মাজেদের কবর নারায়ণগঞ্জে কেন?
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি আব্দুল মাজেদের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। তার কবর কোথায় হলো? কলঙ্কিত লাশটা নারায়ণগঞ্জে কী করে এলো? কারা নারায়ণগঞ্জের মাটিতে দাফন করতে দিল এই লাশ? নারায়ণগঞ্জবাসীকে কলঙ্কিত করার অধিকারইবা তাদের কে দিয়েছে? মুক্তিযোদ্ধায় পূর্ণ নারায়ণগঞ্জ। গোটা জেলায় হাতেগোনা ছিঁচকে রাজাকার ছিল ক’জন মাত্র। এমন একটা জেলা কাদের ইশারায় কলঙ্কিত হলো?
কুখ্যাত ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আব্দুল মাজেদ কি নারায়ণগঞ্জের অধিবাসী ছিলেন? তার নিজ এলাকা ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার উত্তর বাটামারা গ্রামেইতো তার লাশ দাফনের কথা ছিল। এটাই নিয়ম। তা না হলে বেওয়ারিশ লাশ যেখানে দাফন হয় সেখানেও তো দাফন হতে পারত? পত্রিকায় জেনেছি, সেখানকার দেশপ্রেমী মানুষ তার মরদেহ গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করেছে। লাশ দাফনে বাঁধ সেধেছে। কুখ্যাত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এটাই হওয়ার কথা। নিজ গ্রামে যাকে গ্রহণ করেনি আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী কীভাবে এই বদ মানুষের লাশ গ্রহণ করলাম? এই বালাইসার কীভাবে নারায়ণগঞ্জে এলো?
আব্দুল মাজেদতো বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি। শিশু হত্যাকারী, নারী হত্যাকারী, দেশের জনকের এই খুনি এতগুলো তাজা প্রাণ কেড়ে দম্ভের সাথে সেদিন এসব খুনের দায় উচ্চগলায় প্রকাশ করেছে। বঙ্গবন্ধুর খুনি; জাতির জনকের আত্মস্বীকৃত খুনি। সহজ কথা কিন্তু নয়। তার লাশটা দাফন হলো তাও আবার আমাদের নারায়ণগঞ্জে। কীভাবে? কারা? নারায়ণগঞ্জে তার লাশ দাফন করতে অনুমতি দিল। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার শম্ভপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে মাজেদের মরদেহ দাফন করা হয়েছে। লাশ শ্বশুরবাড়িতে কেন? সেখানে কি দেশপ্রেমিক কেউ ছিল না? স্থানীয় সংসদ সদস্য কোথায় ছিলেন? তাকে প্রশাসন জানিয়েছে নিশ্চয়? তিনি তাতে কীভাবে স্বীকৃতি দিলেন? আমাকে বলতেই হচ্ছে, ‘সোনারগাঁয়ে কি কোনো মানুষ নেই’। মানুষ আছে দেশপ্রেমিক মানুষ নেই বোধ হয়। সব অমানুষের বাস কি সোনারগাঁয়ে? কুখ্যাত মাজেদের লাশ গ্রহণ করে সোনারগাঁবাসী গোটা নারায়ণগঞ্জবাসীকেই কলঙ্কিত করে ফেলল। আমি রূপগঞ্জবাসী হিসেবে অনেক লজ্জিত। এ লজ্জা গোটা নারায়ণগঞ্জের।
বিষয়টা রাষ্ট্রতো জানতই। রাষ্ট্র কিন্তু কাজটা মোটেও ভালো করেনি। ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুলের নির্দেশে শনিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে সেখানে অবস্থান নেন উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। তারা কুখ্যাত এই মানুষটার লাশ কোনোভাবেই গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়ে দেন। সেখানে আমাদের সোনারগাঁয়ের সংসদ সদস্য কীভাবে এ লাশ গ্রহণ করলেন?
নারায়ণগঞ্জের গোটা সংসদ সদস্যদের এটা দায় বটে! প্রশ্ন হলো তারা কীভাবে নারায়ণগঞ্জে এই লাশ মেনে নিচ্ছেন? কোনো মুসলমানের মৃত্যুর পর তার লাশ দাফন করতে হবে এটাই স্বাভাবিক। এর বিরোধিতা করছি না আমি। মুসলমান হিসেবে তা আমি করতেও পারিও না। গোটা বাংলাদেশের বেওয়ারিশ লাশওতো দাফন হয় কোথাও না কোথাও। সেসব জায়গায়ওতো ধর্মীয় বিধান মতে তার লাশটা দাফন করা যেত। আব্দুল মাজেদ এমন একজন ঘৃণীত অমানুষ তার নামতো লেখা থাকবে সবসময়। এদেশের মানুষ ঘৃণার সাথে মনে করবে তাকে, ধিক্কার দেবে। আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী কেন এই কলঙ্ক সারাজীবন বয়ে যাব?
হতভাগ্য মানুষ আমরা। নারায়ণগঞ্জে জন্মই ছিল আমাদের আজন্ম পাপ। যতদিন পৃথিবী থাকবে, যতদিন বাংলাদেশ বেঁচে থাকবে ততদিন নিশ্চয় মানুষ জানবে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি নারায়ণগঞ্জেরই কেই হয়তো। ভোলার কলঙ্কিত মানুষটিকে কেন আমরা গ্রহণ করলাম। নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় সংসদ সদস্যগণ এর কি জবাব দেবেন আপনারা? নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে একজন বীরপ্রতীক সংসদ সদস্য। তিনি সম্মানিত মন্ত্রীও। নারায়ণগঞ্জ-২ এ দেশ কাঁপানো তুখোড় ছাত্রনেতা নরুল ইসলাম বাবু ভাই আপনিও কি জবাব দেবেন আমাদের?
নারায়ণগঞ্জে আরও দুজন সংসদ সদস্য আছেন সহোদর ভাই। জোহা পরিবারের সদস্য তারা। যার সাথে বঙ্গবন্ধুর সরাসরি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। গর্জে ওঠা মানুষ শামীম ওসমান এমপি মহোদয় আপনিই বা এর কী জবাব দেবেন? আপনাদের কারোরই নারায়ণগঞ্জবাসীকে কলঙ্কিত করার কোনো অধিকার নেই বোধ করি। দেশবাসী জানে যুদ্ধপরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুকে তারা খুন করেছিল হীনস্বার্থের কারণে; তাতে রাজনীতি ছিল; ক্ষমতার মোহ ছিল; কারও ইশারা ছিল।
শেখ রাসেল? তার কী অপরাধ ছিল? এই শিশু ভয়ে যখন খাটের তলায় পালিয়ে, তাকেও কেন খুন করা হলো? এ প্রশ্ন মাননীয় এমপি সাহেবগণ আপনাদের কাছেই রাখতে চাই। যেভাবেই বলি না কেন কাজটা কিন্তু মোটেও ভালো হয়নি। করোনাভাইরাসের ঝড়টা থামুক। এই কলঙ্কিত কবরটা অন্যত্র পাঠিয়ে দিন প্লিজ। এই কলঙ্কের বোঝা নারায়ণগঞ্জবাসী কখনই বহন করবে না। সারাজীবনের কলঙ্ক এটা। এটা নারায়ণগঞ্জবাসী মেনে নেবে না। আপনারাও কিন্তু ইতিহাসে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েই থাকবেন অনন্তকাল। ভাবুন প্লিজ। এখনও সময় ফুরিয়ে যায়নি। কবরটা সরিয়ে নারায়ণগঞ্জকে কলঙ্কমুক্ত করুন।
সেই সর্বনাশা রাতের দৃশ্যপট মানসচক্ষে একবার ভেসে উঠলেই শিহরিত হতে হয়। সেই যে মানুষটি ভালোবেসেছিলেন বাঙালি জাতিকে। বীর হতে চাননি তিনি; ভয় পাননি শহীদ হতে। রক্ত দিয়ে দেশবাসীর ভালোবাসার ঋণ পরিশোধ করতে প্রস্তুত ছিলেন সর্বদা। তাকে কী করে ভুলবে বাঙালি? সেই ১৫ আগস্ট। সিঁড়িতে পড়ে আছে বাঙালি জাতির প্রাণপ্রিয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রক্তমাখা নিথর লাশ। সাথে পরিবারের অন্য সদস্যদের মরদেহও। শিশু রাসেল? তার রক্তাক্ত লাশটার কথা কী ভাবা যায়। সিঁড়ি গড়িয়ে রক্ত চলে এসেছে বাহির আঙ্গিনায়। মহান সেই নেতার রক্ত সোঁদা মাটিতে মিশে গেছে।
তিনি তো শুধু প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি ছিলেন না, ছিলেন না দলবিশেষের প্রধান। দীর্ঘ দিবস; দীর্ঘ রজনী ঝড়-মেঘ ইতিহাসের পথে আমাদের যাত্রায় তিনি ছিলেন সঙ্গী ও দেশের পথপ্রদর্শক। তাকে ভুলব কেমন করে? তাকে কি ভোলা যায় কখনো? সেই মানুষটির খুনি আজ আমারই জন্মভূমিতে। নারায়ণগঞ্জে খুনি মাজেদের লাশ মেনে নিতে পারছি না কিছুতেই। রক্তচাপ বেড়ে যাচ্ছে। প্রিয় নারায়ণগঞ্জবাসী কোনোভাবেই গ্রহণ করবেন না আপনারা। এই লাশ নারায়ণগঞ্জ থেকে তুলে নিযে যাক। নারায়ণগঞ্জ কলঙ্কমুক্ত হউক।
যিনি আমাদের দেশমাতৃকাকে উপহার দিলেন; এই তাকেই কত না নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। শুধু তই নয়, হত্যাকারীরা তার কবর তিন মাস পর্যন্ত পাহারা দিয়েছে। সেখানে কাউকে আসতে দেয়া হয়নি। এমনকি দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের ছবি এদেশে নিষিদ্ধ ছিল। বঙ্গবন্ধুর কবর দেখতে না দেয়া, তার হত্যার ছবি প্রকাশের নিষেধাজ্ঞার মূল কারণ ঘৃণ্য হন্তারক ওই সামরিক শাসকরা তাতে ভয় পেত। তাদের ভয়টা ছিল এখানেই যে, তারা নিশ্চিত জানত জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে মৃত বঙ্গবন্ধু অনেক বেশি শক্তিশালী। তারা আরও জানত সে সময় এসব ছবি প্রকাশ পেলে কোনো কিছুতেই বাঙালিকে দাবিয়ে রাখা যাবে না।
সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে শুধু সরকার বদলই নয়, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাওয়া জাতির অনেক অর্জনকে নস্যাৎ করা হয়েছিল, বদলে দেয়া হয়েছিল দেশের সংবিধান ও মূলনীতি। সেই শোক, সেই বেদনা, সেই ক্ষোভ বুকে নিয়েই দেশবাসী কাটিয়েছে এই দীর্ঘ সময়।
বঙ্গবন্ধু হত্যার কলঙ্ক কোনোদিন ঘুচবার নয়, তাকে এভাবে হারানোর বেদনার কোনো উপশম নেই। তারপরও সান্ত্বনা এটুকু যে, একে এক জাতির জনকের হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে এবং খুনিদের অন্তত ছয়জনের ফাঁসি হয়েছে। একটি ঘৃণ্যমহল জাতির জনকের হত্যার বিচার হোক তা চাইছিল না বলেই বিলম্বিত হলো বঙ্গবন্ধুর বিচার। তাদের হেলাফেলায় অনেক সময় গড়িয়ে গেছে। একে একে কেটে গেল চার যুগেরও বেশি সময়। সময় অনেক গড়ালেও এ জাতি তাদের জনকের হত্যার বিচার পেয়েছে। এটা বড়ই আত্মতৃপ্তির। হত্যাকারীদের ফাঁসির বিষয় নিয়ে যারা অতৃপ্ত ছিলেন, তারা এখন তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছেন। এদের সাথে আমিও আজ সুখ অনুভব করছি।
১৫ আগস্ট এলে বড্ড বেশি অপরাধী মনে হতো। ঘৃণা হতো নিজের প্রতি। মুক্তিযোদ্ধাবাবা বড্ড মন খারাপ করে থাকতেন। বলতেন- ‘কী ছাই পাশ লিখিস যে বঙ্গবন্ধুর খুনের বিচার হয় না’। তখন মনে হতো আমরা কতটাই না অসভ্য। জাতির জনকের বিচার সেটাও আমরা করতে পারি না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি নাম, একটি ইতিহাস। বাঙালির ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ সন্তান তিনি। তার জীবন ছিল সংগ্রামমুখর। সংগ্রামের মধ্যেই তিনি বড় হয়েছিলেন। জীবন যৌবনতো পার করেছেন জেলের ভেতরই।
তার জন্ম তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গীপাড়ায়। ছাত্র অবস্থায় তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্টের সরকার গঠন, কপ, পিডিপির আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে মহানায়ক হিসেবে ’৭০-এর নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি আওয়ামী লীগকে এদেশের গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীকে পরিণত করেন। অবিসংবাদিত এই নেতার জীবন চলার পথ ছিল কণ্টকাকীর্ণ।
পাকিস্তানের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলে ’৬০-এর দশক থেকেই তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের অগ্রনায়কে পরিণত হন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ লাখো মানুষের উপস্থিতিতে ঢাকার তৎকালীন ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রম, মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’।
তারই ঘোষণায় উদ্দীপ্ত, উজ্জীবিত জাতি স্বাধীনতার মূলমন্ত্র ধারণ করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। অদম্য সাহস ও অকুতোভয় আত্মত্যাগ, সাংগঠনিক শক্তি নিজের বাঙালি সত্তার গভীর অনুরণন উপলব্ধি করেছিলেন তিনি। দেশবাসীকেও তেমনি অনুপ্রাণিত করেছিলেন সেই সত্তার জাগরণ ঘটাতে। দেশ ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা থেকে এক মোহনীয় স্বপ্ন রচনা করেছিলেন তিনি ধীরে ধীরে, সেই স্বপ্ন সফল করার আহ্বান জানিয়েছিলেন সকলের প্রতি। কী বিপুল সাড়া তিনি পেয়েছিলেন, তার পরিচয় তো আমরা স্বচক্ষে দেখেছি।
১৯৭১ সালে যেভাবে তিনি অসহযোগ আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন, তাতে বিস্মিত হয়েছিল সারাবিশ্ব। মিত্রশক্তির সঙ্গে নৈতিক শক্তির দ্বন্দ্ব পৃথিবীতে এই প্রথম সংঘটিত হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশের এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে ঐক্য, যে শৃঙ্খলা, যে দুর্জয় সংকল্পের পরিচয় পাওয়া গিয়েছিল তার তুলনা হয় না। তারপর সেই ৭ মার্চের ভাষণ, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। যে শুনেছে সে ভাষণে তারই শরীরে বয়ে গেছে বিদ্যুৎপ্রবাহ। কী ছিল সে ভাষণে? দেশপ্রেমে ভরপুর ছিল সেই ভাষণ। কোনো অজ্ঞাত তথ্য নয়, কোনো অপ্রত্যাশিত ঘোষণা নয়, ভাষার কোনো কারুকার্য নয়, বলবার কোনো পরিশীলিত ভঙ্গি নয়। তাতে ছিল এ দেশের সর্বশ্রেণির মানুষের অকথিত বাণীর প্রকাশ, তাদের চেতনার নির্যাস, বক্তব্যের অবিসংবাদিত আন্তরিকতা। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে এই আন্তরিকতার বন্ধন গড়ে উঠেছিল বলেই তো শত্রুদেশে বন্দি থাকা সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধে তার প্রেরণা ছিল সক্রিয়। স্বাধীনতা লাভের জন্য যেমন দৃঢ় সংকল্পবব্ধ ছিল সকলে তেমনি প্রবল আকাঙ্ক্ষা ছিল তার নেতৃত্বে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ে তোলার।
বন্দিদশা থেকে মুক্তিলাভ করে দেশে প্রত্যাবর্তন করেই তিনি বলেছিলেন যদি দেশবাসী খাবার না পায়, যুবকরা চাকরি বা কাজ না পায়, তাহলে স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে; স্বাধীনতা পূর্ণ হবে না। এই ছিল তার স্বপ্নেরই অংশ। সেই স্বপ্ন বাস্তবাায়নের আগেই খুনি ডালিম, মাজেদরা তাকে সপরিবারে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়। এরপর গড়িয়ে গেছে বহু বছর। খুনিদের ধরতে না পারা, বিচার না হওয়া, বিচারের রায় কার্যকর না হওয়া এমন মনোকষ্টেই ছিল দেশবাসী। একে একে খুনিদের রায় কার্যকর হওয়ার মধ্য দিয়ে সেই চাপাপাথর সরে গিয়ে জনগণের কষ্ট লাঘব হচ্ছে। বড্ড সুখ পাচ্ছে দেশপ্রেমিক জনগণ।
কিন্তু আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী? বঙ্গবন্ধুর খুনির লাশ এখন নারায়ণগঞ্জের মাটিতে। নারায়ণগঞ্জের কলঙ্কিত এই মাটি নারায়ণগবাসীকে বড় ব্যথিত করছে। এই ব্যথা লাঘব করবে কে?
লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক।
বিএ/জেআইএম