ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

হিন্দুর রাজকন্যা ও রাজত্ব একসাথে নিয়ে যাবে?

পুলক ঘটক | প্রকাশিত: ১০:১৮ এএম, ০৫ মে ২০২২

কারও সম্পত্তি বা অধিকার জোরপূর্বক গ্রাসকারিকে বলা হয় পরস্বাপহারী। সনাতন শাস্ত্রগ্রন্থে পরস্বাপহারীদের সবচেয়ে বড় অপরাধীদের তালিকায় রাখা হয়েছে এবং কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে। পরিবারে বা সমাজের নারীদের অধিকার হরণ করে ভোগ করা পরস্বাপহরণেরই নামান্তর, যা অপরাধ।

অপরাধীও তার আত্মপক্ষ সমর্থনে কিছু না কিছু যুক্তি খাড়া করে। হিন্দু মেয়েদের সম্পত্তিতে অধিকার দেয়ার বিপক্ষে যুক্তি দেখানো হচ্ছে যে, বাংলাদেশের হিন্দু মেয়েরা সাম্প্রদায়িক আঘাতের বড় টার্গেট। হিন্দু মেয়ে অপহরণ, জোরপূর্বক বিবাহ এবং ধর্মান্তর এখানে নিত্যনৈমেত্তিক ঘটনা। এ অবস্থায় হিন্দু মেয়েদের হাতে সম্পত্তি দিলে সম্পত্তি আত্মসাতের লোভে তদের বলপূর্বক কিংবা অন্যায়ভাবে প্রভাবিত করে ধর্মান্তরিত করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে। সম্পত্তি দিলে নাকি হিন্দুদের রাজকন্যা ও রাজত্ব একসাথে নিয়ে যাবে! এই কথাগুলো অত্যন্ত সংবেদনশীল; কিন্তু এই অজুহাতে নারীদের অধিকার হরণের চেষ্টা কতটা যৌক্তিক। দেশের নানাপ্রান্তে প্রেমঘটিত কারণে বা বলপূর্বক নারী অপহরেণের ঘটনা ঘটে না, তা নয়। কিন্তু তার সঙ্গে নারীর সম্পত্তিতে অধিকারের সম্পর্ক কি? আসুন আত্মবিশ্লেষণ ও আত্মমূল্যায়ন করি।

এক.
বর্তমানে বাংলাদেশের হিন্দুদের হাতে যতটুকু সম্পত্তি আছে তার পুরোটাই পুরুষদের হাতে আছে। পুরুষদের হাতে সম্পত্তি থাকায় তাদের ধর্মান্তরীত হওয়ার প্রবণতা কতটুকু? এর কোনো জরিপ নেই। তবে “নও মুসলিম” ইসলামী বক্তারা সবাই পুরুষ! হিন্দু পুরুষরা ধর্মান্তরিত হয় – এই অজুহাতে কি বাংলাদেশের সকল হিন্দু পুরুষের সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার পাওয়া বন্ধ করে দেওয়া যায়? কোনো একজন পুরুষ মুসলমান হয়েছে, সেই কারণে হিন্দু পুরুষদের কাউকেই সম্পত্তি দেওয়া যাবে না – এই যুক্তি কতটা গ্রহণযোগ্য? তাহলে নারীদের বেলায় আপনারা এরকম অমানবিক যুক্তি কিভাবে দেখান?

দুই.
পুরুষের হাতে বর্তমানে সকল সম্পদ আছে। কিন্তু তারা সেই সম্পদ রক্ষা করতে পারছে না কেন? পুরুষের এই অযোগ্যতার জন্য কি তাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া যায়? এখন পর্যন্ত হিন্দুদের যত সম্পদ বেহাত হয়ে গেছে সেগুলো পুরুষদের হাত দিয়ে হয়েছে, না নারীদের হাত দিয়ে হয়েছে? নিশ্চয় পুরুষদের হাত দিয়ে। তাহলে নারীকে সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন, পুরুষদের নয় কেন?

তিন.
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর গত ৫০ বছর যাবত যারা সম্পত্তি মুসলমানদের হাতে তুলে দিয়ে ক্রমাগত দেশান্তরী হচ্ছেন, তারা নারী না পুরুষ? সেটা ভারত হোক আর আমেরিকা হোক, বিদেশে বসতি গড়ার ৪/৫ বছর পর রাতের আঁধারে একদিন দেশে ফিরে কিছু টাকার বিনিময়ে গোপনে সম্পত্তি আরেকজনকে লিখে দিয়ে আবার পরের রাতে চম্পট দেওয়ার যত ঘটনা আছে, সেগুলো নারীরা ঘটাচ্ছে, না পুরুষরা? তাহলেতো পুরুষদের হাতে কোনো সম্পদ দেওয়া উচিত নয়! কি বলেন? নারীর অধিকার কেড়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনারা এধরনের মানবাধিকারবিরোধী যুক্তি দেন কিভাবে? সেই একই যুক্তি পুরুষের ক্ষেত্রে নয় কেন?

চার.
নারীর হাতে বর্তমানে সম্পত্তি নেই। তাতে নারীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলা, বলপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া – তাকে লাভ জেহাদ বলুন আর যাই বলুন – নানা উপায়ে ধর্মান্তরীতকরণ কি বন্ধ আছে, না চালু আছে?

পাঁচ.
পুরুষ ধর্মান্তরিত হলে আপনার চিন্তা নেই, শুধু নারীদের নিয়ে চিন্তা! সেজন্য নারীদের সম্পদ দেবেন না! কিন্তু টাকা পয়সাই কি একমাত্র সম্পদ? শিক্ষা কি সম্পদ নয়? আপনার মেয়েকে শিক্ষিত করলে তার উপর ভিন্নধর্মের যুবকদের নজর পড়তে পারে। তাই হিন্দু মেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ করে দেবেন নাকি?

ছয়.
পিতা-মাতার উত্তরাধিকার হিসেবে প্রাপ্ত সম্পদই একমাত্র সম্পদ নয়। অন্যভাবেও সম্পদ আসতে পারে। যেমন মেয়েরা চাকরি করলে বা টাকা-পয়সা উপার্জন করলে তাদের ব্যক্তিগত সম্পদ তৈরি হয়। ভিন্নধর্মের লোকজনের নজর থেকে বাঁচার জন্য হিন্দু মেয়েদের চাকরি করা বন্ধ করে দেবেন কিনা? হিন্দু মেয়েদের গার্মেন্টস কর্মী, এনজিও কর্মী, সরকারী কর্মকর্তা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, বিচারক, রাজনৈতিক নেতা, গণপ্রতিনিধি ইত্যাদি হতে দেবেন কিনা? তাতেও তো হিন্দু মেয়েদের সম্পদ তৈরি হয়!

সাত.
সংস্কৃতি মানুষকে উন্নত করে, সুন্দর করে ও মধুর করে। সুন্দর পোশাকও মানুষকে আকর্ষণীয় করে। আপনার মেয়েকে গান-বাজনা, আবৃত্তি, নৃত্যকলা, উন্নত বাচনভঙ্গি (সুন্দর করে কথা বলা) ইত্যাদি শেখাবেন কিনা? তাতে কিন্তু আপনার মেয়ে ভিন্নধর্মের ছেলেদের নজরে পড়তে পারে। নিরাপত্তার জন্য মেয়েদের কালো কাপড়ে মুড়িয়ে ঘরের মধ্যে বন্ধ করে রাখবেন কিনা? ধর্মান্তরের ভয়ে পৈত্রিক সম্পত্তিতে অধিকার না দিলে নারীকে সাংস্কৃতিক সম্পদ থেকেও বঞ্চিত করুন। এতে আপনার সম্প্রদায় সভ্য দুনিয়া থেকে অগ্রবর্তী হবে, নাকি পেছাবে?

আট.
ক্ষমতায়নের প্রশ্ন। নারীরা অবলা না থেকে সবলা হলে তাদেরকে প্রলুব্ধ করা বা তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্মান্তরিত করা কমবে না বাড়বে? আপনার কমন সেন্স কি বলে? নারীকে শিক্ষাহীন, সম্পদহীন করে রাখলে সে অসহায় ও দুর্বল থাকে, নাকি বেশি সবল থাকে? সেই দুর্বলকে পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব আপনারা পুরুষরা পকেটে করে নিয়ে বেড়াবেন? নারীদের নিজেদেরকে সবল হতে দেবেন না?

নয়.
নারীর আত্মোন্নতি ঘটলে বাংলাদেশের হিন্দুপরিবারগুলো এবং সামগ্রিকভাবে হিন্দু সমাজ উপকৃত হবে, নাকি ক্ষতিগ্রস্ত হবে? আপনার সম্প্রদায়ের অর্ধেক মানুষকে আপনি যখন দুর্বল ও আশ্রিত করে রেখেছেন, তখন তারা আপনার সম্প্রদায়ের জন্য বোঝা, না-কি শক্তি? এই নারীর অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন পুরোপুরি ঘটানো গেলে আপনার সম্প্রদায়ের শক্তি বাড়বে না কমবে?

দশ.
একবার বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, বাংলাদেশের হিন্দু পুরুষরা আসলেই কাপুরুষের প্রতিভূ কিনা? গত পঞ্চাশ বছর ধরে এই হিন্দুরা দেশে বীরত্বের নজির দেখিয়ে আসছে – নাকি “পলাবো না তো ভয় করব?”— নীতির উপর চলছে? তাহলে এই পুরুষদের সম্পত্তির দখলদার বা নিজেদেরকে শক্তির আধার ভেবে বড়াই করার কোনো অবকাশ আছে? হিন্দুদের পরিবারে, সমাজে এবং রাষ্ট্রে পুরুষ নেতৃত্বের বাড়তি কি অর্জন আছে? তাহলে এই পুরুষ কর্তৃত্বের প্রবণতা পরিহার করে নারীদের সমভাবে এগিয়ে নেওয়ার শুভচেষ্টাকে আপনারা বাধা দেন কেন?

এগারো.
সম্পত্তির অধিকার দিলে হিন্দু মেয়েরা সব চলে যাবে, ধর্মান্তরীত হয়ে যাবে – এ ধরনের কথা বলা নারীদের জন্য মারাত্মক অপমানজনক। আপনি আপনার মাকে বিশ্বাস করতে পারছেন না; বোনকে, স্ত্রীকে, কন্যা সন্তানকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। নারী হওয়ায় তাদের প্রতি আপনার হীনদৃষ্টি।

বারো.
সর্বোপরি ধর্মান্তরিত হলে মেয়েরা সম্পত্তি নিয়ে যাবে– এটা এক শ্রেণির মানুষের মিথ্যা প্রচারণা। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কেউ ধর্মান্তরিত হলে পৈত্রিক সম্পত্তিতে আর অধিকার থাকে না। ইংরেজরা Caste Disabilities Removal Act, 1850 নামে একটি আইন করেছিল, যাতে ধর্মান্তরিত হলেও সম্পত্তির অধিকার বজায় থাকে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঐ আইনটি রদ করা হয়েছে। ফলে এখন ধর্মান্তরিত হলে কেউ সম্পত্তি পায় না। নারীদের সম্পত্তি থাকলে সম্পদ হারানোর ভয়ে ধর্মান্তরীত হওয়া আরও কঠিন হবে। তাছাড়া আমরা হিন্দু আইন সংশোধনের মাধ্যমে সংসদে প্রণীত সুস্পষ্ট আইন চাচ্ছি যাতে ধর্মান্তরিত হলে কেউ পৈত্রিক সম্পত্তির অধিকার না পায়। নারী-পুরুষ সবার জন্যে এই বিধান চাই।

তেরো.
সনাতন ধর্ম অনুযায়ী আপনি নারীকে শক্তিরূপে উপাসনা করেন কি করেন না? নারীকে সৃষ্টি, স্থিতি এবং বিনাশের শক্তি হিসেবে – “সৃষ্টিস্থিতিবিনাশানাং শক্তিভূতে সনাতনি” – ইত্যাদি মন্ত্রে প্রণাম করেন কিনা? তাহলে সেই নারীকে দুর্বল ভাবা অথবা দুর্বল করে রাখা আপনার ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতিকূল কিনা? সকল পুরাণ বলছে, দেবশক্তি যখন বিপদে পরে তখন নারী শক্তিই আশ্রয় দাত্রী। ভগবান দুর্গা রূপে, রক্ষাকালী রুপে সবাইকে রক্ষা করেন। সর্ব শক্তির আধার সেই দেবি কি ধর্ম অনুযায়ী দুরবর্তী কল্পনার দেবী? চন্ডিতে পরিষ্কার ভাষায় বলা হয়েছে, তিনি ”সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা।” পৃথিবীর সকল নারীই সেই শক্তি স্বরুপা। তাহলে আপনি কি সনাতন ধর্মে বিশ্বাস করেন না? তাহলে নারী শক্তিকে দুর্বল হিসেবে কল্পনা করেন কিভাবে?

সেকারণেই বলি– শুধু উপহাস করার জন্য নয়, বাস্তবতার নিরীখেই বারবার বলি– হিন্দু পুরুষরা বরং দুই হাত তুলে আত্মসমর্পণ করুন। আপনাদের রক্ষার দায়িত্ব হিন্দু নারীদের উপর তুলে দিন। কারণ স্বাধীনতার গত অর্ধশতকে এবং তার আগেও প্রমাণ হয়েছে, বাংলার হিন্দু পুরুষরা ভীতু ও দুর্বল। এরা কোনও কিছুই রক্ষা করার সামর্থ্য রাখেনা। এরা নিজে বাঁচার জন্য অপরকে হায়েনার হাতে তুলে দেয়। এবার নারীদের হাতে দায়িত্ব দিন। নারীরা আপনাদের রক্ষা করতে পারবে। হিন্দু নারীর ক্ষমতায়ন দরকার; তাদেরকে শিক্ষায়, সংস্কৃতিতে, অর্থে এবং সম্পদে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে দিন। নারীকে আত্মপ্রত্যয়ী হতে দিন। অকর্মন্য কাপুরুষের দল বাগাড়াম্বর না করে ‘জয় মা’ বলে মাতৃশক্তির স্মরণ নিন। নারীকে রক্ষা করতে হবে না, নারীরাই আপনাদের রক্ষা করবে।

ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে, ধর্মান্তরিত হওয়ার মূল নেতৃত্বে আছে পুরুষরা। পুরুষরাই আগে ধর্মান্তরিত হয়েছে এবং বেশি সংখ্যায় হয়েছে। বিশেষ পরিস্থিতিতে কোনো নারী যদি ধর্মান্তরিত হয়, তাহলে সে একাই নিজের ভাগ্য নিয়ে চলে যায়। কিন্তু পুরুষ যখন ধর্মান্তরিত হয় তখন স্ত্রী, সন্তানসহ পুরোপরিবার নিয়ে যায়। পুরুষের হাতে সকল সম্পদ, নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব থাকায় এই অবস্থা হয়েছে। তবুও আপনারা পুরুষদের হাতে সম্পত্তির অধিকার রাখার বিষয়ে কোনো প্রশ্ন তোলেন না, লজ্জাবোধও হয় না।

৯০০ বছর আগে এই ভূখণ্ডে কোনো মুসলমান ছিল না। এখন তারা হয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং হিন্দুরা হয়েছে সংখ্যালঘু; কিভাবে হল? এতকাল যাবত মেয়েদের বঞ্চিত করে কতদূর এগিয়েছেন? নাকি পিছিয়েছেন? হিন্দু পুরুষের হাতে সব সম্পত্তি ছিল এবং এখনো আছে –নারীদের ঠকানো হয়েছে। পরিণতি কি? হিন্দুরা কতটুকু সফল? নারীদের অধিকার না দিলে ভবিষ্যতে একদম নিরাপদে থাকবেন তার গ্যারান্টি কি দিতে পারবেন?

পুরুষরা গোপনে সম্পত্তি বিক্রি করে রাতের আঁধারে আর কেউ পালাবেন না তার নিশ্চয়তা কি দিতে পারবেন? শুধু নারীকে –অর্থাৎ আপনার মাকে, সন্তানকে এবং বোনকে এভাবে বঞ্চিত করবেন আর কতকাল? উন্নত ও দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গি না থাকলে সমাজকে এগিয়ে নেওয়া যায় না।

হিন্দু সমাজকে শক্তিশালী করতে হলে হিন্দু নারীর ক্ষমতায়ন দরকার। নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য পুরাতন আইনগুলো সংশোধন হওয়া উচিত। সব আইনের সংশোধন দরকার। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সকল পারিবারিক আইন একদম ঢেলে সাজানো দরকার। অভিন্ন সিভিল কোড হওয়া দরকার।

আধুনিক উন্নতবিশ্বের আদলে নারীদের পূর্ণাঙ্গ অধিকার ও ক্ষমতা দিয়ে আইনগুলো যুগোপযোগী করা দরকার। তাতে দেশ এগোবে। কিন্তু মুসলিম মোল্লাতন্ত্র যদি তাতে রাজি না হয় – তারা যদি দেড় হাজার বছর পেছনে পড়ে থাকাকেই ভাল মনে করে, সেজন্য হিন্দুরা কেন নিজ সম্প্রদায়কে এগিয়ে নেবে না? তাছাড়া মুসলমান সম্প্রদায়ের নারীরা পুরুষের অর্ধেক হলেও সম্পত্তিতে অধিকার পায়। কিন্তু হিন্দু ও বৌদ্ধ নারীরা যে একদম অসহায়; অধিকারহীনা! তাই হিন্দু উত্তরাধিকার আইন অবিলম্বে সংশোধন করা দরকার। এই একটি আইন সংশোধন করে নারীকে সমঅধিকার দেয়া হলে হিন্দু নারীদের ব্যাপক অগ্রগতি হবে।

নারীর পারিবারিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ঘটবে। এতে হিন্দু সমাজও সমৃদ্ধ এবং শক্তিশালী হবে। নারীর উপর অবিচার কমবে এবং নারী অপহরণ বা নারীদখলের সামর্থ্য কমে যাবে। কারণ ক্ষমতাধর আত্মমর্যাদাশীল নারীকে বোকা বানানো কঠিন হবে। দয়া করে নারীদের আর ‘অবলা’ করে রাখবেন না। ব্যক্তিগত স্বার্থে অর্থাৎ বোনেরা সম্পত্তির ভাগ পাবে এই ভয়ে কেউ অনর্থক বিরোধিতা করবেন না। কারণ আপনার সম্পত্তি দখলে রাখার লোভ বা ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে পুরো সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না। এটা মেনে নেওয়া যায় না। হিন্দু আইন সংশোধন করতে হবে। লিঙ্গপরিচয় নির্বিশেষে সবাই মানুষ। সমান উত্তরাধিকার পাওয়া সকলের জন্মগত অধিকার।

লেখক: সাংবাদিক, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদ।
[email protected]

এইচআর/জেআইএম