ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

শুধু কথা দিয়ে চুলায় রুটি ওঠানো যায় না

এএইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন | প্রকাশিত: ১০:২৩ এএম, ০৭ মে ২০২৩

গর্ব করে বলতে পারি। শেখ হাসিনা আমাদের নেত্রী। হ্যাঁ, তিনিই আমাদের প্রধানমন্ত্রী। টানা প্রায় পনের বছরের কাছাকাছি সময় হবে- তিনি বাংলাদেশের সেবক হয়ে লড়ে যাচ্ছেন। আর যখন বৈশ্বিক পর্যায় হতে তাঁকে ঘিরে সত্যটা কেউ বলতে থাকেন, তখন নিজেকে গর্বিত হিসেবে ঘোষণা করতে ইচ্ছে করে।

গেল শুক্রবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক আমাদের শেখ হাসিনাকে একজন সফল অর্থনৈতিক নেতা হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, ‘আপনি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা।’ আমার মনে হয়, নিন্দুকেরা জবাব পেয়ে যায়। যখন ঋষি সুনাক শেখ হাসিনাকে সামনাসামনি পেয়ে বলেন, "আমি আপনাকে অনেক বছর ধরে অনুসরণ করছি।"

বাংলাদেশের নামধারী রাজনৈতিক দল বিএনপি আহুত একেক সময়ের একেক উক্তি যে বিরোধিতা করার জন্যই বলা, তা ফলত প্রমাণ হয়ে যায়। যুক্তরাজ্যের মত দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন বাংলাদেশের অর্থনীতি ও এগিয়ে যাওয়াকে অবলোকন করে নির্মোহ সত্যের ধারভাষ্য প্রদান করে, তখন পিছ থেকে মন্দরা কী বলে, তা কর্ণপাত করার সময়ও আসলে নেই। কা'র নেই? শেখ হাসিনার নেই। তিনি জানেন, তাঁর পিতার সোনার বাংলা গড়ার জন্য তাঁকে জনশ্রেণির জন্য সেরাটা দিতে হবে। তিনি দিয়েও যাচ্ছেন। সুগভীর বাস্তবতায় তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নিই যে, বাংলাদেশে দুইটি রাজনৈতিক মেইল এক্সপ্রেস আছে। তবে শেখ হাসিনা এক্সপ্রেস কতটা একটি এক্সপ্রেস থেকে এগিয়ে গিয়েছেন, তা চিন্তাশক্তি দিয়ে মির্জা ফখরুলদের বুঝতে হবে। হয়তো বেগম জিয়াও খানিকটা বুঝে গিয়েছেন!

পর্তুগিজ একটি বিখ্যাত উক্তি ছিল। তা হল, “শুধু কথা দিয়ে চুলায় রুটি ওঠানো যায় না”। আমার মনে হয়, কথা দিয়ে তাই মির্জা ফখরুলেরা আর পারবেন না। তাদেরকে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য প্রদান করে বাংলাদেশের জন্য কি কি করতে চান, তা প্রমাণকরতঃ রাজনীতি করতে হবে। অন্যথায়, বিএনপি নখদন্তহীন বামধারার রাজনৈতিক দলের মত করে পরিণতি বরণ করবে।

প্রশ্ন হল, বিএনপি আন্দোলনের নামে যে নাশকতা সামনের দিনে করবে, তা সামাল দেয়া ইস্যুতে জনগোষ্ঠীকে নিয়ে মোকাবিলা করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণে আওয়ামী লীগ প্রস্তুত আছে কিনা? আমি মনে করি, আমাদের হোমওয়ার্ক বাড়াতে হবে। উন্নয়নের মহাসড়কে রওনা দিয়ে চোখ নাক মুখ খোলা রেখে জনগণের জীবনের নিরাপত্তা প্রদানেও তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে।

বাংলাদেশের সব শ্রেণির মানুষগুলোর উদ্দেশ্যে বলতে চাই যে, জার্মান একটা চিরন্তন মতবাদ আছে। তা হল, “চোখ নিজেকে বিশ্বাস করে; কান বিশ্বাস করে অন্যকে”। আপনারা চোখ দিয়ে দেখে শেখ হাসিনায় আস্থা রেখেছেন ও রাখবেন। তবে মন্দদের কথা শ্রবণ করে অন্য কিছু বিশ্বাস করতে যাবেন না। ওরা অপপ্রচারকারী, মিথ্যুক ও দুষ্টুও। হয়তো বলবেন, তাঁরাও তো ক্ষমতায় আসত! উত্তরটা হল, “অকর্মার কাছেও মাঝে মাঝে সৌভাগ্য আসে, কিন্তু কখনই বেশিক্ষণ থাকে না”। এর অর্থবহ ব্যাখ্যা হল, রাষ্ট্রের সেবা করতে এসে ওই বিএনপি নিজেদের হালুয়া-রুটির বন্দোবস্তে থেকেছে। দুর্নীতি করেছে। আর মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা প্রদানে তারা সেবক হয়ে উঠতে পারেনি। থেকে গেছে অকর্মা হয়ে। তাই এখন আর রাষ্ট্রের সেবক হয়ে দায়িত্বও তারা পায় না। স্রষ্টার ইচ্ছে থাকতে হবে তো!

সৎ হতে পারার মধ্যে আনন্দ আছে। যে আনন্দ রাজনৈতিকভাবে প্রতিটি সত্তাকে বিপ্লবী করে তুলতে পারে। রাজশাহী শহরকে কখনই বদলাতে পারতাম না, যদি বিপ্লবী মানসসত্তায় বিভোর থেকে সততাকে অবলম্বন না করতাম! সততাই রাজনীতিক হওয়ার প্রধান শর্ত। দার্শনিক ঈশপ বলেছিলেন, “সৎ কর্ম যত ছোটই হোক, তা কখনও বৃথা যায় না”

বিএনপি একটি মূলধারার রাজনৈতিক দলের আবহে কার্যত কৃত্রিম আয়োজনে পুষ্ট থাকা অসৎ ব্যক্তিবর্গের আড্ডাকেন্দ্রিক বৈঠকখানার ফলাফল। তারা জনস্বার্থের রাজনীতি নিয়ে এগোতে পারেনি। লেখক টলকিন তাঁর রচিত লর্ড অব দ্য রিংস পুস্তকে লিখেছিলেন যে, “যারা নতুন কিছু খোঁজে না, একদিন তাদেরও কেউ খুঁজবে না”। বিএনপি বাংলাদেশের মানুষগুলোর জন্য নতুন কিছু ভাবতে পারেনি। আওয়ামী লীগ পেরেছে। ব্যক্তি পর্যায় হতেও পেরেছে। শেখ হাসিনা পেরেছেন। এমনকি তাঁর দুই কৃতি সন্তানেরাও সারাদিন বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তা করে যাচ্ছে।

মির্জা ফখরুলদের তাই বলবো, এত কথা বলেন কেন? যেখানে শেখ হাসিনাকে আদর্শ বলছেন খোদ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর পরিজনেরা পর্যন্ত একজন শেখ হাসিনার আদর্শে অনুরণিত। সারাবিশ্ব জানেন, শেখ হাসিনা একজন বিশ্বনন্দিত রাজনৈতিক- অর্থনৈতিক ব্র্যান্ড। তিনি পদ্মা সেতুর স্থিরচিত্র বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের কাছে তুলে দিয়ে কী ইঙ্গিত রেখেছেন? বুঝতে হবে জনাব ফখরুলদের।

গ্রিক দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন, “বুদ্ধিমানেরা তখন কথা বলে যখন তাদের কিছু বলার থাকে। বোকারা কথা বলে কারণ তারা ভাবে তাদের কথা বলতে হবে”। আমি তো মনে করি, প্রতিটিদিনে মির্জা সাহেবরা ভাবে যে, কথা বলতে হবে, বলে যেতে হবে- বুদ্ধিমান গোত্রের হয়ে তাই নতুন করে রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন করেন, নতুবা, দেশের মানুষ অতটা বোকা নন, তা প্রমাণ করতে তারাও জানেন।

লেখক: সভাপতিমণ্ডলির সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

এইচআর/জেআইএম