ব্যক্তিগতভাবে দেশে এসে পণ্যের উৎসের জন্য রপ্তানিকারকদের সাথে সভা করে, যা বাংলাদেশের MICE শিল্পের বিভিন্ন উপাদানকে দারুণভাবে প্রভাবিত (হোটেল, ক্যাটারিং পরিষেবা, পরিবহন প্রদানকারী এবং ট্রাভেল এজেন্সি) করে।

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ার (ডিআইটিএফ) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর আইকোনিক বার্ষিক ইভেন্ট, যা বাণিজ্য এবং বিনোদনের একটি আদর্শ মিশ্রণ। এ মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত পণ্য ও সেবাসমূহের মূল্য, গুণগতমান, প্যাকেজিং এবং অন্য বিষয়াদি বিদেশি অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে তুলনা করার সুযোগ পেয়ে থাকে। ডিআইটিএফ এ অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন খাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ধারণা (Ideas) , অগ্রগতি ( Advancement) এবং সর্বোত্তম অনুশীলনের (best practices) আদান-প্রদানের সুযোগ প্রদান করে।

মেলার এ সুযোগ পেশাদারদের সংযোগ (Connect),সম্পর্ক তৈরি (Relationship Building) এবং ব্যবসার সুযোগগুলো (Business Opportunities) অন্বেষণ করার জন্য একটি মূল্যবান প্ল্যাটফর্ম প্রদানপূর্বক স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যবসা সম্প্রসারণে অনবদ্য ভূমিকা পালন করে। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ( ডিআইটিএফ) আয়োজক এবং ইভেন্ট প্ল্যানার হিসেবে ১৯৯৫ সাল থেকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভূমিকা বাংলাদেশের মিটিং, ইনসেনটিভ, কনফারেন্স এবং এক্সিবিশন (MICE) শিল্পে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখে চলেছে।

বেসরকারি পর্যায়ে বিজনেস প্রমোটর-CEMS Global, Savor International, ASK, E-3 Solution , I-Station Limited ,স্থানীয় বণিক সমিতি ও ট্রেড এসোসিয়েশন এবং বিদেশি প্রতিষ্ঠান GPE EXPO PVT. LTD এবং SD Promo Media Limited কর্তৃক গার্মেন্টস মেশনারিজ এক্সেসরিজ, মটর শো, মেরিন, নির্মাণ সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্যভিত্তিক মেলা আয়োজন করা হয়। এ সব মেলায় উল্লেখযোগ্য বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে, যা স্থানীয় মাইস শিল্পের বিকাশে অনবদ্য ভূমিকা পালন করছে।

স্থানীয় ভেন্যু ফ্যাসিলিটেশন ইন্ডাস্ট্রিতে অগ্রদূত হিসেবে ইপিবি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বাণিজ্যমেলা আয়োজনের জন্য উপযুক্ত স্থানের অনুপস্থিতি যথাযথভাবে চিহ্নিত করে এবং আন্তর্জাতিক সুবিধা সম্বলিত এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্তর্গত রূপগঞ্জের পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্র (বিসিএফইসি) নির্মাণের আগে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা আয়োজনের জন্য একটি আদর্শ ও মানসম্পন্ন ভেন্যুর অভাব ছিল। দেশের বিদ্যমান ভেন্যুগুলো মূলত সম্মেলন ও সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য উপযুক্ত। বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র চীন সরকারের আর্থিক অনুদানে দেশের মধ্যে প্রদর্শনী শিল্পের সুবিধার্থে এবং দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে ঢাকাকে একটি ব্যবসায়িক কেন্দ্র (Business Hub) হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ব্রত নিয়ে বিসিএফইসি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা এবং বিভিন্ন সম্মেলন সফলভাবে আয়োজনের জন্য সহায়ক অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধাসহ ২৬ একর জায়গায় ১৫৪,৬৩৬ বর্গফুট আয়তন বিশিষ্ট দুটি হল নিয়ে বিবিসিএফইসি আজ দেশের বৃহত্তম মেলা আয়োজক ভেন্যু। বর্তমানে কেন্দ্রটি দেশের প্রিমিয়ার ট্রেড শো, স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন, বহুজাতিক কোম্পানির বার্ষিক অনুষ্ঠান এবং দেশীয় গ্রুপ অব কোম্পানিজদের নিকট বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। কনফারেন্স, B2B/ম্যাচমেকিং মিটিং এবং করপোরেট আউটডোর প্রোগ্রাম আয়োজন করার জন্য বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার একটি আকর্ষণীয় ও ব্যতিক্রমধর্মী ভেন্যু। BCFEC দেশের মিটিং, ইনসেনটিভ, সম্মেলন এবং প্রদর্শনী (MICE) শিল্পে একটি অনন্য সংযোজন। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার BCFEC-কে সভা, সম্মেলন, ট্রেড শো এবং প্রদর্শনী আয়োজনের জন্য একটি আদর্শ ভেন্যু হিসেবে ইভেন্ট সংগঠকরা এর একটি পৃথক পরিচিতি তৈরি করেছে।

BCFEC ব্যতীত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আন্তর্জাতিক আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ভেন্যু আমাদের দেশে রয়েছে। এর মধ্যে আগারগাঁওয়ের BICC, International Convention City Bashundhara (ICCB) এবং হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও, ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল ঢাকাসহ ফাইভ এবং ফোর স্টার শ্রেণির অনেক হোটেল আছে যেখানে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক ইভেন্ট এবং ট্রেড শো আয়োজিত হচ্ছে ।

ভারতকেন্দ্রিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান Allied Market Research এর তথ্যানুযায়ী Global Business Travel Market ভ্যালু ৭০০ বিলিয়ন মার্কিন ( সাল: ২০২০) ডলার, যা ২০২৮ সালের মধ্যে ১৮৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১,৩১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হবে। দেশে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন স্থায়ী মেলা কমপ্লেক্স বিদ্যমান থাকায় স্থানীয়ভাবে বিশ্বের স্বনামধন্য মেলা আয়োজক প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা আয়োজন করার উদ্যোগের পাশাপাশি ট্র্যাডিশনাল বাজারবহির্ভূতবাজার যেমন- লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকান এবং মধ্য এশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যে মেলায় অংশগ্রহণ বৃদ্ধির প্রচেষ্টা নেওয়া যেতে পারে। ফলে দেশে বিদেশি ব্যবসায়ীদের অন্তঃপ্রবাহ বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে মর্মে আশা করা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাস্টমস মার্কেট ইনসাইটের তথ্যানুযায়ী ২০২২ সালে মাইসের বিশ্ব বাজার আকৃতি (মার্কেট সাইজ) ৬৪৫.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০৩২ সালে ১৬২০.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হবে। বিশ্ব মার্কেট সাইজ থেকে সহজেই অনুমান করা যায় মাইস একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় খাত এবং বিনিয়োগ পরিবেশ উন্ননের মাধ্যমে (১০০টি অর্থনৈতিক জোনের দ্রুত বাস্তবায়ন এবং Ease of Doing Business ইনডেক্সে ডাবল ডিজিটে আনয়ন) টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণের জন্য মাইস শিল্পকে প্রাধান্য দেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা সময়ের দাবি।

লেখক: পরিচালক, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো।

এইচআর/ফারুক/জেআইএম