ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

ওমিক্রন ভীতি বনাম সতর্কতা

ড. মো. হাসিনুর রহমান খান | প্রকাশিত: ১০:৩৭ এএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২২

গত ২৬ শে নভেম্বর ২০২১ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওমিক্রনকে ভেরিএন্ড অফ কন্সার্ন বলে ঘোষণা দেওয়ার সময় এ যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি মিউটেশন (৫০ টিরও বেশি) সমৃদ্ধ সম্ভাব্য এক ভয়ঙ্কর করোনাভাইরাস এর ধরন বলে সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন| সবচেয়ে দ্রুত ছড়াতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে আক্রমণ করতে পারে এমন দুটি বৈশিষ্ট্যের কথাই তখন কেবলমাত্র জানা ছিল ল্যাব টেস্ট এর কল্যাণে| অন্য সব বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে অন্ধকারে থাকায় সারা বিশ্ব এক ধরনের চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে পড়ে গিয়েছিল|

অন্যসব বৈশিষ্ট্য জানবার জন্য অপেক্ষা ছাড়াই জানা দুটি বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে উন্নত বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ নভেম্বরের শেষ দিক হতে তাৎক্ষণিক ভাবে ভ্যাকসিন কার্যক্রমকে দারুণভাবে গুরুত্ব এবং প্রসারের জন্য ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করেছিল| অস্বাভাবিক শক্তিশালী সংক্রমণের অধিকারী ওমিক্রন এর বিস্তার ঠেকানো না গেলেও যেন মৃত্যু ঠেকানো যায় এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রথম কিংবা দ্বিতীয় কিংবা প্রথম বুস্টার ডোজ না নেওয়া সকল ব্যক্তিদেরকে ভ্যাকসিন এর আওতায় নিয়ে এসে স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল| একই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ইসরাইল দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ দেওয়াও শুরু করেছিল|

ওমিক্রন এর খবর প্রচার এর পরে যে প্রশ্নগুলির উত্তর জানা মানব জাতির জন্য অত্যন্ত জরুরি ছিল তা হল ডেল্টা ভেরিয়েন্ট এর তুলনায় ওমিক্রন কতটা আলাদা, ওমিক্রন এর সংক্রমণ এবং বিস্তার ক্ষমতা কতটুকু (আর-নট বা প্রজনন সংখ্যা কতটুকু), নতুন কোন উপসর্গ দেখা যায় কিনা, দ্রুত সংক্রমণ এবং ছড়াতে পারলেও মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায় কিনা কিংবা অতিমাত্রায় গুরুতর অসুস্থ করে ফেলে কিনা, হসপিটালে বা আইসিইউ তে ভর্তির হার বাড়ায় কিনা, টিকার কারণে অথবা আক্রান্ত হওয়ার কারণে অর্জিত প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ডিঙিয়ে আবারও মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে কিনা অর্থাৎ আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা অক্ষুণ্ণ থাকে কিনা বা লোপ পেলে কতটুকু পাবে, প্রথম বা দ্বিতীয় ডোজ কিংবা বুস্টার ডোজ টিকা ওমিক্রনকে কতটুকু প্রতিরোধ করতে পারবে, একাধিক রোগবালাই থাকার পাশাপাশি অন্যান্য বায়োলজিক্যাল কিংবা ডেমোগ্রাফিক ফ্যাক্টর এর কারণে বাড়তি সংক্রমণ এবং মৃত্যুঝুঁকি সৃষ্টি করছে কিনা, কত দ্রুত একটি দেশ থেকে অন্য দেশে ছড়িয়ে পরতে পারে? ওমিক্রন এ আক্রান্ত হলে দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য ক্ষতি বা ঝুঁকি কেমন হবে?

এসব প্রশ্নের অধিকাংশ এর উত্তর এখন আমাদের একরকম জানা, পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত এর ভিত্তিতে এর বাইরেরও অনেক প্রশ্নের উত্তরও এখন জানা| দৈনিক বৈশ্বিক করোনার শনাক্তের চিত্রের দিকে তাকালে দেখা যাচ্ছে ডেল্টা ভাইরাসের সময়ে সর্বোচ্চ দৈনিক ৯.৪ লক্ষ এর বিপরীতে গত দুই মাসে ওমিক্রন এর সময়ে দৈনিক সর্বোচ্চ চার গুণ বেশি শনাক্ত হয়েছে (প্রায় ৩৭ লক্ষ)|

দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ইতালিসহ অন্যান্য দেশে ওমিক্রণ এর ঢেউয়ের সর্বোচ্চ শেখর ইতিমধ্যে পার করেছে| দৈনিক সর্বোচ্চ শনাক্তের সংখ্যা এইসব দেশেও দেখা গেছে ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রন এর সময়ে চার বা পাঁচ গুণ বেশি ধরা পড়েছে| তার মানে ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রণ চার বা পাঁচ গুণ বেশি ছড়াতে পারে বিজ্ঞানীদের এমন ধারণার সপক্ষে যুক্তি মিলছে| শনাক্ত এর ধরন এবং সক্ষমতার ভিন্নতা থাকায় দেশভেদে এর ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে, যেমন ইজরায়েল এবং ফ্রান্সে এটি ৭ বা ৮ গুণ|

কিন্তু দৈনিক বৈশ্বিক মৃত্যুর সংখ্যার চিত্র বলছে এখন পর্যন্ত ওমিক্রন সময়ের দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাগুলি ডেল্টা ভাইরাসের সময়ে দৈনিক মৃত্যু সংখ্যার প্রায় অর্ধেক| তার মানে শনাক্তের বিপরীতে মৃত্যুর হার ডেল্টার সময়ের তুলনায় ওমিক্রন সময়ে প্রায় ৮ গুণ কম| বৈশ্বিক তথ্য পর্যালোচনায় এমনটি দেখা যাচ্ছে| শনাক্তের সংখ্যা এবং মৃত্যুর হার একইভাবে অনুমিত হলে বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ওমিক্রন এর বর্তমান ঢেউয়ের সময়ে সর্বোচ্চ দৈনিক শনাক্ত ৬৫ হাজার এবং মৃত্যু ১৩০ অতিক্রম করতে পারে| শীতকালে সর্দি কাশি গলাব্যথা ভেবে আক্রান্ত হলেও মানুষের টেস্ট করবার অনীহা থাকায় এবং পাশাপাশি এডহক ভিত্তিতে টেস্ট এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দৈনিক সর্বোচ্চ শনাক্তের সংখ্যা এমনটি নাও মিলতে পারে| বর্তমানে কর্মক্ষেত্র এবং আশেপাশের পরিচিতজনরা যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছে তাতে করে রিপোর্টেড শনাক্তের সংখ্যার সাথে এর যথার্থতার কোন প্রমাণ মিলছে না| এছাড়াও ১৮ জানুয়ারি নেচার জার্নালে প্রকাশিত একটি খবরে বলা হচ্ছে বৈশ্বিক করোনা মহামারির প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা রিপোর্টকৃত মৃত্যুর সংখ্যার দ্বিগুণ কিংবা তিনগুণও হতে পারে বলে জানিয়েছে|

দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যেই পৃথিবীর ২০০ টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে এবং অধিকাংশ দেশেই ওমিক্রন সবচেয়ে ডমিনেন্ট ভেরিয়েন্ট হিসেবে দেখা যাচ্ছে| জিনোম সিকোয়েন্স সংরক্ষণের সাইট GISAID বলছে বহু দেশে ডেল্টা ভেরিয়েন্টকে প্রায় পুরোপুরিভাবে প্রতিস্থাপিত করেছে ওমিক্রন | জানুয়ারি ২৫ তারিখ পর্যন্ত ১১৭ টি দেশ জিনোম সিকোয়েন্স জমা দিয়েছে| গত ৪ সপ্তাহ জমা পড়া জিনোম সিকুয়েন্স এর মধ্যে দেখা যাচ্ছে শতভাগ ওমিক্রন ভেরিএন্ড-এর প্রাদুর্ভাব এমন দেশের সংখ্যা ১৩ টি, ৯০ শতাংশেরও বেশি প্রাদুর্ভাব হয়েছে এমন দেশের সংখ্যা ৩০ টি, এবং ৫০ শতাংশেরও বেশি প্রাদুর্ভাব হয়েছে এমন দেশের সংখ্যা ৭২ টি| বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ওমিক্রন ভেরিএন্ড-এর হার ৬৭ শতাংশ|

গত দুই সপ্তাহের সকল জেনোম সিকোয়েন্সিং পর্যালোচনা করলে দেখা যায় বৈশ্বিকভাবে ৯১% এরও বেশি ওমিক্রন ভেরিএন্ড| ওমিক্রন এ আক্রান্তদেরকে কখনই সঠিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব নয় যদি না শক্তিশালী জেনোম সার্ভিলেন্স সিস্টেম বিদ্যমান না থাকে| এর অভাবে গরীব এবং উন্নয়নশীল দেশগুলি কখনোই ওমিক্রন -এ আক্রান্তদের প্রকৃত সংখ্যা পরিমাপ করতে পারবে না| কমসংখ্যক নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং পরীক্ষায় পপুলেশন এর বৈশিষ্ট্য ঠিকমতো জানা যায় না| আবার পরিপূর্ণ ওমিক্রন এর বিস্তার হলে তখন কম নমুনাতেই সেটা ধরা পড়বে এই পদ্ধতি গ্রহণ করাই তাদের জন্য শ্রেয় মনে হচ্ছে|

অন্যদিকে জিনোম সিকোয়েন্সিং এর ব্যাপক সক্ষমতা থাকার কারণে আমেরিকাসহ ইউরোপের দেশ গুলিতে ওমিক্রন এর ব্যাপক উপস্থিতি প্রকাশ পাচ্ছে, সে বিষয়ে এক ধরনের ভ্রান্ত নেতিবাচক ধারণারও সৃষ্টি হচ্ছে যে ওই দেশগুলিতে বেশি বেশি মানুষ ওমিক্রন এ আক্রান্ত হচ্ছে| যুক্তরাজ্যে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি হারে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হচ্ছে, যার অধিকাংশই করছে স্বাস্থ্যখাতের সাথে যুক্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানিগুলো এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো| জিনোম সিকোয়েন্সিং করে ১১ ই ডিসেম্বর আমরাও জানতে পারি যে জিম্বাবুয়ে ফেরত দুইজন নারী ক্রিকেটার ওমিক্রন এ আক্রান্ত হয়েছে| এরপরে এখন পর্যন্ত অফিশিয়ালি ৬৯ জন ওমিক্রন এ আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে|

গত ২৪ শে ডিসেম্বর ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল-এ প্রকাশিত ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সির ছোট একটি গবেষণার খবর থেকে জানা যায় যে ডেল্টা ভেরিয়েন্ট-এর তুলনায় ওমিক্রন এ আক্রান্ত হলে ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ কম হাসপাতালে ভর্তি ঘটতে পারে, ৩১ থেকে ৪৫ শতাংশ কম ইমারজেন্সি সেবা (আই সি ইউ ইত্যাদি) নিতে হতে পারে| অন্য আরেকটি গবেষণায় জানা যাচ্ছে বুস্টার অংশগ্রহণকারীরা ওমিক্রন -এ আক্রান্ত হলে মারাত্মক অসুস্থতা হওয়ার মাত্রা ৮৫% কমে যায়, যা ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আরো বেশি ৯০% পর্যন্ত কমে যায়|

ভ্যাকসিন দেওয়া থাকলে হাসপাতালে ভর্তির হার আশাতীতভাবে কমে যায়| ওমিক্রন এ আক্রান্তদের মধ্যে যাদের মৃত্যু ঘটছে তাদের বিরাট অংশ দেখা গেছে কোন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেনি| গবেষণায় দেখা গেছে ওমিক্রন এ আক্রান্ত হলে ভ্যাকসিন অগ্রহণকারীদের মধ্যে মৃত্যুর ঝুঁকি ১৩ গুণ বেশি থাকে ভ্যাকসিন গ্রহণকারীদের তুলনায়| ওমিক্রন বিশেষ মিটেশনের বৈশিষ্ট্যের কারণে ভ্যাকসিন গ্রহণ বা অগ্রহণকারীর প্রত্যেককেই সমান ভাবে আক্রমণ করতে পারে|

দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এর খাদিজা খানসহ আরো ৩২ জন গবেষক দক্ষিণ আফ্রিকার ওমিক্রন এ আক্রান্ত রোগীদের ওপর পরিচালিত গবেষণা ফলাফল ডিসেম্বরের শেষে প্রি-প্রিন্ট আকারে প্রকাশিত হয়, সেখানে দেখা যায় কেউ ওমিক্রন এ আক্রান্ত হলে ১৪ দিনের মাথায় ১৪ গুণ বেশি এন্টিবডি তৈরি হয়ে ওমিক্রনে পুনরায় আক্রান্ত হওয়ার বিরুদ্ধে শক্ত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে ফলে পুনরায় ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি একেবারেই থাকে না| শুধু তাই নয় কেউ ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে পাশাপাশি ডেল্টার বিরুদ্ধেও ডেল্টার তুলনায় ৪.৪ গুণ বেশি ইমিউনিটি দিতে পারে যেটাকে ক্রস ইমিউনিটি বলা হয়| এই ক্রস ইমিউনিটি দেওয়ার সক্ষমতা আর অন্য কোন করোনাভাইরাস ভেরিআন্ট এর নেই| বিশেষ এই গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার ফলাফল নির্দেশ করে অতি দ্রুত সারা বিশ্বেই একমাত্র ভেরিয়েন্ট হিসেবে ওমিক্রন আবির্ভূত হবে যদি না আরো অন্য কোন ভয়ঙ্কর ভেরিয়েন্ট সহসাই আসে- এমনটি ভাবা হচ্ছে|

ডেল্টার বিস্তার রোধে অন্যতম হাতিয়ার হওয়ায় এবং ডেল্টার তুলনায় অনেক কম প্যাথোজেনিক বা কম স্বাস্থ্যঝুঁকির হওয়ায় ওমিক্রন প্যানডেমিক খুব দ্রুত এন্ডেমিক (সাধারণ সিজনাল রোগ যা আগে থেকেই আচ করা যায়) এ রূপান্তরিত হবে এমনটি ভাবা হচ্ছে| ইতিমধ্যে এর রূপান্তর চলছে বলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন| ওমিক্রন এর ইনকিউবেশন পিরিয়ড কম| দেশগুলি দ্রুত ওমিক্রন এ আক্রান্ত হচ্ছে এবং দ্রুত ঢেউ এর পিক চলে আসছে| দক্ষিণ আফ্রিকায় দেড় মাসের মধ্যেই পিক এসে চলে গেছে, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের অন্য দেশগুলোর ক্ষেত্রেও স্পষ্টতই এমনটি ঘটছে বলে মনে হচ্ছে|

একই সূত্র মতে বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ফেব্রুয়ারির শেষে পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল হবে বলে আশা করা যাচ্ছে| হয়তো স্বাস্থ্যবিধি না মানলে এরমধ্যে আমরা প্রত্যেকেই ওমিক্রন এ এক্সপোজড হতে বাধ্য হব, ওমিক্রনকে এড়াতে পারবে না| তবে ওমিক্রন এ আক্রান্ত হলে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি বা ক্ষতির ক্ষেত্রগুলি কেমন হচ্ছে বা হবে, ডেল্টার মত কিনা এ বিষয়ে এখনও পর্যাপ্ত তথ্য জানা যায়নি এবং অনেকটা বাড়তি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি প্রত্যেকে| ফলে পরিবারের বয়স্ক এবং অন্যান্য রোগের আক্রান্ত সদস্যদের বাড়তি ঝুঁকির মধ্যে না ফেলার জন্য প্রত্যেকে স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মানতে হবে এবং টিকা গ্রহণ করতে হবে|

ওমিক্রন এর ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি অথবা ইমারজেন্সি সেবা গ্রহণের হার ডেল্টার তুলনায় অনেক কম হলেও ওমিক্রন মহামারি ডেল্টার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি হলে বিদ্যমান স্বাস্থ্যসেবার উপর উপচে পড়া চাপ সৃষ্টি হবে এবং তা ভেঙে পড়তে পারে| ওমিক্রন একসাথে যেন অনেক লোককে আক্রান্ত করতে না পারে সে ব্যাপারে প্রকৃত কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে, স্বাস্থ্য সেবার সবকিছুই প্রস্তুত রাখতে হবে|

করোনার সকল হাসপাতাল, নার্স, ডাক্তার, বয়, অক্সিজেন সাপ্লাই, আইসিইউ বেড, স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রীর পর্যাপ্ততা নিশ্চিতের পাশাপাশি নার্স, ডাক্তার, বয়রা বেশি বেশি আক্রান্ত হলে সংকট মোকাবেলার বিকল্প প্রস্তুতিও রাখতে হবে| টেস্টের সংখ্যা অতি দ্রুত বাড়াতে হবে| জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের জনসম্পৃক্ততা যেকোনো দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী প্রমাণ হওয়ায় এই অস্ত্রটির স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং টিকা গ্রহণে মানুষদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হবে| মানুষদের মধ্যে টিকা দিয়ে করোনাভাইরাস এর বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যতটা সম্ভব বাড়ানো যায় সে জন্য আগামী এক মাসে টিকার ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চালাতে হবে এবং ৮ থেকে ১০ কোটি টিকা প্রদান করতে হবে|

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, ফলিত পরিসংখ্যান আই এস আর টি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সভাপতি, আই এস আর টি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন নির্বাহী কমিটি।

এইচআর/এমএস