৬৯ বছরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, অতঃপর প্রত্যাশা
জন্মলগ্নটা অতসহজ ছিল না। যতটা সহজভাবে আমরা বলি বা শুনি। অথবা বোঝার চেষ্টা করি। সাতচল্লিশে দেশ বিভক্ত হলেও বাঙালিরা প্রত্যাশিত ফলাফল পায়নি। যে কারণে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে। সেই সময়ের কথা বলছি। যে সময় পূর্ববাংলা পাকিস্তানিদের আগুনে নির্মমভাবে পুড়ে ছারখার হচ্ছে। নির্যাতন-নিপীড়ন আর অধিকার বঞ্চিত হওয়া মানুষগুলো মুক্তির পথ খুঁজতে ব্যস্ত। নিজের ভাষাটুকুও পাওয়ার অধিকার হারিয়ে দিয়েছে কুখ্যাত পাকিস্তানিরা। শত সংগ্রাম করে দগদগা রক্তের বিনিময় বাঙালিরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ভাষার অধিকার পায়। পূর্ব বাংলায় চলছে বিভীষিকাময় অবস্থা। নেই খাবার, নেই পড়ালেখার সুবিধা, নেই বাকস্বাধীনতা, নেই অর্থনৈতিক অবস্থা, নেই সাংস্কৃতিক অবস্থা, নেই সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা, নেই পরনে কাপড়, নেই আশ্রয়স্থল....। সর্বোপরি রিফিউজি।
নিজের দেশে, নিজের জায়গায়, নিজের পরিবেশে একি মেনে নেওয়া যায়? প্রতিদিনই লাশের মিছিল। হাহাকার আর আতঙ্কই ছিল পূর্ববাংলা মানুষের নিত্যসঙ্গী। যেখানে শিক্ষার কোনো অধিকার নাই? সেখানে আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান? তাও আবার হ্যানো শ্যানো কথা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান? বিশ্ববিদ্যালয়!!! হ্যাঁ ঠিক এমনই একসময় যখন বাঙালিদের পিঠ ঠেকে গেছে, বাঙালিরা মুক্তির সনদ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিরোধ, প্রতিশোধ সর্বোপরি জয়ের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু নেতৃত্বে। এমনই একসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম। দিনটি কেমন ছিল, দিনের আবহাওয়াটি বা কেমন ছিল, তা হয়তো এই মুহূর্তে অনুভব করা সম্ভব নয়? তবে ইতিহাস বিশ্লেষণ করে বোঝা যায় পাকিস্তানিদের কষাঘাত থেকে বের হয়ে আসার অশনিসংকেত ছিল পূর্ববাংলার আকাশে বাতাসে সেই দিনটি।
৬ জুলাই ১৯৫৩। ৬৮ বছরে পা রাখল অন্ধকার থেকে আলো ফোটানোর বাতিঘর নামে খ্যাত প্রতিষ্ঠান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ব্রিটিশদের হাত থেকে দেশ বিভক্ত হওয়ার পরপরই অন্যান্য অধিকারের পাশাপাশি রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনও চালিয়ে যেতে থাকে রাজশাহীবাসী। সেই লক্ষ্যে ১৯৫০ সালের ১৫ নভেম্বর ৬৪ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। রাজশাহীর বিশিষ্টজনরা ভাষা আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকার রাখার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে ১৯৫২ সালের ১০ জানুয়ারি, ১৩ ফেব্রুয়ারি ও ১৯৫৩ সালে ৬ ফেব্রুয়ারি ভুবন মোহন পার্কে জনসভা হয়। এবং সরকারকে হুঁশিয়ার করা হয় রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা না হলে উত্তরবঙ্গকে একটি স্বতন্ত্র প্রদেশ করা হবে।
যাহোক অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই রাজশাহীর বড়কুঠিতে ১৬১ জন শিক্ষার্থী, প্রায় ৭৫৩ একর এলাকা নিয়ে ড. ইসরাত হোসেন জুবেরীকে উপাচার্য নিযুক্ত করে যাত্রা শুরু করেছিল কালের পরিক্রমায় বাংলাদেশ সৃষ্টির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়টি। সাতটি বিভাগ দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও সময়ের স্রোতধারায় সেটি বর্তমানে ৫৯টি বিভাগে উন্নীত হয়েছে। ৬টি ইনস্টিটিউট, ১২টি একাডেমিক ভবন, শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য ১৭টি হল নিয়ে ১৬১জন শিক্ষার্থীর সংখ্যাটি বেড়ে এখন প্রায় চল্লিশ হাজারে অবস্থান করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
জন্মলগ্ন থেকেই প্রগতির পথে হেঁটে জাতির মুক্তির সংগ্রামে সোচ্চার থেকেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ইতিহাসের পরত তাই বলে। মৌলবাদীরা গ্রাস করতে চেয়েছে বহুবার, আঘাত করেছে দিনের পর দিন, কিন্তু পারেনি। ৫৪ এর নিবার্চন থেকে শুরু করে, ৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ছেষট্টির ৬ দফা, ৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান এবং ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ সবকিছুতেই ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রণী ভূমিকা।
বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য সবসময় সোচ্চার থেকেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এ কারণেই বঙ্গবন্ধু যখনই উত্তরবঙ্গ তথা রাজশাহীতে সফর করেছে তখনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রপ্রতিনিধি তথা ছাত্রলীগ নেতাদের সকল রকমের দিকনির্দেশনা দিয়েছে। বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা যখন ধীরে ধীরে একদফা তথা স্বাধীন বাংলাদেশের দিকে এগুচ্ছে ঠিক তখনই বঙ্গবন্ধুকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলাতে ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দেয় পাকিস্তানি সরকার।
বঙ্গবন্ধুর মুক্তির আন্দোলন যখন দুর্বার গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে পুরো বাংলায়, সেই আন্দোলন ঠেকাতে পাকিস্তানি সরকার মরিয়া। পূর্ববাংলায় একের পর এক ছাত্র হত্যা, সার্জেন্ট জহুরুল হককে জেলে হত্যা...। এ যেন কাটাবে ঘায়ে নুনের ছিটা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পিছপা ছিল না আন্দোলন থেকে। গড়ে তোলে দুর্বার আন্দোলন সেই আন্দোলন ঠেকাতে পাকিস্তানিদের পেটোয়া বাহিনী পশুর রূপ ধারণ করে এবং এই কুখ্যাত নরপশুদের হাতে জীবন দিতে হয় ঊনসত্তরের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. শামসুজ্জোহাকে।
১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ড. শামসুজ্জোহাকে হত্যার পর আন্দোলন গণআন্দোলনে রূপ নেয়, গণঅভ্যুত্থান ঘটে। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন বঙ্গবন্ধু। ড. জোহার মৃত্যু বঙ্গবন্ধুকে আঘাত করেছিল। তাই তো জেল থেকে মুক্ত হওয়ার পরপরই ১৯৬৯ সালের ৩ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু ড. জোহার কবর জিয়ারত করতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন।
বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করার সাথে সাথেই অসীম সাহস নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। মহান মুক্তিযুদ্ধে অধ্যাপক সুখরঞ্জন সমাদ্দার, শহীদ অধ্যাপক হবিবুর রহমান, অধ্যাপক মীর আবদুল কাইয়ুমকে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। পাকিস্তান বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হন গণিত বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মজিবর রহমান এবং অন্তত ৩০ জন ছাত্র, কর্মকর্তা-কর্মচারী শহীদ হন।
পাকিস্তান বাহিনী ও দেশীয় রাজাকাররা মিলে ৯ মাসে অন্তত চার হাজার মানুষকে হত্যা করে নির্যাতনের কেন্দ্র নামে খ্যাত শহীদ শামসুজ্জোহা হলে। কেন পাকিস্তানিরা জোহা হলকে তাদের ক্যান্টনমেন্ট বানিয়েছিল? প্রশ্নগুলোর উত্তর সহজ। বঙ্গবন্ধুর মুক্তির আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল এবং সেই ভূমিকা পালন করতে গিয়ে ড. জোহাকে হত্যা করেছিল পাকিস্তান বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ড শুধু একটি হত্যাকাণ্ড নয়, এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পূর্ববাংলার মানুষ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। যার ফলশ্রুতিতে বঙ্গবন্ধু মুক্তি পায়। পাকিস্তানি বাহিনী প্রতিশোধ নিতে জোহার চেতনাকে মুছে দিতে এই হলকে হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণের জন্য ক্যান্টনমেন্ট বানিয়েছিল। জোহা হলের পেছনে রয়েছে গণকবর।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসের পাতা থেকে কখনোই বিচ্ছিন্ন ছিল না। ৬৯ সালে ঢাকার ডেমরায় ঘূর্ণিঝড় হলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহ করে বঙ্গবন্ধুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য বারবার জামায়াত-শিবির, মৌলবাদ আর জঙ্গিবাদের হামলায় রক্তাক্ত হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। তারপরও থেমে না থেকে প্রতিনিয়ত জামায়াত-শিবির, মৌলবাদ আর জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে চলছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
স্বাধীনতা পরবর্তী স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে। ২০০১ সালে মৌলবাদী শক্তি ক্ষমতায় আসলে শিবিরের হাতে জীবন দিতে হয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ইউনুস ও অধ্যাপক তাহেরকে। ছাত্রলীগ নেতা ফারুকসহ অসংখ্য প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের জীবন দিতে হয় মৌলবাদী সংগঠন জামায়াত-শিবিরের হাতে। হাজার হাজার ছাত্রলীগ নেতা পঙ্গু হয়েছে মৌলবাদীদের হাতে। ১/১১ এ সেনাসমর্থিত সরকার ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রকে হত্যা করার সকল রকমের পরিকল্পনা করে। কিন্তু থেমে থাকেনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৭ সালের ২২ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনে জীবন দেয় রিকশাচালক আফজাল হোসেন। এই হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশের মানুষ একযোগে মঈন উদ্দিন, ফখরুল উদ্দিনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। সেই সময় অসংখ্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতেও সবসময় সোচ্চার ছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সামাজিক সাংস্কৃতিক আন্দোলনেও পিছিয়ে ছিল না বিশ্ববিদ্যালয়টি।
প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে অদ্যাবধি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবছরই বের হচ্ছে সাহিত্যিক, বিজ্ঞানী, শিল্পী, গুণী সাংবাদিক, খেলোয়াড়, রাজনীতিবিদসহ হাজারো গুণীজন। সময়ের চলমান প্রক্রিয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়েছে বহুদূর।
যখনই সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে তখনই এই বিশ্ববিদ্যালটি মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা নির্মূলে সোচ্চার হয়ে ওঠে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসের পাতার ৬৮ বছরে অবস্থান করলেও এখন পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজাকার, আলবদর, স্বাধীনতাবিরোধী শিক্ষক কর্মচারী কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। যার কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে মৌলবাদীদের নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। আবার মৌলবাদী জামাত শিবিররা দীর্ঘ সময় অবস্থান করার পেছনেও ভ্যাস ধরা আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের আদর্শহীন রাজনীতিও দায়ী। কারণ তাদের ছত্রছায়ায় স্বাধীনতাবিরোধী জামাত-শিবির দীর্ঘ সময় তাদের আধিপত্য বিস্তার করে গেছে, যাচ্ছে। একাত্তরে যেসব শিক্ষক রাজাকারের ভূমিকায় অবস্থান নিয়েছিল তারা থেকেছে বহাল তবিয়তে। বিচার তো দূরের কথা নামটিও প্রকাশ করা হয়নি। পরবর্তীতে এরাই জামাত-শিবিরকে শক্তিশালী ভুমিকায় অবতীর্ণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে। মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন নিদর্শন, বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নামে বিভিন্ন নিদর্শন স্থাপিত হলেও সময়ের দাবি যারা সেই সময়ে রাজাকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ ছিল এবং এদেরকে আদর্শহীন লেবাস পাল্টানো প্রগতিশীল নামের যেসব প্রতিক্রিয়াশীল শিক্ষক পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে তাদের নামও প্রকাশ করা জরুরি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলে নিজেদের শক্তিশালী দাবি করলেও স্বাধীনতা বিরোধীদের অবস্থান, নাম প্রকাশ করতেন না পারা অত্যন্ত দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক বটে।
ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তান সরকারের অযাচিত হস্তক্ষেপে বঙ্গবন্ধু উদ্বিগ্ন না হয়ে পারেননি। কিন্তু শিক্ষকমণ্ডলী প্রতিবাদ না করায় হতাশ হয়ে বঙ্গবন্ধু কারাগারের রোজনামচায়(পৃঃ১২২..১৫৬) লিখছেন:
“ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েগুলির স্বায়ত্তশাসন শেষ হয়ে গেল।...। রোধ হয় শিক্ষিত সমাজ একটু ঘাবড়াইয়া গিয়াছেন। ভয় নাই, কলম ফেলে দিন। লাঠি, ছোরা চালান শিখুন। আর কিছু তেল কিনুন রাতে ও দিনে যখনই দরকার হবে নিয়ে হাজির হবেন। লেখাপড়ার দরকার নাই। প্রমোশন পাবেন, তারপরে মন্ত্রীও হতে পারবেন। শুধু ভাবি, ব্যাপারটা কি হলো, কোথায় যেতেছি”
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে সংসদে আইন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু আজও প্রশ্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি মৌলবাদী স্বাধীনতাবিরোধীদের হাত থেকে মুক্ত হয়েছে?
৬৯ বছরে এসে প্রত্যাশা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী শক্তিদের চিরতরে নির্মূলের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যারা স্বাধীনতা বিরোধী ছিল তাদের নাম প্রকাশ করা। ইতিহাসের সঠিক চর্চা হোক। জাতি জানুক দেশের জন্য স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর ডাকে কত ত্যাগ স্বীকার করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি। যা বঙ্গবন্ধু কন্যার ডাকেও অব্যাহত রেখেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধসহ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে যারা জীবন দিয়েছে সেই সব বীর যোদ্ধাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। ভাল থাক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। শুভ জন্মদিন।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক গণিত বিভাগ, সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও পরিচালক, বঙ্গবন্ধু চর্চাকেন্দ্র বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর। শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগ।
এইচআর/এমএস