স্কুলগামী শিশুদের মানসিক বিকাশ ও পরিচর্যা
ডা. সেলিনা সুলতানা
বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল। কোভিড-১৯ এর কারণে স্কুল বন্ধের ক্ষেত্রে বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম অবস্থানে ছিল এ দেশ। করোনা মহামারিতে শিশুদের শিক্ষা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৮ মাস বন্ধের পর দেশে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয়েছে। দেশের শিশু শিক্ষার্থীদের একটি অংশ শিক্ষাজীবনের গুরুত্বপূর্ণ ১৮ মাসে তেমন কিছু শিখতে পারেনি। বাংলাদেশের প্রায় ৪ মিলিয়নের মতো শিশু শিক্ষার্থী রয়েছে যারা প্রথমবারের মতো স্কুলে যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় ছিল।
২০২০ সালে যারা ভর্তি হয়েছিল, তারা শিক্ষা ও স্কুলের ব্যাপারটি বোঝার আগেই স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। শিশুরা দীর্ঘ সময় ধরে ঘরবন্দি থাকায় শারীরিক, মানসিক, সামাজিক সমস্যায় ভুগেছে। শিক্ষার ক্ষতির সাথে মানসিক, সাংসারিক, শারীরিক ও পারিপার্শ্বিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে আমাদের শিশুরা। সারাক্ষণ মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বন্ধুদের থেকে দূরে থাকা, বারবার হাত সানিটাইজ করে থাকা, শিশুদের জন্য একটু কষ্টকর হয়ে গেছে। এ পরিবর্তিত পরিবেশে স্কুলগামী শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।
সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে প্রতিদিন ক্লাসে উপস্থিত থাকবে পঞ্চম শ্রেণি, এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষার্থীরা, বাকি শিক্ষার্থীরা আপাতত সপ্তাহে একবার শারীরিকভাবে ক্লাসে উপস্থিত হবে। ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকারের স্কুল আবার খোলার সিদ্ধান্তকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছে। করোনা মহামারির কারণে ৫৪৪ দিন পর দেশে স্কুল খুলেছে। একটা অংশ হয়তো স্কুলে যেতে অনীহা প্রকাশ করেছে, তবে অনেকেই উৎসাহ নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। ২০২০ সালে যারা ভর্তি হয়েছিল, শিক্ষা ও স্কুলের ব্যাপারটি বোঝার আগেই স্কুল বন্ধ হয়ে যায়, আশা করা যায় তারা বেশ উপভোগ করছে বিষয়টি।
স্কুল বন্ধ থাকার কারণে অনেক শিশুর, বিশেষ করে বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে থাকা ছোট শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষতি হয়েছে, মানসিক চাপ বেড়েছে। নিম্নআয়ের পরিবারের শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থার সুবিধা ও শিক্ষা সরঞ্জামের ব্যবহারের সুযোগ ছিল না খুব একটা। তারাই মূলত ঝরে পড়েছে। বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রমের মত অভিশপ্ত জীবন তাদেরকে গ্রাস করেছে। গ্রামের শিশু শিক্ষার্থীদেরকে বড় অংশের পক্ষে টেলিভিশন বা অনলাইনে শিক্ষাগ্রহণ সম্ভব হয়নি। আবার ডিভাইসের অভাবও ছিল অনেকের ক্ষেত্রে। দেশের টেলিকম অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন এর ডাটা অনুসারে বাংলাদেশের ১৬৯ মিলিয়ন জনসংখ্যার মাত্র ৪১% এর কাছে স্মার্টফোন আছে যার অর্থ লক্ষ লক্ষ শিশু অনলাইন ক্লাস এক্সেস করতে পারেনি। এমনকি স্মার্টফোন থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অনেক গ্রামীণ জেলার শিক্ষার্থীদের কাছে ই-লার্নিং এর জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চগতির ইন্টারনেট একসেস ছিল না।
এছাড়া অপুষ্টি ও শিশুদের শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে শিক্ষার পাশাপাশি স্কুলে আসা-যাওয়া, শিক্ষকের সঙ্গে সহজ হওয়া বা অন্যান্য নিয়ম-কানুনের সঙ্গে পরিচয়, বন্ধুদের সাথে আনন্দ করা, খেলাধুলা করা, সর্বোপরি ঠিকমতো বিকাশ হওয়ার সুযোগ হয়নি।
করোনা মহামারিতে শিশুরা পরিবারের আতঙ্ক দেখেছে, স্বাস্থ্যবিধি কড়াভাবে মেনে চলতে লক্ষ্য করেছে। তারাও যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সে ব্যাপারে পরিবারের হুঁশিয়ারি শুনেছে সবসময়। টিভি বা অন্য মিডিয়াতে সমাজ, দেশ ও বিশ্বের উদ্বেগজনক পরিস্থিতিও দেখেছে, মৃত্যুও দেখেছে। এসব কিছু তাদের কোমলমতি মনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তারা বুঝে গেছে, অসাবধান হলেই সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি আছে। তারা কোভিড ফোবিয়ায় ভুগেছে। তাই তারা স্কুলে যেতে অনীহা দেখাচ্ছে।
শিশু করোনা সংক্রমণের ভয়ে ভীত, তাই অস্থির না হয়ে, একটু ধৈর্য ধরে আশ্বস্ত করতে পারলে তারা খুশিমনে আবার স্কুলে যাবে। তাদেরকে বোঝাতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুলে গেলে ও ক্লাস করলে সংক্রমণের কোন ভয় নেই। মাস্কপরলে, সহপাঠী-শিক্ষক থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকলে সংক্রমণের ঝুঁকি বহুলাংশে কমে যাবে। সাবান পানিতে হাত ধোয়ার গুরুত্বও মনে করিয়ে দিতে হবে।
স্কুলগামী শিশুদের বোঝাতে হবে অনেকে ইতিমধ্যে করোনার টিকা নিয়েছে, এখন আর আগের মতো সংক্রমণের ঝুঁকি নেই। অনেকদিন পর বন্ধুবান্ধব ও শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা হওয়াতে ভালো লাগবে, মন খুশি হবে। এই দীর্ঘসময়ে তারা কেমন ছিলেন তা জানা যাবে স্কুল থেকেই। স্কুলের ক্লাস আর অনলাইন ক্লাসের পার্থক্যটাও বোঝাতে হবে, স্কুলের ক্লাসে বেশিকিছু জানা যাবে, বন্ধুদের সাথে গল্প করা যাবে, একসাথে টিফিন করা যাবে, খেলাধুলা করা যাবে, অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
স্কুলে নিরাপদব্যবস্থা জোরদার করে শিশুদের মধ্যে কোভিডের সংক্রমণ রোধের চেষ্টা করতে হবে। শিশুরা যাতে নিরাপদ থাকে এবং স্কুলগুলো সংক্রমণের কেন্দ্র না হয়ে ওঠে, তা নিশ্চিত করার জন্য শক্তিশালী সংক্রমণ প্রশমন ও নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। নজরদারির মাধ্যমে রোগ নির্ণয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য স্কুলের ভেতরেই করোনা পরীক্ষার কিটের ব্যবস্থা রাখতে হবে। স্কুলে সংক্রমণের হার কম থাকবে, যদি সেখানে যথাযথ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। যেমন-মাস্ক পরা, যথাযথ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, নজরদারি, পরীক্ষা নিশ্চিত করা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, সাবান দিয়ে হাত ধোয়া এবং উপযুক্ত নিরাপদ পরিবেশ অর্থাৎ নির্দিষ্ট দূরত্বে শিশুদের ক্লাসরুমে বসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ যেমন-হাঁচি-কাশি দেওয়ার নিয়ম, হাত ধোয়ার নিয়ম, বিশেষ করে সবার স্পর্শ লাগে এমন কিছু ছুঁলেই হাত ধুতে হবে যেমন- ডেস্ক, দরজার হাতল, ওয়াশরুম ইত্যাদি। একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরা যাবে না, করমর্দন বা হ্যান্ডশেক করা যাবে না, টিফিন শেয়ারিং ও হাতাহাতি তো নয়ই। স্কুলব্যাগে বই-খাতা, কলম, পেনসিল, রং পেনসিল, টিফিন বক্স বা পানির বোতলের সঙ্গে টিস্যু পেপার বা পরিষ্কার রুমাল, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ছোট বোতল রাখতে হবে। স্কুলে যাওয়ার সময় ভালো মানের মাস্ক পরাতে হবে শিশুকে।
সংক্রমণ প্রতিরোধে এটাই কার্যকরী বলে বিবেচিত। কিন্তু এটা এত সোজা নয়। শিশুদের মানসিকতা ও চলাফেরায়, মাস্ক একটা বড় বাধা, ভীতি ও অস্বস্তি। শুধু শিশুদেরকে বললে ভুল হবে, আমরা বড়রাও এটার সাথে অভ্যস্ত নই। দীর্ঘ সময় মাস্ক পরে থাকা শিশুটির জন্য কষ্টকরও বটে। এটি অভ্যাসের ব্যাপার। তাই আগে থেকেই শিশুকে প্রস্তুত করতে হবে কারণ সরকার বলেছেন জানুয়ারি থেকে ক্লাসের দিনের সংখ্যাও বাড়তে পারে।
স্কুলের মিড-ডে মিল শিশু স্বাস্থ্য ও পুষ্টিতে যেমন ভূমিকা পালন করবে, তেমনিই পারিবারিক সচ্ছলতার দিককেও শক্তিশালী করবে। শিশুদের জন্য টিকা দেয়া শুরু হয়েছে, দীর্ঘমেয়াদি রোগাক্রান্ত শিশুদের, ফুসফুসের রোগ এবং রোগ প্রতিরোধ কম বা ঘাটতির মতো রোগে আক্রান্ত শিশুদের, গুরুতর অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের ও বিশেষ শিশুদের অগ্রাধিকার দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
কোনো শিশু স্কুলে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত আইসোলেশনে নিতে হবে। প্রতিটি স্কুলে সিক রুম বা আলাদা আইসোলেশন রুম থাকা বাঞ্ছনীয়। শিশু অসুস্থ হলে কিছুতেই স্কুলে যাওয়া যাবে না। কেউ অসুস্থবোধ করলে তাকে স্কুলে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। স্থানীয় করোনা পরিসংখ্যান সতর্কভাবে পর্যালোচনা করতে হবে। স্কুলগুলো খোলা রাখার সিদ্ধান্তটি প্রতি ১৫ দিন পরপর পর্যালোচনা করতে হবে সরকারকে। শিক্ষক,কর্মী, সহায়ক কর্মী, গাড়ি চালক, পরিচালক ও দর্শনার্থীসহ স্কুলে কর্মরত এবং ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত সব প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের অন্তত একটি ডোজ প্রদানের কার্যক্রমের আওতায় আনতে হবে।
আমরা কখনোই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অবহেলা করতে পারি না। তাই স্কুল খুলে দেওয়ার পদক্ষেপ অবশ্যই সঠিক হয়েছে। তাছাড়া পিছিয়ে পড়া শিশুদের ক্লাসে ফিরিয়ে আনা ও জরুরি। পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ঝুঁকি হ্রাস করা যেতে পারে। স্কুল থেকে ফেরার পর স্কুলের জামা-কাপড়, ব্যাগ, টিফিন বক্স, বোতল সবই ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে ও শিশুকে ভালো করে গোসল করিয়ে নিতে হবে। স্কুলে পরে যাওয়া জুতা ঘরে ঢোকানো যাবে না।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুনির্দিষ্ট কিছু ব্যবস্থা নিয়ে এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সব শিক্ষক, কর্মকর্তাকে টিকা দিয়ে ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব। নভেম্বর, ২০২১ থেকে ঢাকার কেন্দ্রগুলোতে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী স্কুলগামী শিশুদের টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ৫-১১ বছর বয়সের শিশুরাও করোনাভাইরাসের টিকা পাবে। এ বয়সের শিশুদের জন্য ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি কোভিড-১৯ টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)।
টিকার বাইরে থাকা লাখ লাখ শিশু-কিশোরকে এ কর্মসূচির আওতায় আনতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। দেশে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের পরীক্ষামূলকভাবে করোনার টিকা দেয়া হয়েছে অক্টোবর থেকে। মানিকগঞ্জের কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের এ টিকা দেওয়া হয়েছে। শিশুরা পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজারের টিকা। তাদের টিকা দেওয়ার পর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না, তা ১০ থেকে ১৪ দিন পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।
গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ১২ বছর বা তার বেশি বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়ার অনুমোদন দেয়। বিবিসির প্রতিবেদনে এসেছে যে, ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি (ইএমএ) গত মে মাসেই শিশুদের ফাইজারের টিকা দেওয়ার অনুমোদন দেয়। এরপর ডেনমার্ক, স্পেন, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু করে। দীর্ঘসময় পর স্কুল খোলাতে শিশুরা হয়তো বেশি উৎসাহে বা অভিভাবকের আদেশে স্কুলে যাবে। কিন্তু স্কুলের সময়টা কেমন কেটেছে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। শিশুকে একটু লক্ষ্য করলে সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। স্কুল থেকে ফেরার পর তাদের শারীরিক স্বাস্থ্য, মানসিক অবস্থা, আবেগ ও আচার-আচরণ লক্ষ্য করতে হবে। যা দেখে বোঝা যাবে শিশুর বাড়তি সাপোর্টের প্রয়োজন আছে।
শিশুটির মনমরাভাব, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মনে হওয়া, রাগান্বিত মনে হওয়া, উৎকণ্ঠা, অতিরিক্ত জিদ করা, দুর্বলতা,অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলতে উৎসাহ না পাওয়া, হোমওয়ার্ক করতে না চাওয়া, অসংলগ্ন কথাবার্তা, ভালোমত না ঘুমানো, খাবার খেতে না চাওয়া, শখ বা বন্ধুর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলা। তাদেরকে যত্নসহকারে ধৈর্য নিয়ে জানাতে হবে- অনেকদিন পর স্কুলে গেলে সব সময় যে ভালো লাগবে তা নয়, কিছু কারণে মন খারাপও হতে পারে, এটাই স্বাভাবিক। তাদের মেজাজ অনুসারে জিজ্ঞেস করে জেনে নিতে হবে- কেন মন খারাপ হয়েছে? সে বলতে পারে যে, কাছে আসাতে বন্ধু খারাপ ব্যবহার করেছে। তখন তার রাগ বাড়িয়ে না দিয়ে ইতিবাচক কিছু শেখাতে হবে। এভাবে বলতে পারেন- সবাই সুস্থ থাকতে চায়, তাই কেউ অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কায় কাছে যেতে নিষেধ করলে তাতে মন খারাপের কিছু নেই। শিশুটিকে বোঝাতে হবে তার নিজের সুরক্ষার কথা ভেবে নিরাপদ দূরত্বেই থাকা উচিত।
স্কুল খোলার অতি উৎসাহে শিশুর ওপর পড়াশোনার প্রচণ্ড চাপ চাপিয়ে দেয়া ঠিক হবে না। প্রায় দেড় বছরের মত স্কুল বিহীন অবস্থা কাটিয়ে স্বাভাবিক হয়ে উঠতে সময় দিতে হবে শিশুটিকে। করোনাকালীন পড়াশোনার ঘাটতি পূরণ করার চেয়ে এই মুহূর্তে সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিশুকে আবার স্কুলের পরিবেশে ফিরিয়ে আনা জরুরি। পরিবর্তিত পরিবেশে শিশুটির মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক : কনসালটেন্ট, নিউরোডেভলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার এবং চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট এন্ড পেডিয়াট্রিক ডিপার্টমেন্ট, বেটার লাইফ হসপিটাল।
প্রাক্তন অটিজম বিশেষজ্ঞ: ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল।
এইচআর/এমএস