‘তোমাদের আরিফ ভাইয়া’ কি আমাদের সন্তানদেরও ‘রোল মডেল’ হতে যাচ্ছে?
‘তোমাদের আরিফ ভাইয়া’ নামের কিশোর গ্যাংটির প্রধান হিসেবে আরিফ তার নামটি ট্যাটু করে গলায় লিখে রেখেছে। দল নেতা হিসেবে নিঃসন্দেহে যুতসই ও অভিনব হয়েছে তার এই ট্যাটু করার আইডিয়াটি। এছাড়া নেতাসহ দলের সবারই সিনেমার ভিলেনদের মতো সাজগোজ, চুলের স্টাইল। এদের কাজ দলবল নিয়ে বিভিন্ন স্থানে মারামারি করা, আতঙ্ক সৃষ্টি করা এবং এলাকায় দাপটের সাথে থাকা। ওদের যা দরকার বা যা ওদের নাই, সেগুলো কেড়ে নেওয়াই তাদের লক্ষ্য।
এই সমাজ তাদের শিখিয়েছে ভিলেনরাই ক্ষমতাধর, ভিলেনরাই প্রকৃত রোল মডেল। এখানে পড়াশোনা করে, ভালো মানুষ হয়ে একজন মানুষ যা পায়, দুর্নীতি করে বা অন্যেরটা কেড়ে নিয়ে এর চাইতে অনেক বেশি পাওয়া যায় এবং আরামেও থাকা যায়। তাই হয়তো এ পথে নাম লেখাচ্ছে আমাদের শিশু-কিশোররা।
দেশের বাড়ি রংপুর থেকে আশির দশকে আমাদের বাসায় ১২-১৩ বছরের একটা ছেলে এলো মূলত আব্বার সাথে থাকার জন্য। বাড়িশুদ্ধ লোক ওকে অক্ষরজ্ঞান দিতে গিয়ে হয়রান হয়েছে মাত্র, একটি লাইনও শেখাতে পারেনি। ওর নাম ছিল ঢ্যাড়ামদ্দী। ঢ্যাড়ার সবদিক ভালো ছিল কিন্তু সমস্যা ছিল ও চুরি করে খেতো। পোলাও-মাংস থেকে আলু সেদ্ধ, মিষ্টি থেকে কাঁচকলা সবই চুরি করে খেতো। মাঝে মাঝে ওর এই চুরি করার ক্ষমতাকে ম্যাজিক বলে মনে হতো।
কেন ও শুধু খাবার চুরি করে, অন্য কিছু চুরি করে না, এ ব্যাপারে ঢ্যাড়ার একটি যুক্তি ছিল। রংপুরের ভাষায় ও বলতো, “মোর বাপ মোক চুরিবিদ্যা শিখাইছে। মোর বাপও চোর ছিলে, মুইও চোর। বাপের সাথোত থাকি মুইও চুরি শিখছি। ওমরালা মোক হাটোত ধরি যাইতো মাছ চুরি কইরবার তানে। চুরি কইরবার পাইল্লে খাওয়ান পাইতাম, না পাইল্লে খায়োনও নাই।” (বাবা হাটে নিয়ে যেতো মাছ চুরি করার জন্য। চুরি করতে পারলে খাওয়া জুটতো, তা না হলে খাওয়া নাই)।
ঢ্যাড়া বলেছিল, ‘কোনদিন কাহো মোক আদর করি খাইতে দেয় নাই। চোরের ছেলে চোরই হয়। আর যাক কাহো আদর কারে না, সেই বাচ্চা কাড়ি খাবার শিখে।’ আমরা বুঝতে পেরেছিলাম খাবার অভাবে চুরি করতো বলে, হয়তো ও খাবারটাই চুরি করতে শিখেছিল।
আশির দশকের সেই ঢ্যাড়ার মতো ছেলেরাই এখন কিশোর গ্যাং তৈরি করছে। এদের অপরাধের হার বেড়েছে, চরিত্র পাল্টেছে, অপরাধের ধরনে ভয়াবহতা এসেছে, হাতে নানাধরনের অস্ত্র এসেছে। এখন শিশু-কিশোরদের নামে চুরি-ডাকাতি, হামলা-মারামারি ছাড়াও আছে হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগ। সময়ের সাথে সাথে শিশুর অপরাধের ক্ষেত্র বেড়েছে, মনমানসিকতাও জটিল হয়েছে। সমাজ-মনোবিদরা বলছেন, পারিবারিক বন্ধন ও নৈতিক মূল্যবোধের অভাব এবং অর্থনৈতিক সংকটে থাকা অনেক পরিবারের শিশু-কিশোর হত্যা, ধর্ষণ, চুরি-ছিনতাই ও মাদক অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। শিশু-কিশোরদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে এভাবে জড়িয়ে পড়ার হার খুবই উদ্বেগজনক।
কেন বাড়ছে কিশোর অপরাধ? এজন্য দারিদ্র্যকে দায়ী করা হলেও, এটাই মূল কারণ নয়। অবস্থাপন্ন গৃহের সন্তানরাও অপরাধী হয়ে উঠছে। অর্থ-প্রতিপত্তি আছে কিন্তু মা-বাবার ভালোবাসা ও শাসন নেই, পারিবারিক বন্ধন ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে, পরিবারগুলোতে সন্তান লালনপালনের ক্ষেত্রে সামাজিকীকরণের ধাপগুলো মেনে চলা হচ্ছে না, শিশু স্কুলেও যথাযথ শিক্ষা পাচ্ছে না আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আদর্শিক জায়গা থেকে তাদের সামনে কোনো ‘রোল মডেল’ নেই। আছে ‘তোমাদের আরিফ ভাইয়া’ এর মতো দল বা ক্যাডার বড় ভাই।
কিশোর বয়সের বাচ্চারা মারামারি, হৈচৈ, ঝগড়া-বিবাদ করতেই পারে। বয়সের কারণে কিছুটা এমন হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে খুন, ধর্ষণ, নিজেদের মধ্যে সংঘাত, বন্ধুকে মেরে ফেলা, মারার আগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া? প্রায় ৩০-৪০ বছর আগে আমরা পাড়া-মহল্লায় যে শিশু-কিশোর মাস্তানদের দেখেছি , তাদেরও অধিকাংশের বয়সই ১৪ থেকে ১৮ এর মধ্যে ছিল।
পাড়ার রকে বসে আড্ডা দেওয়া, পাড়ার মেয়েদের দেখে গান গাওয়া, আম-পেয়ারা পেড়ে খেয়ে ফেলা, হঠাৎ ভিসিআর ভাড়া করে এনে দু-একটা নীল ছবি দেখা ও সিগারেট-বিড়িতে টান দেওয়াই ছিল তাদের কাজ। এরপরেও সেই মাস্তানদের দেখেছি মুরব্বিদের সামনে দেখলে সিগারেট লুকিয়ে ফেলতে, সালাম দিতে, পাড়ায় কেউ বিপদে পড়লে তার পাশে গিয়ে দাঁড়াতে, কোনো বাড়িতে কেউ মারা গেলে সেখানে গিয়ে দায়িত্ব পালন করতে।
আজকের কিশোর অপরাধীদের মধ্যে একধরনের ভয়াবহতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নিম্নবিত্ত ঘরের পড়াশোনা না জানা কিশোর-তরুণরা আছে নেতৃত্বে। শিক্ষিত, সচ্ছল ও ধনী পরিবারের বেপরোয়া বা বখাটে সন্তানরা চালিত হচ্ছে লেখাপড়া না জানা কিছু মাস্তানদের দ্বারা। অপরাধীদের তালিকায় কিশোরী-তরুণীরাও রয়েছে। এরা মাদক ও সেক্স ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু। বিভিন্ন অপরাধের সাথে শিশু-কিশোরদের ক্রমবর্ধমান সংশ্লিষ্ট হওয়ার হার উদ্বেগজনকভাবে যে বেড়েছে, তা কিন্তু খুব সম্প্রতি নয়। অনেকদিন ধরেই ধীরে ধীরে বাড়ছে কিন্তু আমরা নজর দেইনি এবং এখনও দিচ্ছি না।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে বন্ধুবান্ধবরাই শিশু-কিশোরদের অপরাধ জগতের দিকে টেনে নিলেও, দরিদ্র শিশুদের খাবার ও আশ্রয়ের কথা বলে অপরাধীরা এ জগতে টেনে আনছে। এছাড়া সমাজের মধ্যে ফারাক বাড়ছে। আর্থ-সামাজিক এ ব্যবধান শিশুকে অপরাধী হতে পথ দেখায়। শিশু-কিশোরদের মনে কিছু ধারণা প্রভাব ফেলছে। যেমন ‘ওদের এত আছে, আমাদের নেই কেন’, ‘ও মাস্তানি করে ধনী হচ্ছে, তাহলে আমরা নই কেন?’, ওই লোকগুলো পড়াশোনা না করেও গায়ের জোরে অন্যেরটা কেড়ে নিয়ে ভালো আছে, তবে আমরা কেন পড়াশোনা করবো?’ এসব যুক্তির বিপরীতে আমরা ভালো ও শক্তিশালী কোনো উদাহরণ তুলে ধরতে পারছি না বলে আমাদের সন্তানদের হারিয়ে ফেলছি দ্রুত। ভোগ করার বাসনা, অতিরিক্ত চাহিদা, অতিরিক্ত প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি, ক্ষুধা-মন্দা, মাদক অনেক শিশু-কিশোরকে করে তুলছে দুর্বিনীত।
হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার পেছনে শহরের সব শিশু-কিশোররা দলবেঁধে ছুটে গিয়েছিল এবং আর ফিরে আসেনি। ঠিক তেমনি আমাদের সন্তানেরা অপরাধ জগতের পেছনে ছুটে যাচ্ছে। বাবা-মা বোঝার আগেই এরা ‘তোমাদের আরিফ ভাইয়া’ বা অন্য গডফাদার বাঁশিওয়ালার পেছনে চলছে ও পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ছে।
এ অবস্থা চলতে থাকলে একদিন এমন হবে যে বাবা-মায়েরা ঝাপসা চোখে, ভাঙা দেহ নিয়ে শূন্য অট্টালিকায় বসে থাকবেন, আর তাদের সন্তানরা হারিয়ে যাবে অপরাধ জগতে। শিশু-কিশোর অপরাধের ঘটনাগুলো বিচ্ছিন্নভাবে ঘটলেও তা চরম শংকার জন্ম দিচ্ছে। শিশু থেকে তরুণ-যুবার এ আচরণ একধরনের অসহিষ্ণু সমাজের কথা বলছে। যে সমাজে ‘সামাজিক বন্ধন’ বলে কিছু নেই।
কিশোর গ্যাংয়ের সাথে জড়িত কিশোরদের অনেকেই বলেছে তাদের সামনে ‘রোল মডেল’ নেই। এই কিশোরদের জীবনের লক্ষ্য ‘বড় ভাই’ হওয়া। রাজনৈতিক দলে থাকা বড় ভাইদের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি কিশোরদের প্রলুব্ধ করে। এই বড় ভাইয়ের ধারণা থেকেই সমাজে তোমাদের আরিফ ভাইদের উত্থান ঘটছে। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘কিশোররা দেখে যে অপরাধীরা হিরো। তারা দেখে বড়রা নানা অপরাধ করে ক্ষমতাবান হচ্ছে। ফলে তারাও সেই পথে যায়, তারাও গ্যাং গঠন করে নিজেকে ক্ষমতাবান করতে চায়, হিরো হতে চায়।’
স্থানীয় রাজনৈতিক গডফাদার ও জনপ্রতিনিধিরাই কিশোর গ্যাংয়ের নেপথ্যে সক্রিয় বলে অভিযোগ আছে। তাই পুলিশ একটি গ্যাং ধরলেও, আরেকটি গ্যাং গজিয়ে ওঠে। এই গডফাদাররা তাদের নানা অপরাধ কর্মে কিশোর গ্যাংকে ব্যবহার করে। ঢাকাসহ সারাদেশে এ পর্যন্ত যেসব কিশোর গ্যাং আলোচনায় এসেছে তাদের অধিকাংশের নেপথ্যে আছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা। রাজনৈতিক গডফাদাররা শক্তি দেখাতে, মাদক ব্যবসা করতে এবং ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেই কিশোর গ্যাং তৈরি করে।
শিশু-কিশোররা যখন প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি কিছু পেয়ে যায়, যখন তাদের কাজের বা আচরণের জন্য কোথাও কোনো জবাবদিহি করতে হয় না, যখন তারা দেখে তাদের অভিভাবক অসৎ এবং অন্যায় করেও শক্তির জোরে টিকে থাকা যায়, তখন শিশু-কিশোররা খুব সহজেই এমন বিপজ্জনক পথে পা বাড়ায়। শিশু এত সহজ সরল থাকে যে, তাকে যে যেভাবে খুশি ব্যবহার করতে পারে। এ সুযোগটাই অপরাধীরা গ্রহণ করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ গবেষক তৌহিদুল হক সংবাদমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা যখন দেখে তাদের ব্যবহারকারীরা গণ্যমান্য, পুলিশসহ প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে ওঠাবসা করেন তখন তারা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। তাদের বয়স কম হওয়ায় তারা পরিণিতির কথা চিন্তা না করে যে, তারা কোনো ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এটাই এখন আমাদের একটি বড় সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে।
পানির মূল ট্যাংকে যদি দূষিত বা ময়লা পানি থাকে, তাহলে সেই ট্যাংকের সাথে সংযুক্ত প্রতিটি কল থেকেই ময়লা পানি বের হবে। সেক্ষেত্রে যতক্ষণ পর্যন্ত না মূল ট্যাংকের পানি পরিশোধিত হবে, ততক্ষণ অন্য কলগুলোতেও সেই দূষিত পানিই আসতে থাকবে। মানুষের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য। সমাজের অভিভাবক, পথ প্রদর্শকরা যদি ভুল পথে যায়, তাহলে যুবসমাজ, শিশু-কিশোর সেই দিকেই ধাবিত হতে বাধ্য।
এ সমাজে আমরা যারা অভিভাবক, তারা নিজের দিকে চোখ ফেরালেই বুঝবো যে, কীভাবে আমাদের অসচেতনতা, অসততা, দ্বন্দ্ব, বিচ্ছেদ, প্রতিহিংসা, ক্ষমতা ও অর্থলোভের মতো নেতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলো আমাদের সন্তানদেরই ধ্বংসের পথে পরিচালিত করছে। আজ এই যে কিশোর গ্যাংয়ের উত্থান, ক্ষমতা ও সংখ্যা বৃদ্ধি- এদিকে তাকালে স্পষ্ট বোঝা যায় যে এই প্রেক্ষাপট একদিনে তৈরি হয়নি। অথবা কিশোররা নিজেরা এজন্য দায়ী নয়। দায়ী আপনি, আমি, আমরা, এই সমাজ ও রাজনীতি।
এই সংঘবদ্ধ কিশোর গ্রুপগুলোর নামধামও খুব অদ্ভুত। যেমন 'ইয়াং স্টার', 'ডিসকো বয়েজ', 'বিগবস', 'রাজু-রকি গ্রুপ', 'রোমান্টিক গ্রুপ', 'মুসা-হারুণ গ্রুপ', 'সোহেল-অতুল গ্রুপ', 'পটেটো রুবেল গ্রুপ'। বাবা-মায়ের কাছে রাজপুত্র ও রাজকন্যাসম আদরের সন্তানই একদিন ভিড়ে যায় এসব দলে অথবা নিহত হয় কোনো অপরাধী গ্রুপের হাতে।
শিশু-কিশোররা ইউটিউব, টিকটক, ভায়োলেন্ট গেমস, বুলি করা ও পর্নোগ্রাাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এসব আসক্তিই মূলত তাদের মধ্যে ডেভিয়েন্ট বিহেভিয়ার বা সমাজবহির্ভূত আচরণকে প্ররোচিত করে। মূলত স্কুলে পড়তে গিয়ে বা পাড়ায় আড্ডা দিতে গিয়ে মজা করার জন্য এ গ্রুপ তৈরি হলেও একসময় মাদক, অস্ত্র এমনকি খুনোখুনিতেও জড়িয়ে পড়ে এরা।
এখনকার শিশু-কিশোররা একদিকে যেমন পরিবার, সমাজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথেষ্ট মনোযোগ পাচ্ছে না, পাশাপাশি তাদের সামনে সহজলভ্য হচ্ছে সেক্স, মাদক, অস্ত্র, প্রযুক্তি, পর্নোগ্রাফি, উগ্রবাদ ও বিভিন্ন অশ্লীল ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। ফলে শিশু-কিশোরদের কেউ যখন বন্ধুদের মাধ্যমে কিশোর গ্যাংগুলোতে ঢুকছে এবং মাদক ও অস্ত্রের জোগান সহজেই পেয়ে যাচ্ছে, তখন তার পক্ষে অপরাধপ্রবণ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
তাহলে আমাদের সন্তানদের রক্ষার উপায় কী? উপায় হচ্ছে অনুসরণ করার মতো রোল মডেলের খোঁজ করা। পানির মূল ট্যাংকে ভালো পানি রাখা, যেন অন্য কলগুলো থেকে দূষিত পানি বের না হয়। শিশুরা পরিবার ও সমাজ থেকেই শেখে। সমাজে অপরাধী হওয়ার যে সুযোগ তৈরি হচ্ছে, তা বন্ধ করতে হবে। পরিবারে শিশু-কিশোরদের বিচ্ছিন্ন না রেখে, যথেষ্ট সময় দিতে হবে।
কিশোর গ্যাং পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টি। কাজেই শুধু আইন দিয়ে এদের নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। অভিভাবকদের খেয়াল রাখা উচিত যে তাদের সন্তানরা কার সাথে মেলামেশা করছে এবং অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোতে যাওয়া আসা করছে কি না। সন্তানের আচরণে ও কথাবার্তায় যে কোনো ধরনের নেতিবাচক পরিবর্তনকে অবহেলা করার সুযোগ নেই। অবহেলা করা মানেই সন্তানকে হারানো। পরিবারের পাশাপাশি সমাজ ও দেশও রক্ষা পাবে না কারণ কিশোর গ্যাং কালচার ক্রমশ পুরো সমাজকে গ্রাস করবে।
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
লেখক: যোগাযোগকর্মী ও কলামনিস্ট।
এইচআর/ফারুক/এএসএম