ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এর জন্মদিনে দেশবাসীর প্রত্যাশা

সম্পাদকীয় ডেস্ক | প্রকাশিত: ০১:৫২ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম

আজ ১০ ডিসেম্বর । গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের জন্মদিন। ১৯৪৯ সালের এই দিনে তিনি পাবনা শহরের উপকণ্ঠে শিবরামপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শরফুদ্দিন আনছারী ও মাতা খায়রুন্নেসার স্নেহাচার্যে ছোট্ট শহর পাবনায় বেড়ে উঠেন। তাঁর স্মৃতিতে পাবনা শহর, জনপদের রাজনীতি এক গভীর জায়গা দখল করে আছে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সরাসরি দলীয় হলেও তাঁর রয়েছে সিভিল সার্ভিসের এক বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার। ফলে একদিকে তিনি যেমন রাজনীতিবিদ অন্যদিকে ঝানু আমলা।

রাজনীতির দিক থেকে তিনি একেবারে তৃণমূল থেকে উঠে আসা একজন রাজনৈতিক নেতা ও কর্মী । শুরু করেছিলেন পাবনা জেলার ছাত্রলীগের নেতৃত্বের মাধ্যমে। তাও আবার সরাসরি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্নেহধন্য হয়ে। ঘটনার সময়কাল ১৯৯৬ সালের এপ্রিল মাস। ছয় দফা কর্মসূচিকে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেবার জন্য সারাদেশে চলছে ব্যাপক গণসংযোগ। এই গণসংযোগের কারণে ১৯৬৬ সালের এপ্রিল মাসে উত্তরবঙ্গে ছয়দফার জনসমর্থনে বঙ্গবন্ধু এক সফরে বের হন। উত্তরবঙ্গ সফরের শুরুর দিনই ১৯৬৬ সালের ৮ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাবনায় আসেন। এইদিনেই আমাদের নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সাক্ষাত পান মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। তিনি তখন সবেমাত্র এস এসসি পাস করেছেন।

অন্যদের মতো ছয়দফা নিয়ে অনেক উৎসুক। বিকেলে পাবনা টাউন হল ময়দানে জনসভায় যোগ দেবার আগে প্রতিবেশী পাবনা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রব বগা মিয়ার বাসায় হাজির হলেন। বঙ্গবন্ধুকে দেখার সুযোগ পেলেন। এ সময় বঙ্গবন্ধু উপস্থিত নেতাদেরকে বললেন তাঁকেও যেন সভাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর স্নেহমাখানো সুর মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে খানিকটা বিস্মিত করে ফেলে!

স্নেহমাখা আদেশ শুধু এই দিনই নয়, সারাজীবনেও আর উপেক্ষা করতে পারেননি। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ওই দিনের ঘটনাকে স্মরণ করে বলেন, “রাজনীতির কতটুকুইবা বুঝি? কিন্তু ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি দীর্ঘদেহী এই মানুষটির স্নেহামাখা; মাঠে আয়; স্বরে কী যেন লুকিয়ে ছিল। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিলাম- কেউ না নিলেও একা একা জনসভায় যাব। কিন্তু সেটি আর করতে হলো না। সবার সঙ্গেই টাউন হলে গেলাম।

বঙ্গবন্ধু ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বক্তৃতা শুনলাম। হঠাৎ খেয়াল করলাম, মনের অজান্তেই মুগ্ধ শ্রোতা থেকে গগনবিদারী শ্লোগানদাতা হয়ে গেছি। মাধ্যমিকেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি অনুপ্রাণিত ছিলাম। কিন্তু ঘণ্টাখানেকের ব্যবধানে আমি যেন তাঁর ছাত্রলীগের অন্যতম সক্রিয় কর্মী। সেই সক্রিয় প্রবেশ কিছুক্ষণ আগেই বঙ্গবন্ধুর;মাঠে আয়’ নির্দেশের মধ্য দিয়ে ঘটল। ( ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, পাবনায় বঙ্গবন্ধু, পৃ. ২০২)

এই ঘটনা আমাদের আজকের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এর মনে এক গভীর রেখাপাত করেছিল। প্রভাবিত করেছিল তার জীবন। শুরু হয় রাজনৈতিক পদচারণা। যার ফলশ্রুতিতে একাধিক দায়িত্ব পালন করেছেন মুজিব আদর্শের সৈনিক হিসেবে। ক্রমান্বয়ে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ও পরে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি (১৯৬৮-১৯৭৪), মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, পাবনা জেলা বাকশালের যুগ্ম সম্পাদক মনোনীত হয়ে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন গড়ে তুলেছিলেন।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে দেশে ফিরেই দ্রুত যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠন শুরু করেন। বৃহত্তর: পাবনা অঞ্চলকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা ও এক ফসলী জমিগুলোকে তিন। ফসলী জমিতে পরিণত করে খাদ্য ঘাটতি মোকাবেলার জন্য বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পাবনা সফরে আসেন এবং মুজিব বাঁধের উদ্বোধন করেন। এ সময়ে মো. সাহাবুদ্দিন ছিলেন পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। স্বাভাবিকভাবেই নগরবাড়িতে মুজিব বাঁধের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর সাথে পুনরায় সাক্ষাৎ ঘটে। এই সাক্ষাত পরবর্তী ঘটনা মো. সাহাবুদ্দিন এর কাছে ছিল অকল্পনীয় বিষয় ।

তাইতো তিনি ওই দিনের ঘটনার স্মৃতিচারণায় উল্লেখ করেছেন;স্বাধীনতার পর কয়েকবার বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সম্মুখ সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছিল আমার। যার একটি ঘটনা আজও আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়। সালটা ১৯৭২, ফেব্রুয়ারি মাস। বন্যাকবলিত মানুষকে বাঁচাতে পাবনার কাশিনাথপুর/নগরবাড়িতে ‘মুজিব বাঁধ উদ্বোধন করতে আসেন জাতির জনক। আমি তখন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। যথারীতি জনসভার আয়োজন হলো। স্বাগত বক্তব্যের দায়িত্ব পড়ল আমার ওপর। বক্তৃতা দিলাম। ডায়াস থেকে যখন মুখ ঘুরিয়ে চলে যেতে উদ্যত হয়েছি ঠিক তখনই বঙ্গবন্ধু আমার হাত ধরে ফেললেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দাঁড়িয়ে গিয়ে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। কপালে চুমু দিয়ে বললেন—তুই তো ভালো বলিস।

বঙ্গবন্ধুর বুকে লেপ্টে আছি; কী বলব কী বলা উচিত, বুঝতে পারছিলাম না। মুহূর্তের জন্য হতবিহ্বল হয়ে গেলাম। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলাম জাতির জনকের দিকে। পরে দুই-একটি কথা বলে স্টেজের সাইডে গেলাম। পরে এই ভেবে উৎসাহী হলাম যে, মাত্র ১৮ মিনিট বক্তৃতায় যিনি সাত কোটি মানুষকে এক সুতায় গেঁথেছিলেন, লাখ লাখ মানুষকে রাস্তায় নামিয়েছেন; সেই মানুষটি যখন আমার ভাষণের প্রশংসা করলেন, তখন সেটা নিঃসন্দেহে ছোট ব্যাপার নয়। বঙ্গবন্ধুকে গার্ড অব অনার প্রদানের মধ্য দিয়ে যথারীতি অনুষ্ঠান শেষ হলো। বঙ্গবন্ধু হেলিকপ্টারে উঠতে যাচ্ছেন, এমন মুহূর্তে আমার কাছে জানতে চাইলেন— ঢাকা যাব কিনা?

আগে-পাছে চিন্তা না করে রাজি হয়ে গেলাম। প্রথমবারের মতো হেলিকপ্টার ভ্রমণের সুযোগ হলো, তাও রাষ্ট্রপতি [প্রধানমন্ত্রী] বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে। ঢাকায় হেলিকপ্টার থামল পুরনো বিমানবন্দর তেজগাঁওয়ে। আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে ডাকলেন বঙ্গবন্ধু। নির্দেশ দিলেন-ওকে (মো. সাহাবুদ্দিন কে) বাসায় নিয়ে খেতে দাও, তারপর খরচ দিয়ে পাবনা পাঠিয়ে দিও।”

পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার কারণে সাংগঠনিকভাবে আরো কয়েকবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ছাত্র ও যুবনেতা মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন সাহাবুদ্দিন এর আরো সাক্ষাৎ ঘটেছে। স্বাধীনতাত্তোর পাবনায় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক ঐতিহাসিক জনসভায় ভাষণ দেন। পাবনা স্টেডিয়ামের ওই জনসভায় পাবনার ছাত্রনেতা হয়ে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও বক্তৃতা করেছিলেন। বক্তৃতার পর এবারো যথারীতি তিনি বঙ্গবন্ধুর ভূয়সী প্রশংসা পান।

পেশায় একজন আইনজীবী মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্বাচিত হন তিনি। এছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২৫ বছর পর ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন। বিচার হিসেবে তিনি ছিলেন নির্ভীক।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর যে হামলা হয় এবং হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটে, সেসব ঘটনার তদন্তে গঠিত কমিশনের প্রধান ছিলেন মো. সাহাবুদ্দিন এবং তাঁর সঙ্গে কমিশনের অপর দুই সদস্য ছিলেন মনোয়ার হোসেন আখন্দ এবং মীর শহীদুল ইসলাম। আমরা জানি সচরাচর কোন তদন্ত কমিটি গঠিত হলে তার প্রতিবেদন খুব সহজে প্রকাশিত হয় না। কিন্তু মো. সাহাবুদ্দিন কমিশন এই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ( তদন্ত প্রতিবেদন, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন, ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০০১ পরবর্তী সহিংসতা) যা পরবর্তীকালে ২০১৪ সালের ১ এপ্রিল তারিখে বাংলাদেশ গেজেট প্রকাশ করে।

৮ম জাতীয় সংসদ ২০০১ নির্বাচনোত্তর সহিংসতার বিষয়টি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন কমিশন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে উল্লেখ করে: ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর খুন, ধর্ষণ, লুন্ঠন, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, অগ্নি সংযোগসহ সকল মানবতাবিরোধী সংহিংসতায় আক্রান্ত নিরীহ ব্যক্তি ও পরিবারের শোক, দুঃখ ও বেদনার সাথে একাত্বতা প্রকাশ করছে এ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন।

শুধু তাই নয়, তদন্ত কমিশনের প্রসঙ্গ কথাতেও তিনি মর্মস্পর্শী ভাষায় উল্লেখ করেছিল : ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী জয়ী দল বা গোষ্ঠী যখন আদর্শিক কারণে অপশক্তির প্রশয়ে ও আগ্রাসনে প্রতিরোধহীন তখন অসম্ভব ঘটনা ঘটতেই পারে। ইতিহাসের এই জঘন্যতম, বর্বরোচিত কালো অধ্যায়ের সূচনা ২০০১ সালের ১ লা অক্টোবর। প্রতিহিংসার রাজনীতিতে মানবতা লাঞ্চিত। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি লন্ড-ভন্ড। মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনা বিরোধী শক্তি বাংলাদেশ জুড়ে শুরু করে নারকীয় তান্ডব। এদের সংঘঠিত হত্যা, ধর্ষণ, সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ, সম্পদ লুন্ঠন, জোরপূর্বক চাঁদা আদায়, শারীরিক নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের মতো অসংখ্য ঘটনায় মানবতা ক্রন্দনরত। বিদীর্ণ বাংলাদেশ।”

বিচারপতি মো. সাহাবুদ্দিন এই কমিশনের প্রধান ছিলেন বলেই সত্যটা বাংলাদেশ জানতে পেরেছে। না হলে বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে কাঁদার মতোই অবস্থা হতো। বিচারিক কার্যক্রমে মো. সাহাবুদ্দিন আরও দৃঢ়তার পরিচয় দেখিয়েছেন পদ্মা সেতু কে নিয়ে যখন মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিল বিশ্বব্যাংক। ফলে বিশ্ব ব্যাংকের ‘চাপে’ দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত শুরু হয়। তখন তিনি ছিলেন দুদকের কমিশনার।

২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর দুদকের পক্ষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়। যাতে উল্লেখ করা হয় পদ্মা সেতু নির্মাণে ‘দুর্নীতি বা ষড়যন্ত্রের’ কোনো প্রমাণ তারা পায়নি। এই তদন্তে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা পালন করেন মো. সাহাবুদ্দিন। ফলে পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলায় দুদকের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে আদালত সাত আসামির সবাইকে অব্যাহতি দেয়।

এটি ছিল এক বিশাল সাহসিকতার বিষয়। কারণ সমগ্র বিশ্ব এই ঘটনাকে পর্যবেক্ষণ করছিল। তখন যদি এই সত্যটা জনসম্মুখে না আসতো, তাহলে হয়তো আজ পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণই হতো না। তাইতো আমরা দেখি বিবিসি বাংলা নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সেদিন দুদকের কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন বলেছিলেন ‘তাদের তদন্তের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কোন চাপ বা প্রভাব ছিল না।’ উল্লেখ্য যে তাঁর তৈরি তদন্ত প্রতিবেদন কানাডার আদালতেও সমর্থিত হয়।

রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তিনি সুষ্ঠু এবং সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনা করছেন। ইতোমধ্যে তিনি আন্তর্জাতিকভাবেও সাড়া ফেলেছেন। তুরস্কের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি ৪৩তম ‘আসিয়ান’ শীর্ষ সম্মেলন এবং ১৮তম ‘ইস্ট এশিয়া’ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। ইন্দোনেশিয়ার এই সফরে তিনি ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি জোকো উইডোডো এবং ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) মহাসচিব ড. সালমান আল ফারিসির সাথে আলাদা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করেছেন। শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সঙ্কটের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন, আসিয়ানের বিভিন্ন বিষয় উত্থাপন করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, সাত বছর আগে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আশ্রয় নেওয়া জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১.২ মিলিয়ন মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রত্যাবাসনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ এখন নানামুখী সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

এই অনুষ্ঠানেই বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তারা হলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ, ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন এবং লাওসের প্রধানমন্ত্রী সোনেক্সে সিফানডোন প্রমুখ। তাঁরা বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের দূরদর্শিতা এবং আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছেন।

সাংবিধানিক দায়িত্বের মধ্যে অনেক কর্তব্য থাকলেও আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে তাঁর সময়েই। এই চ্যালেঞ্জকেও মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁর অতীত অভিজ্ঞতা দিয়েই উতরে যাবেন বলেই দেশবাসী তাঁর উপর আস্থা রেখেছেন। ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে তিনি নিজেও ইস্পাত দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। আমরাও আশা করি নতুন রাষ্ট্রপতির প্রত্যাশায় বাংলাদেশের অনাগত দিনগুলো নতুন বছরের নতুন স্বপ্ন নিয়ে ধরা দিক। নির্বাচনী বছর ২০২৪ সালে দেশের প্রতিটি রাস্তায়, প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি শহরে উৎসবমুখর হয়ে উঠুক। আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতির সুস্বাস্থ্য বজায় থাকুক। তাঁর জন্মদিনে আমাদের অযুত ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি!

লেখক: অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাক্তন উপ উপাচার্য, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

এইচআর/এমএস