ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

কোয়ার্টারের পথে আর্জেন্টিনা

ডা. পলাশ বসু | প্রকাশিত: ১০:০৫ এএম, ০১ ডিসেম্বর ২০২২

যদিও দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলা অনুষ্ঠিত হতে বাকি আছে ফলে এ ধরনের শিরোনামকে বাড়াবাড়ি ভাবতে পারেন অনেকে। কারণ খেলার মাঠে যে কোন ঘটন বা অঘটন ঘটতেই পারে। যেমন তিউনিসিয়ার কাছে ফ্রান্সের পরাজয়। অথবা সৌদি আরবের কাছে আর্জেন্টিনা এবং জাপানের কাছে জার্মানির পরাজয়। সেসব উদাহরণ মাথায় রেখেই আমি বলছি, আর্জেন্টিনার অন্ততপক্ষে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা নিশ্চিত। এ লেখা এগোনোর সাথে সাথে আশা করি পাঠকের কাছে আমি আমার ধারণা পরিষ্কার করতে পারব।

এর পেছনে কারণ হিসেবে আমি প্রথমেই বলব গতকাল পোল্যান্ডের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা যেভাবে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে তা সত্যিই অসাধারণ বিষয়। আমরা সবাই জানি, মূলতঃ আর্জেন্টিনার জন্য এ ম্যাচটি ছিলো অগ্নিপরীক্ষার মতো। জিততেই হবে নক আউট পর্বে উঠতে। ড্র করলেও সম্ভাবনা থাকতো তবে সেটা হতো "যদি" "কিন্তু" নির্ভর। ফলে এরকম চাপের মুখে তারা যে খেলা উপহার দিয়েছে তা তাদের শক্তিমত্তারই প্রতীক হিসেবে পরিগণিত হবে বলে আমার মনে হয়েছে। কারণ চাপের মুখে অনেক দল ভেঙে পড়ে। কিন্তু আর্জেন্টিনা চাপের মুখে ভেঙে তো পড়েইনি বরং তারা শ্রেয়তর ব্যবধানে জয়ী হয়ে নিজেদের সক্ষমতাকেই তুলে ধরেছে।

সৌদি আরবের সাথে হারের পর আর্জেন্টিনার শক্তিমত্তা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছিলো তাতে দলটির সমর্থকেরা হতাশ হয়ে পড়েছিল।কিন্তু পরবর্তী দুই ম্যাচে আর্জেন্টিনা প্রমাণ করতে পেরেছে যে তারা সত্যিকার অর্থেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সকল সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। তারা চ্যাম্পিয়ন হতে পারে।

প্রথম ম্যাচে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ম্যাক্সিকোর সাথে আর্জেন্টিনা যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচ জিতেছে তৃতীয় ম্যাচে পোল্যান্ডের সাথে তার চেয়ে আরো অধিক ক্রিয়াশীল থেকে ম্যাচ জিতেছে। অর্থাৎ তাদের খেলায় ক্রমান্বয়ে উন্নতির ছাপ দৃশ্যমান হয়েছে; যেটা তার সমর্থকেরা আশা করে।

তাছাড়া দলটি তার রক্ষণভাগের চিরায়ত ভঙ্গুরতা কাটিয়ে তাকে দৃঢ়তা দান করতে পেরেছে। এবং সেই সাথে ফিনিশিংয়ের দুর্বলতাও কাটিয়ে উঠতে পেরেছে বলে মনে হয়। পোল্যান্ডের সাথে খেলার ধরন কি সেই প্রতিচ্ছবিরই বহিঃপ্রকাশ নয়? গতকালের ম্যাচে মেসির পেনাল্টি মিসের পরেও পরিষ্কার ২ গোলের ব্যবধানে জেতা এবং কোনোরকম গোল হজম না করাটাও কি আর্জেন্টিনার শক্তিমত্তার পরিচয় নয়?

পোল্যান্ডের গোলকিপার যেভাবে গোল বাঁচিয়েছেন তা আমার চোখে অতি মানবীয় লেগেছে। এমন খেলার প্রশংসা করতেই হয়। কিন্তু তারা শেষ রক্ষা করতে পারেনি।

নক আউটে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ হবে অস্ট্রেলিয়া। আর্জেন্টিনার খেলায় ক্রমউন্নতির যে ছাপ, দলগত প্রচেষ্টা দেখতে পাচ্ছি সে বিচারে অস্ট্রেলিয়া আর্জেন্টিনার জয়ের পথে তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারবে বলে হচ্ছে না। ফলে অস্ট্রেলিয়াকে আমি সহজ প্রতিপক্ষ হিসেবেই মনে করছি। আর এ কারণেই আর্জেন্টিনা স্বাভাবিক খেলা খেললেই এ ম্যাচ জিতে নিতে পারবে। ম্যাচ জেতার জন্য অতি মানবীয় কোনো কিছু করতে হবে না।

এটা তো সত্যি যে কোনো খেলাতেই শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে কিছু বলা যায় না। ফলে দেখা যাক দ্বিতীয় রাউন্ডে আর্জেন্টিনা কতটা যোগ্য দল এবং সেই সাথে বিশ্বকাপের দাবিদার হিসেবে নিজেদের মেলে ধরতে পারে! আপাতত কোয়ার্টার অবধিই চোখ রাখছি। কোয়ার্টার পার হলে পরেরটুকু নিয়ে ভাবার সময় পাওয়া যাবে। ততদিনে প্রতিপক্ষ সম্পর্কেও পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।

অভিনন্দন টিম আর্জেন্টিনা! অভিনন্দন তার সমর্থকদেরকেও যারা দীর্ঘ ৩৬ বছরের অপ্রাপ্তি ঘোচানোর আশা নিয়ে অপেক্ষা করছেন! অপেক্ষা করছেন লিওনেল মেসির হাতে বিশ্বকাপ দেখার জন্য! যদিও তাদের সে আশা কতটা পূর্ণতা পাবে তা সময়ই বলে দিবে।

লেখক: চিকিৎসক।

এইচআর/এএসএম

আরও পড়ুন