উন্নয়ন : একটি রাজনৈতিক প্রপঞ্চ
উন্নয়ন মূলত একটি প্রপঞ্চ। এই প্রপঞ্চ উৎসাহিত ও উদ্দীপিত করে আমাদের চেতনাকে এবং তা শেষতক পৌঁছে দেয় এক মানসিক দিকবলয়ে। সেখানে বাস করে আমাদের ব্যক্তিগত, সমাজগত, রাষ্ট্রগত উন্নয়ন চিন্তা। কি করে উন্নতি করা যায়, এটাই তো মূল। কিন্তু সেই মূলের নকশা কী? মানে উন্নতি সাধনের কলাকৌশল কী? কোন পথে উন্নতি করা যাবে?
আদিতে, প্রয়োজনকে সামনে রেখেই এই উন্নতির কথা ভাবা হয়েছিলো, আজও সেখানেই আছে। আজকে যে সব সুযোগ সুবিধা আমরা ভোগ ও উপভোগ করছি, তা এসেছে প্রয়োজন বা চাহিদাকে কেন্দ্র করেই। ভবিষ্যতেও, আমার ধারণা ও বিশ্বাস প্রয়োজনকে কেন্দ্রভূমি ধরে কল্প-রাজ্যের দুয়ার খোলা হবে। এবং হবেই।
বলা হয়, পৃথিবী এখন চরম উৎকর্ষের আঙিনায় প্রবেশ করেছে। প্রাযুক্তিক উন্নয়নের বিষয়টি মাথায় রেখেই বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনার ওই বাতাবরণ উন্মুক্ত হয়েছিলো। রাইট ব্রাদার্সের উড়ার চিন্তা, পাখির উড়তে দেখে নিজেদেরও উড়ার সখ হয়েছিলো। সেই থেকে আজকে পারমানবিক পাওয়ার ব্যবহার করে চাঁদে রকেট পাঠানো কিংবা মঙ্গল জয় করার নেশা মানুষকে আরো কল্পনার মহাকাশ নির্মাণের তাগিদ দিচ্ছে। এটি মাত্র একটি ক্ষেত্রের বিষয়ে বলা হলো। মানব জীবনের সব ক্ষেত্রে, সব স্তরেই, ধাপে ধাপে যে অগ্রগামিতার ইতিহাস আছে, তাকে যদি মনে রাখি আমরা, তাহলে উন্নয়নের মৌলিক ও তার ব্যাপক বিস্তারের রূপটি আমরা পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারবো।
১.
উন্নয়ন একটি ধারণার মডেল। আমরা কোন কোন ক্ষেত্রে উন্নয়ন চাই, সেই ধারণারই একটি মডেল তৈরি করে উন্নয়ন-চিন্তা। আমাদের স্বাধীনতার পর আজ পরযন্ত বেশ কয়েকটি উন্নয়ন পরিকল্পনা হয়েছে। কি ভাবে সেই পরিকল্পিত প্লানটির কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়িত হবে, এবং হয়েছে, তার কিছুটা আমরা দেখেছি। সেই প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার আলো থেকেই নতুন পরিকল্পনার নকশা ও তার রোডম্যাপ [বাস্তবায়ন পরিকল্পনা ] রচিত হয় এবং হবে।
ব্যর্থতা না থাকলে সাফল্যের আলোকিত মুখ দেখা যায় না। অন্ধকার না হলে আলো ঠিক মতো ফোটে না। আমরা সেটা জানি। গত ৫০ বছরে সেই ‘জানা-সত্য’ কি আমরা মনে রেখেছি? কিংবা বলা উচিত উন্নয়নের বিতর্কিত বিষয়গুলোকে এড়িয়ে গিয়ে প্রকৃত উন্নয়ন মডেল তৈরি করেছি। ইতোপূর্বে যত সরকার এসেছে আমাদের শাসন করতে, তারা নানান ওয়াদা দিয়েও সেগুলো রক্ষা করেননি বা তাদের নেয়া উন্নয়ন রোডম্যাপ ধরে তার বাস্তবায়নও করতে পারেননি। প্রতিবছরই যে সব প্রকল্প নেয়া হয়, মনে রাখতে বলি, সেগুলোর বাস্তবায়ন চেহারা। কোনো বছরই সর্বোচ্চ শতকরা ৫০-৭০ শতাংশের বেশি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। এর কারণ দুটি । এক, প্রকল্পের অর্থ ছাড়ে আমলাদের ঢিলেমি ও অসহযোগী মনোভাব এবং তাদের কর্মদক্ষতার অভাব। দক্ষ একটি আমলাতন্ত্রও নেই আমাদের, যারা প্রশাসনের মন্থরতাকে সজীব ও সচল করতে পারে। দ্বিতীয়ত প্রকল্প পরিচালকদের অদক্ষতা। অর্থাৎ পরিকল্পিত ও গৃহিত প্রকল্প যদি যথাসময়ে বা নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন করা না যায়, তাহলে ওই পরিকল্পনার মধ্যে গলদ আছে, কিংবা প্রকল্প পরিচালকের অদক্ষতা, অসারতা এর জন্য দায়ী। একই ভাবে সরকারও এর জন্য দায়ী। কারণ সরকার যোগ্য লোক বাছাই করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আর সরকারের ব্যর্থতা মানে যাদের অর্থে প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে, সেই জনগণের অর্থের অপচয় রোধ করতে পারেননি সরকার। এমন বহু প্রকল্পের কথা বলা যাবে, যেগুলো অপচয়ের তালিকায় আছে। কিন্তু এই অপচয় প্রতিরোধের জন্য সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কিংবা নিয়োগপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। বরং উল্টোটাই করেছেন সরকার। সেই সব ঠিকাদার ও পি.পি পরিচালকদেরকে কাজের সময় বাড়িয়ে এবং বাড়তি অর্থ বরাদ্দ দিয়ে অদক্ষদেরই প্রমোট করেছেন। এর কারণ গোটা সরকারি ব্যবস্থাটাই একধরণের করপোরেট দুর্নীতির ব্যবস্থার অধীন, যা দুর্নীতিকেই প্রশ্রয় দিয়ে আজ মহীরুহে পরিণত করেছে।
৩.
উন্নয়নের সাথে অনেক কিছু জড়িত। সেটা প্রজ্ঞাবান যতটা উপলব্ধি করতে পারবেন, আম-জনতা তা পারবেন না। উন্নয়নের সাথে স্বাধীনতা ওতোপ্রোত। ওই স্বাধীনতা মানে সব ধরনের স্বাধীনতা। ব্যক্তির স্তর থেকে, সমাজে ও সামাজিক নানা স্তরে ওই স্বাধীনতা থাকতে হবে। বলা সহজ যে ওই স্বাধীনতা দিলাম বা দেয়া হবে। কিন্তু সেই স্বাধীনতাগুলো কি? তাও জানতে হবে আমাদের।
জনগণের [আম-জনতা] চিন্তার স্বাধীনতা। তার কথা বলার স্বাধীনতা। তার মত প্রকাশের মৌলিক স্বাধীনতা উন্নয়নধারাকে বেগবান করতে সহায়ক। সমাজে কায়েম থাকতে হবে সেই স্বাধীনতার উপাদান-উপকরণগুলো। তার একটি গণতন্ত্র, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে অতীব জরুরি উপাদান। আবার সেই গণতন্ত্রের সোজা-সাপটা রূপ নয়। যেমন আমাদের সরকারগুলো অতীতে এবং বর্তমানে জোর গলায় বলেন, দেশে গণতন্ত্র আছে , আমরাই গণতন্ত্র কায়েম করেছি, ইত্যাদি। তারা বড়াই করে এমনটাই বলেন। কিন্তু তাদের কোনো কাজের ভুল-ত্রুটির কথা বললেই বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কোনো লেখক যদি তার লেখায় সরকারের যৌক্তিক সমালোচনা করেন, তাহলেও ‘পেটুয়া বাহিনী’ ও পুলিশ তাকে নাজেহাল করে। রাজনৈতিক সরকারের অপকর্মের বিরুদ্ধে রা করাও যে দেশে, যে রাজনৈতিক সমাজে অপরাধ, সেই সমাজে বা দেশে গণতন্ত্র বহাল আছে এটা বলা অন্যায় ও তা মিথ্যাচার। গণতন্ত্র ছাড়া আমাদের দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। কারণ গণতন্ত্র না থাকলে যে সব উন্নয়ন অবকাঠামো দেখা যায় তাকে বড়জোর ‘ গ্রোথ’ বলা যাবে, উন্নয়ন বলা যায় না।। যার সরল বাংলা করলে দাঁড়ায় ফোঁড়া।[ গ্রোথ = ফোঁড়া ] আমরা জানি ডেভেলপমেন্ট-এর একটি মানে গ্রোথ, তারপরও যদি তা সমন্বিত না হয়, অর্থাৎ সর্বাঙ্গে যদি সেই গ্রোথ না হয়, তাহলে তাকে শারীরিক উন্নতি বলা যাবে না। যেমন ডেভেলপমেন্টের সাথে পরিবেশের সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গী। ধরা যাক, পদ্মা সেতুর কথা। বহুল আলোচিত এই সেতু নির্মাণে ব্যয় কয়েক দফায় বাড়ানো হলেও এর কাজ আজো শেষ হয়নি। ফলে সেতু এলাকার জনজীবনে পরিবেশ ও প্রতিবেশের বেশ ক্ষতি হয়েছে। এবং তা আজো চলছে। পরিবেশ ও প্রকৃতির জীব-বৈচিত্র্য—এর সাথে উন্নয়ন কর্মসূচি জড়িয়ে আছে। এই সেতু দিয়ে যে পরিমাণ গাড়ি-ঘোড়া চলাচল করবে তাতে যৎসামান্য আয় হবে। দেশের জনগণের টাকায় বানানো এই সেতু ৯৭ শতাংশ মানুষই ব্যবহার করবে না, করতে পারবে না।
উন্নয়ন কেবল অবকাঠামোর মধ্যে নিহিত নয়। উন্নয়নের ভেতর পড়ে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন পদ্ধতি ও তাদের কর্মধারা। আমরা তো জানি, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাতৃসদন হচ্ছে গ্রামবাংলা ও কৃষি সেক্টর। আমাদের জিডিপি’র ৮০ শতাংশই অর্জিত হয় কৃষি থেকে। যদি তাই হয় তাহলে সেই কৃষির উন্নয়ন সব কিছুর আগে করা জরুরি। আর কৃষির উন্নতি করতে হলে ওই সেক্টরে যারা কাজ করেন, তাদের সামাজিক, রাজনৈতিক, তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, বিনোদন, ও কর্মপরিধি বাড়াবার পরিকল্পনাই নেয়া জরুরি কাজ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে প্রতি বছরের বাজেটে কৃষিখাত পড়ে থাকে ব্যয়-বরাদ্দ তালিকার নিচের দিকে। আবার সেই বাজেটে যারা কৃষির সরকারি অফিসের লোক, তাদের বেতনভাতা দিতেই সিংহভাগ ব্যয় করা হয়।
শিক্ষায় আমরা পিছিয়ে পড়েছি। পরিসংখ্যানে যতোই দেখানো হোক না কেন, আমাদের শিক্ষার হার অনেক, আদপে তা অনেক কম। বিশেষ করে গ্রামীণ জনপদের দরিদ্র মানুষের সন্তানদের জন্য তেমন কোনো শক্তিশালী শিক্ষা কার্মসূচিই নেয়া হয় না। তারপরও যারা প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পর আরো লেখাপড়ায় যেতে চায় তাদের জন্য তেমন কোনো সুযোগ নেই। শিক্ষার সাথে কর্মসংস্থানের কোনো পরিকল্পনা বা চাকরির ক্ষেত্র সৃজনের কোনো আয়োজন নেই। চাকরির বাজারে সাথে মিল রেখে পরিকল্পিত হয়নি শিক্ষা কারিকুলাম। ফলে গরিবের ছেলে বেকারই থেকে যায়। এই শিক্ষিত বেকার জাতির কাঁধের বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।
আমরা মনে করি শিক্ষা করিকুলাম ও এর নকশা ঢলে সাজানো জরুরি। দেশের মানুষের অর্থনৈতিক ভিত্তি পোক্ত করতে হলে গ্রামীণ সমাজ ও গ্রামীণ মানুষের কাজের ভিত্তি গড়ে তোলার অন্য কোনো বিকল্প নেই। আর তার প্রথম ও প্রধান উদ্যোগটি হতে হবে শিক্ষা অবকাঠামোর।কৃষি ও কৃষি কারিগরী, লোকজ উদ্ভাবনার জন্য প্রণোদনামূলক প্রতিষ্ঠান, দক্ষ কৃষি জনবল সৃষ্টি, খাদ্যশস্যের পাশাপাশি খাদ্যের অপরাপর সহযোগী খাদ্য - ডিম, দুধ, গো-মাংস, হাঁস-মুরগির খামার, মাছচাষ ও তার প্রজনন খামার, বিনোদনকেন্দ্র, শিক্ষা উপকরণ ও তার জন্য সব অবকাঠামোতে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ। তাদের বেতন কাঠামো রাজধানীতে যে পরিমাণ বেতন দেয়া হয় একজন উন্নত স্কুলের শিক্ষককে, সেই কাঠামো অনুসরণ করতে হবে। অর্থাৎ শিক্ষার মধ্যে কোনোরকম বৈষম্য রাখা মানেই তাদেরকে বঞ্চিত করা।
তৃণমূল স্তরের শিশু ও নারী শিক্ষা ছাড়া সমন্বিত উন্নয়নের পরিকল্পনা কোনোভাবেই কাজে লাগবে না। নগর, মহানগর নয়, উন্নয়নের মূল হতে হবে গ্রামকেন্দ্রিক। দক্ষ জনশক্তি উন্নয়নের কেন্দ্রও হতে হবে গ্রাম কেন্দ্রিক। আমরা জানি গত ৩০/৩৫ বছর ধরেই উন্নয়নের নানান কৌশলের রোডম্যাপ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে জাতিসংঘের ‘মিলেনিয়াম উন্নয়ন গোল’ নেয়া হয়েছে। দেশের সরকার নিয়েছে সেই আলোকে নানান ডেভেলপমেন্ট প্লান। ‘দারিদ্যমোচনের কৌশলপত্র তৈরি করে কি করে মানবসম্পদের উন্নতি করা যায় এবং গরিব মানুষদের জীবনমানের উন্নতি ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়া যায় সেই চেষ্টা করা হয়েছে। এ-সবই জাতিসংঘের প্ররোচনায় এবং বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফর নতুন ঋণের আরেকটি ফাঁদ। সেই ফাঁদেই আমরা পড়ে আছি।
পুঁজিবাদী বিশ্বের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে গরিব দেশের সম্পদ লুটে নেয়ার কলাকৌশল গবেষণা করে বের করা। নানান নামের আবরণে, উন্নয়নের নানান স্বপ্নের ডালপালা দেখিয়ে, সেই স্বপ্নের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়া হয় উন্নয়নশীল তকমা এঁটে দেয়া গরিব দেশগুলোর কপালে। এই পুঁজিবাদী তকমা কপালে নিয়ে আমাদের রাজনৈতিক ও ক্ষমতাসীন নেতারা নানান রকম বগল বাজান। আমরা উন্নয়নশীল দেশের তকমা থেকে মুক্ত হয়ে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নতি সাধন করতে চলেছি। এই রকম নয়া ডিগ্রি জারি করেছে আমাদের পুঁজির সরবরাহ দাতাদের বিভিন্ন সংগঠন। এর সাথে বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফসহ বিশ্বের পুঁজির লগ্নীকারকরা জড়িত। তাদের লগ্নী যাতে গরিবের উন্নয়ন স্বপ্নের মহাকাশে সেঁটে দেয়া হয় এবং তাদের আরো কর্মদক্ষ ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন করার তাগিদ দেয়া হয়, সেই প্রেসকিপশন দেয়া হয়। সেই প্রেসকিপশন মোতাবেক ওই সব দেশের নেতা-নেত্রীরা নিজেদের মধ্যেকার রাজনৈতিক বিবাদ কমিয়ে আনে, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যে সব প্রোগ্রাম নেয়া হয়ে থাকে, সেগুলো বাদ দিয়ে গতানুগতিক এজেন্ডা নিয়ে কথা বলেন তারা। এ-খেলা অনেক পুরোনো খেলা হলেও এর ভেতরে আছে এমন সব মজার উপাদান যার সিংহাসনে আছে ‘ক্ষমতা’। এ-যেন এক স্বপ্ন। বাস্তব আর পরাবাস্তবের মিথষ্ক্রিয়াজাত স্বপ্ন। গাধার নাকে মূলো ঝুলিয়ে দেয়া আরেক আধুনিক প্রগতির গল্প। এই উন্নয়ন প্রপঞ্চটি যে আসলে এক রাজনৈতিক শোষণের নয়া কলা, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
মানুষ, সে যে শ্রেণিভুক্তই হোক না কেন ক্ষমতাকে সে ভোগের সামগ্রী করে তোলে। উন্নয়ন রোডম্যাপভুক্ত প্রকল্পগুলো, বাংলাদেশে ভোগের সামগ্রীতে পরিণত হয়েছে। যার কারণে প্রকল্পের সময় কেবল বাড়ে এবং তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে ব্যয়-বরাদ্দও।
সারফেস ডেভেলপমেন্ট লোক দেখানো ও চোখ ধাঁধানো। এ-গুলো বাস্তবায়নে সরকারের প্রয়াস বেশি। জনগণকে দেখাতে চায় যে তারাই এ-সব উন্নতি করেছে। এই সব বড় উন্নয়ন অবকাঠামো তাদেরই অবদান। তাই তারাই ক্ষমতায় থাকতে চায়। গণতন্ত্রহীন রাজনীতির দেশে ক্ষমতাশীলরা কোনো প্রকৃত উন্নয়ন পরিকল্পনা করে না। গ্রাসরুট লেভেলে তাদের চোখ থাকে না। তাদের চোখ বহির্কাঠামোর ওপর। প্রকৃত প্রস্তাবে তা আসলে প্রপঞ্চ বা মায়ার খেলা।
লেখক : কবি, সাংবাদিক।
এইচআর/এমএস