পদ্মা সেতুর বিরোধিতাকারীদের ক্ষমা করবে না ইতিহাস
একটি প্রত্যাশিত সোনালি ভোরের অপেক্ষায় পুরো জাতি। স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে এখন শুধু ক্ষণ গণনার পালা। ১৯৭১ সালেন ১৬ ডিসেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছিল বাঙালি জাতি। সেই মহান বিজয় উৎসব আমরা উদযাপন করি। কিন্তু সেই বিজয়ের দিনটি আমাদের এই প্রজন্ম নিজের চোখে দেখতে পায়নি। যদিও মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের সাথে অন্য কোনো দিনের তুলনা চলে না।
কিন্তু গত কয়েক দিনে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে বাংলাদেশের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে সাধারণ মানুষের আবেগ, ভালোবাসা, প্রত্যাশা, উচ্ছ্বাস ও অনুভূতি প্রকাশ জানান দিচ্ছে মহান বিজয় দিবসের মতো আরেকটি বিজয় উৎসবের অপেক্ষায় এই প্রজন্ম। আগামী ২৫ জুন দেশবাসীর সেই কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন পূরণের দিন। বাঙালির জীবনের দ্বিতীয় বিজয় উৎসবের সাথে অদ্ভুত মিল রয়েছে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় উৎসবের।
১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনী, তাদের দোসর হায়নাদের পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশে বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছিল বাঙালি। স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছর পর বাঙালির দ্বিতীয় বিজয়ের চমকও এসেছে বঙ্গবন্ধুর রক্ত ও আদর্শের উত্তরসূরির নেতৃত্বে।
দূরদর্শী এক রাষ্ট্রনায়কের অসীম সাহসিকতা ও দৃঢ় আত্মবিশ্বাসের অবিশ্বাস্য এক রূপকথার নাম পদ্মা সেতু। যিনি দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ ও বাঙালির সক্ষমতাকে আরও একবার জানান দিলেন বিশ্ববাসীকে।
পদ্মা সেতু এখন শুধু একটি সেতুই নয়, এটি আমাদের আবেগ, ভালোবাসা, অনন্য গৌরব, মর্যাদা আর অহঙ্কারের প্রতীক। বাঙালির স্বপ্ন পূরণের অনবদ্য উপাখ্যান। বাঙালি জাতিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না জাতির পিতার সেই সাহসী উচ্চারণকে আবারো অসীম সাহসিকতায় প্রমাণ করে বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
পদ্মা সেতু হচ্ছে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার প্রত্যয় আর দৃঢ়তার প্রতিচ্ছবি। কতটা দেশপ্রেম, মাটি ও মানুষের জন্য ভালোবাসা থাকলে বিশ্বব্যাংককে ফিরিয়ে দিয়ে দেশি-বিদেশি ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে নিজস্ব অর্থায়নে এমন একটি বিরাট কর্মযজ্ঞ করা যায় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিষ্কার বক্তব্য, ‘দেশ স্বাধীন করেছি, পদ্মা সেতুর বিষয়ে মাথা নত করব না।’ তিনি কথা রেখেছেন। বাঙালি যে মাথা নত করার জাত নয়, শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বে আবারও তা টের পেল বিশ্ববাসী।
কোন পরিস্থিতিতে এমন সাহসী সিদ্ধান্ত নিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন প্রশ্নের উত্তর এখন আর কারও অজানা নয়। বঙ্গবন্ধুকন্যা এ দেশের মানুষের সুখ-দুঃখ আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা ভালোবাসার নাম। তিনি জানেন, তিনি বোঝেন কীভাবে এ দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে, কীভাবে এ দেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটবে। তিনি জানেন একটি অঞ্চলকে গুরুত্বপূর্ণ জনপদে রূপান্তর করতে কী করণীয়। পিতার রক্তের যোগ্য উত্তরসূরি বলেই তিনি জানেন কীভাবে একটি জাতিকে আত্মমর্যাদায় শীর্ষে পৌঁছানো সম্ভব?
সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে শেষ পর্যন্ত বাঙালির স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হতে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত বহুমুখী সড়ক ও রেলসেতু। এর মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে।
দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়কপথ এবং নিচের স্তরটিতে থাকবে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্পান বসানো হয়েছে। ৬,১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮,১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত দেশের সবচেয়ে বড় সেতুটির নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটির নাম চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।
খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত এই সেতু আজ আমাদের অহংকারের প্রতীক। ২০১৪ সালে শুরু হয়েছে এর নির্মাণকাজ। এটি শুধু মাত্র একটি কাঠামো নয়, পদ্মা সেতু আমাদের আবেগের নাম। বাঙালির অহংকার ও সাহসের আরেক নাম, সক্ষমতার প্রতীক। অপবাদ আর দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সাহসী প্রতিবাদের নাম। পদ্মা সেতু আজ আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামের এক উজ্জ্বল মাইলফলক।
বাঙালির এই স্বপ্ন পূরণের পথে ছিল অনেক বাধা। শুরু থেকেই নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে পদ্মা সেতুর কাজটি এগিয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা, প্রজ্ঞা ও সাহসিকতার কারণে, রাজনৈতিক, কারিগরি ও আর্থিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই সফলভাবে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর। হঠাৎ বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতা দেখা না দিলে আরও আগেই ৬.১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের আনন্দ উৎসবে শামিল হতে পারতো বাঙালি জাতি।
এ মেগা প্রকল্পটি আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির এক অনন্য প্রতীকে পরিণত হয়েছে। একটি স্বাধীন দেশ তার জনগণের সার্বিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজের অর্থে এমন একটি চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প সম্পন্ন করার সাহস পেয়েছে। কারণ আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছেন। যার শরীরে প্রবাহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্ত। যার জীবনে শুধু হার না মানার গল্প, আছে শুধু দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে এগিয়ে যাওয়ার দীপ্ত প্রত্যয়।
পিতার রক্ত ও আদর্শের যোগ্য উত্তরসূরি বঙ্গবন্ধুকন্যাও পিতার মতোই এ অঞ্চলের মানুষের দুঃখ-কষ্ট বোঝেন। ২০০১ সালের ৪ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে মাওয়া ফেরিঘাটের কাছেই এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কিন্তু সেতুটির নির্মাণকাজ থমকে যায় রাজনৈতিক হীনম্মন্যতার কারণে।
২০০৯ সালে ফের ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। অর্থনৈতিক, সামাজিক, যোগাযোগ ও রাজনৈতিক নানা বিবেচনায় পদ্মা সেতু নির্মাণকে জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় করে অগ্রাধিকার তালিকায় নিয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরুতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, জাইকা, আইডিবি এ সেতুর অর্থায়নের অংশীদার হলেও পরবর্তী পর্যায়ে বিশ্বব্যাংক যুক্ত হয়।
বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণেও এ উন্নয়ন অংশীদাররা যুক্ত ছিল। তাই সরলবিশ্বাসেই বিশ্বব্যাংককে যুক্ত করেছিল বাংলাদেশ সরকার। প্রস্তাবিত ১.২ বিলিয়ন ডলারের এ প্রকল্পের অর্থায়নে শেষ পর্যন্ত সেই বিশ্বাসের দাম রাখেনি এ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। অযথাই একটি নোংরা বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল মনগড়া দুর্নীতির অভিযোগ তুলে।
বেলাশেষে সেই অভিযোগ কানাডার আদালতসহ কোথাও টেকেনি। বিশ্বব্যাংক ছাড়া অন্য উন্নয়ন অংশীদাররা খুবই বিব্রতবোধ করছিল এ অযথা অভিযোগ তোলার জন্য। মূলত দুর্নীতির অজুহাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি থামিয়ে দেওয়ার দেশি ও বিদেশি ষড়যন্ত্র আজ আর কারো অজানা নয়। এ নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তাদের দোসরদের নানামুখী অপতৎপরতা ও সেতু বিরোধী বক্তব্য এ দেশের মানুষ কোনো দিনও ভুলবে না।
সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার সাহসী প্রতিবাদের প্রতিচ্ছবি পদ্মা সেতু আজ শুধু আবেগ ও উচ্ছ্বাসই নয়। এই সেতুর প্রভাবে পাল্টে যাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চিত্র, বিশেষ করে দক্ষিণ বাংলার অর্থনীতির ওপর পড়বে ইতিবাচক প্রভাব। পদ্মার ওপাড়ের একুশ জেলার অর্থনীতি ও সমাজে আসবে অকল্পনীয় পরিবর্তন।
এ সেতু চালু হওয়ার পর সড়ক ও রেল-দুই পথেই দক্ষিণ বাংলার মানুষ অল্প সময়ে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবে। দিনের পর দিন আর পণ্যবাহী ট্রাকগুলো ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় বসে থাকবে না। জীবন মৃত্যুর মুখোমুখি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে অপেক্ষায় থাকতে হবে না প্রিয়জনদের। ঝড়বৃষ্টিতে ফেরি বন্ধ থাকার কারণে আর থমকে থাকবে না সাধারণ মানুষের চলার পথ।
পদ্মা সেতুর কারণেই প্রথমবারের মতো পুরো দেশ একটি সমন্বিত যোগাযোগ কাঠামোতে চলে আসবে। পরিবর্তনের হাওয়া বইবে দক্ষিণ জনপদের গ্রাম বাংলায়। এ অঞ্চলের কৃষক, মৎস্যজীবী, তাঁতি, ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভোক্তার সমাবেশ যে রাজধানী ঢাকা, তার সঙ্গে অনায়াসে সংযুক্ত হতে পারবেন।
অন্যদিকে তারা রাজধানী থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে পারবেন তাদের গ্রামের ও আশপাশের এসএমই উদ্যোগগুলোর জন্য। এরই মধ্যে পদ্মা সেতু হবে শুনেই ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ উন্নত হতে শুরু করেছে। পদ্মার ওপাড় ও আশপাশের জেলা শহরে জমির দাম বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।
পদ্মা সেতুর দুই পাড়েই এক্সপ্রেসওয়ের পাশের জমির দাম তিন-চারগুণ বেড়েছে। নতুন নতুন ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কারখানা, আবাসন প্রকল্প, রিসোর্ট, বিশ্ববিদ্যালয়, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইটেক পার্ক, মানবসম্পদ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, রেস্টুরেন্ট ও নানা ধরনের এসএমই উদ্যোগ স্থাপনের হিড়িক পড়ে গেছে। খুলনা ও বরিশালে জাহাজ নির্মাণশিল্পের প্রসার ঘটতে শুরু করেছে। কুয়াকাটায় পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটছে দ্রুতগতিতে।
আগামী দিনে বিকাশের এ ধারা আরও বেগবান হবে। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে রেলের পাশাপাশি গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট অবকাঠামোও স্থাপিত হবে। ফলে কলকাতার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগের সময় প্রায় অর্ধেকে নেমে আসবে। এর প্রভাব বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপালের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।
পায়রা ও মংলা সমুদ্রবন্দরের পণ্যসেবার পরিমাণ বাড়বে। নতুন নতুন জাহাজ ভিড়বে। ইন্টারনেট সেবা সহজেই পেলে দক্ষিণাঞ্চলে ডিজিটাল ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। ফ্রিল্যান্সারদের সংখ্যা বাড়বে। গ্যাস ও বিদ্যুৎ সহজলভ্য হলে এ অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশও ঘটবে।
কৃষিসহ দক্ষিণাঞ্চলের সামগ্রিক উৎপাদন, সেবা, পর্যটন, শিল্প-বাণিজ্যেও বিনিয়োগ বাড়বে। বাড়বে কর্মসংস্থান। সেটা হলে এখন যে জলবায়ু চ্যালেঞ্জের শিকার অসংখ্য শ্রমজীবী মানুষ গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় এসে ঝুঁকিপূর্ণ অনানুষ্ঠানিক কাজকর্ম করতে বাধ্য হচ্ছে, তাদের সংখ্যা কমে আসবে। দক্ষিণ বাংলায় নতুন নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে। নতুন নতুন শহরও গড়ে উঠবে।
ঢাকার কাছে বলে পদ্মার ওপাড়ে ছোট-বড় নানা শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। দক্ষিণবাংলা হবে পর্যটনের এক উৎকৃষ্ট হাট। ছুটি পেলেই ঢাকা ও অন্যান্য নগরের বাসিন্দারা ছুটবেন দক্ষিণবাংলার প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক সৌন্দর্যের সন্ধানে। তারা যাবেন কুয়াকাটা, সুন্দরবন, ষাট গম্বুজ মসজিদ এবং টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি পরিদর্শনে, যাবেন পায়রা বন্দরে। পদ্মার চরগুলোয় গড়ে উঠবে নতুন নতুন রিসোর্ট ও পরিকল্পিত ব্যবসা-বাণিজ্যকেন্দ্র। সরকারও এরই মধ্যে নানা পরিকল্পনা নিচ্ছে পদ্মাপাড়ের পুরো এলাকাকে উন্নত করার লক্ষ্যে।
শোনা যাচ্ছে, পদ্মার চরাঞ্চলে অলিম্পিক ভিলেজ, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সিটি, হাইটেক পার্ক, আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, বিমানবন্দরসহ নানা উন্নয়ন প্রকল্পের কথা ভাবছে সরকার। পদ্মা সেতুর কাছেই দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে শেখ হাসিনা তাঁতপল্লি গড়ে উঠছে। এখানে থাকবে আধুনিক আবাসন, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ সব সুযোগ-সুবিধা। পদ্মা সেতুর আশপাশে গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রসার ঘটবে। খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালীতে শিপ-বিল্ডিং শিল্পের বিকাশ ঘটবে।
এক কথায় পদ্মা সেতু খুলে দিচ্ছে হাজারো সম্ভাবনার দুয়ার। সারাদেশের মানুষ আজ এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত। কিন্তু মন বেদনায় ভুগছেন তারা, যারা এর বিরোধিতায় ছিলেন। শুধু মনকষ্টই নয়, সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বাধাগ্রস্ত করতে নানামুখী অপতৎপরতা চালাচ্ছে তারা। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আর আওয়ামী লীগ সরকারের বিরোধিতা করতে গিয়ে যারা দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন সেই জ্ঞানপাপী, বিদেশি তাবেদার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধীদের ইতিহাস কোনো দিনও ক্ষমা করবে না।
লেখক: সহ-সভাপতি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য।
এইচআর/এএসএম/ফারুক