ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চলমান রাজনীতি

শেখর দত্ত | প্রকাশিত: ০২:৫৪ পিএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

খালেদা জিয়া কি মুক্তি পাচ্ছেন? যদি পান তো কীভাবে পাবেন? প্যারোলো, আইনি প্রক্রিয়ায় জামিনে নাকি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে? এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে কি বিএনপির সমঝোতা হচ্ছে বা হবে? বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল প্রথমে কিছু জানেন না বলেছিলেন কেন? পরে কেন তিনি গোপন সমঝোতার পথ পরিত্যাগ করে হঠাৎ করে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে টেলিফোন করলেন? সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে কি খালেদা জিয়ার পরিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে বিদেশে চিকিৎসার আবেদন জানাল? সরকার কি কোনো শর্ত দিয়েছে? খালেদা জিয়া বা বিএনপি কি শর্ত মানবে? তিনি শর্ত মানলে বিএনপির তৃণমূলে কি প্রতিক্রিয়া হবে? বিএনপি কি দশায় পড়বে? যদি শর্ত মেনে মুক্তি নেন তবে কি খালেদা জিয়ার রাজনীতির ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে? দল হিসেবে বিএনপির অবস্থাটাই বা কী হবে? মা তথা চেয়ারপারসনকে মুক্ত করার ব্যাপারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক জিয়ার অবস্থান কী?

খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিএনপিকে নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন উল্লিখিত প্রশ্নগুলো উঠে আসছে।
প্রসঙ্গত, বিএনপি এতদিন বক্তৃতা-বিবৃতিতে সরকারের উদ্দেশে হুমকি-ধমকি দিয়ে বলত, আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে। সেই সঙ্গে সরকারের পতন ঘটানোর কথাও জোরেশোরে বলা হতো। ২০১৪ সালে নির্বাচনের সময় এবং ২০১৫ সালে সরকারের প্রথম বর্ষপূর্তির দিনগুলোতে বিএনপি জামায়াতকে নিয়ে আন্দোলন সৃষ্টি করতে মাঠে নেমেছিল। নির্বাচন এবং এমনকি আলোচনা বয়কট করে ঠিকই, কিন্তু নেতারা রাস্তায় নামে না। সর্বোপরি ধৈর্য ধরে আন্দোলনকে জনসম্পৃক্ত করার পথে না গিয়ে ভাড়াটে ক্যাডার দিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টিতে তৎপর হয়। নিজেদের ওজন ও ফলাফল নিয়ে হিসাবে চরম ভুল করে বিএনপি। ওই পর্ব শেষ হওয়ার পর আন্দোলন নিয়ে তর্জন-গর্জনই হয় বিএনপির একমাত্র কাজ। ওই তর্জন-গর্জনের আড়ালে কার্যত সমঝোতা তথা পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর পথ খুঁজে বিএনপি।

বিগত নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ ছিল সেই খাপ খাওয়ানো লাইনেরই পরিণতি। কিন্তু তাও ব্যর্থ হয় মূলত দুই কারণে। প্রথমত, বিএনপি দুই নৌকায় পা রাখে। জামায়াত তথা ২০ দলীয় জোট ছাড়ে না আবার ঐক্যফ্রন্টও রেখে দেয়। প্রধানমন্ত্রী বা নেতা কে হবেন, তা তুলে ধরতেও ব্যর্থ হয়। দ্বিতীয়ত, লন্ডনে বসে তারেক জিয়ার মনোনয়ন বাণিজ্য সব শেষ করে দেয়। এই বাণিজ্য ছিল বোঝার ওপর শাকের আঁটি। কোথায় হাওয়া ভবন-খোয়াব ভবনের দুর্নামের বোঝা ঘাড় থেকে নামাবে, তা নয়। বরং লন্ডন কেলেঙ্কারির বোঝা বিএনপির ঘাড়ে চাপে। ফলে নির্বাচনে নেমেও মাঠে থাকে না বিএনপি। শেষ পর্যন্ত তর্জন-গর্জন ও ভুলত্রুটির নানা নাটকের ভেতর দিয়ে সংসদে যোগ দিয়ে বিএনপি পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর পথ নেয়।

বর্তমান দিনগুলোতে বিএনপি নেতারা কখনো অতীতের ভুলের কথা স্বীকার করে আবার কখনো আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারার জন্য হা-হুতাশ করে কেবল পরিস্থিতির সঙ্গে নয়, বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সমর্থক বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে চেষ্টা করছে। মহাসচিব মির্জা ফখরুল সরাসরি স্বীকার করেছেন, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি আন্দোলনের নামে মহা ভুল করেছিল। খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গ টেনে ভুল স্বীকার করে খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী ও বিএনপি নেতা খন্দকার মাহবুব হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমি দুই বছর আগেই প্যারোলের বিষয়ে মত দিয়েছিলাম। তখন আমাদের নেতারা শোনেননি।’ এদিকে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তো প্রতিনিয়ত ভুল সম্পর্কে বলে তারেক জিয়াকে পরামর্শ দিয়ে চলছেন। লন্ডনে বসে স্কাইপিতে বিএনপি নেতাদের কাছে ‘ওহি’ পাঠানো বন্ধ করতে এবং মাস্টার্স বা এমফিল করতে উপদেশ পর্যন্ত দিয়েছেন। পড়াশোনার উপদেশ দিয়ে কার্যত তিনি কী বুঝাতে চেয়েছেন, তা সহজেই অনুমান করা চলে।

এদিকে হা-হুতাশ কীভাবে বিএনপি নেতারা করছেন, তা বুঝা যাবে কোনো কোনো নেতার বক্তব্য থেকে। মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘বিএনপি কি এতই দুর্বল যে কিছুই করতে পারলাম না।’ সরকারকে ‘সমীহ করার প্রয়োজন নাই’, ‘জেলে নিক, নির্যাতন করুক, গুম-খুন করুক’ বলছেন, কিন্তু পুলিশ ব্যারিকেড ভেঙে তিনি নিজেও রাস্তার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন না। নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন করতে না পারায় আমরা লজ্জিত।’ প্রবাদ বলে লজ্জা-মান-ভয় তিন থাকতে নয়। কিন্তু এই ত্রিশঙ্কু তথা অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে রয়েছে বিএনপির নেতৃত্ব।

কেউ মুখ না লুকালেও প্রকাশ্যে লজ্জা পাচ্ছেন, কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করে মান-অভিমান করেছেন আর সবাই আছেন ভয়ভীতির মধ্যে।

রাজনীতির অঙ্গনে একটা কথা আছে যে, রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ক্ষমতার সিংহাসন ও জেলখানা থাকে পাশাপাশি। আজ যিনি রাজা, কাল ‘পাকা চোর’ হিসেবে জেলে থাকতে পারেন। বিএনপি নেতারা কেউ জেলে যাওয়ার রিক্স নিতে পারেননি। সাধেই কি খালেদা জিয়া ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছাড়ার পর সাংবাদিকদের কাছে কেঁদে কেঁদে বলেছিলেন, নেতারা সব ‘আঙুল চোষা’।

প্রকৃত বিচারে খালেদা জিয়ার চরম দুর্ভাগ্য। ভাগ্যবিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছেন তিনি। ছিলেন গৃহবধূ। জানা যায়, ‘ফার্স্টলেডি’ হিসেবে তিনি যখন রাষ্ট্রপতি জিয়ার সঙ্গে থাকতেন, তখন কোনো কথা বলতে দিতেন না জিয়া। একেবারে আনাড়ি অবস্থায় আশির দশকে রাজনীতিতে নেমে বিএনপির জন্য অনেক কিছু করেছেন তিনি। দলকে দুবার ক্ষমতায় এনেছেন। সুবিধাবাদী-সুযোগ সন্ধানী ‘আঙুল চোষাদের’ মন্ত্রী বানিয়েছেন। নিজেও ‘আপসহীন নেত্রী’-এর ভাবমূর্তি দাঁড় করিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা গেল, সবই গরল ভেল। যতদিন বাসস্থান উত্তরপাড়ার শক্তিকেন্দ্র ছিল খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার সঙ্গে, ততদিন তিনি ছিলেন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে।

প্রকৃত বিচারে অবৈধ ছাতা নেই তো জিয়া পরিবারও নেই। একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, এক্ষেত্রে জিয়া আর খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার কোনো পার্থক্য নেই। জিয়াই নিজের লোক বিবেচনায় এরশাদকে সেনাপ্রধান নিয়োগ দিয়েছিলেন। এরশাদ যখন তার পক্ষ থেকে সরে যায়, তখনই জিয়া নিহত এবং পরে বিএনপি গদিচ্যুত হয়। ঘটনাপ্রবাহ পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, খালেদা জিয়ার দুবার ক্ষমতা যাওয়ার পথও রচিত হয়েছিল ওই শক্তি সঙ্গে ছিল বলেই। কিন্তু তারেক জিয়ার হাওয়া ভবনের দৌরাত্ম্যের ফলে সংযোগ হয় বিচ্ছিন্ন। মিত্র হয় শত্রু। সর্বোপরি জাতীয় ও বিশ্ব পরিস্থিতি বিশেষত জাতিসংঘ শান্তি মিশন ফ্যাক্টরের কারণে সেই পরিস্থিতি আর নেই। যদি থাকত তবে ১/১১-এর কুশীলবরা ক্ষমতা ছাড়তেন না। কিংস পার্টি গঠন করে ক্ষমতায় থাকার নীলনকশা কার্যকর করতেন।

এই দিক বিচারে নেতারা আঙুল চোষাই শুধু নয়, সুবিধাবাদী-সুযোগ সন্ধানী। বিএনপির মূল শক্তিকেন্দ্র ধসে যাওয়ায় তারা এখন কার্যত অকার্যকর হয়ে গেছে।

বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির যখন জয়জয়কার তখন বিএনপির অবশ্য সুযোগ ছিল ধৈর্য ধরে জনগণকে নিয়ে পুনরায় দাঁড়ানোর। কিন্তু সেই পথে বিএনপি যায়নি। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি চেষ্টা করেছিল আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে অরাজকতা-অস্থিরতা-অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে ওই শক্তিকেন্দ্রকে কাজে লাগাতে; কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। বাস্তবে ওই শক্তিকেন্দ্রের অনুপস্থিতিতেই যেমন জিয়া-সাত্তার ক্ষমতায় থাকতে পারেননি, তেমনি খালেদা জিয়া ও বিএনপি এখন বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছে। তখন বিএনপিকে উদ্ধার করেছিল তিন জোটের আন্দোলন। বলাই বাহুল্য, ২০০৬-০৮ সালে জরুরি আইনের সরকারের সময়ও বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে রক্ষা করেছিল আওয়ামী লীগের তৃণমূলের আন্দোলন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে গণধিকৃত জামায়াতকে সঙ্গে রেখে জনগণ বর্জিত ক্যাডারভিত্তিক আগুন সন্ত্রাস করে সেই পথকেও রুদ্ধ করে দিয়েছে তারেক জিয়া।

তাই ভাগ্যবিড়ম্বনা জিয়া পরিবার ও বিএনপির জন্য বিধিলিপির মতো অখণ্ডনীয় হয়ে গেছে। বিএনপির পরিস্থিতির সঙ্গে কিছুতেই খাপ খাওয়াতে পারছে না। যতটুকু ধারণা করা যাচ্ছে, খালেদা জিয়াও অধৈর্য হয়ে মুক্তি পেতে মরিয়া হয়ে উঠছেন। এতে দল পড়েছে আরো বিপাকে। বিপাকে পড়ার কারণ নির্ণয় আসলে খুবই সোজা। বিএনপি যখন মুক্তির জন্য সরকারের দ্বারে গেছে, তখন রাজনীতির স্বাভাবিক কৌশল নিয়ে সরকারও খেলছে। পরিবারকে দিয়ে মেডিকেল কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়ে বিএনপির নেতারা মনে করেছিল পার পেয়ে যাবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আড়াল ছিন্ন করে বিএনপি মহাসচিবকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের কাছে টেলিফোন করতে হয়েছে। টেলিফোন করে আবার মুখ লুকাতে চেয়ে মির্জা ফখরুল বলেছেন, কী আলোচনা হয়েছে ওবায়দুল কাদের থেকে শুনতে। এই লুকোচুরি খেলা বিএনপিকে কেবল আরো বিপদে ফেলবে না, গোলকধাঁধার খেলায় পড়ে রাজনীতিতে আরো হাস্যোস্পদ হয়ে পড়বে এবং দলকে অকার্যকর করে তুলবে।

বাস্তব বিচারে বিএনপিকে যদি এখন আবার মাথা তুলে দাঁড়াতে হয়, তবে সত্যকে সত্য মেনে অগ্রসর হতে হবে। সরকারের সঙ্গে প্রকাশ্যে সমঝোতায় যেতে হবে। শর্ত যদি মানতে হয় তবে তা প্রকাশ্যেই করতে হবে। নতুবা নতুন নতুন আরো গোলকধাঁধার খেলার মধ্যে পড়বে। খালেদা জিয়ার এখন বয়স হয়েছে, তাই ভবিতব্যটা মেনে নিয়ে খালেদা জিয়াকে ‘মাইনাস’ করেই বিএনপিকে এখন ভাবতে হবে। প্রশ্ন হলো তার অবর্তমানে বিএনপি নেতা করবে কাকে? তারেক জিয়া বিদেশে থেকে এমন নেগেটিভ ভাবমূর্তি নিয়ে কি বিএনপিকে নেতৃত্ব দিতে পারবে? গ্রহণযোগ্যতা কি তার রয়েছে? বলাই বাহুল্য, রাজনীতিতে নেতাদের গ্রহণ বা বাতিল বলে শেষ কিছু নেই। বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়লে রাজনীতিতে রিক্স নিয়ে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে হয়। তারেক জিয়া দেশে এসে যদি সাহসী অবস্থান নেয়, তবে পরিস্থিতি কখনোবা তার অনুকূল হবে কিনা তা ভবিতব্যই বলবে। নতুবা বিএনপির বিকল্প নেতা না খুঁজে উপায় নেই।

বিএনপির ভেতরে যে বিকল্প নেতা নেই, তা ড. কামালকে নিয়ে ঐক্যজোট করার ভেতর দিয়েই সুস্পষ্ট। তবে নির্বাচন প্রক্রিয়ার চাইতে ফারাকই বেশি হয়েছে। বিএনপির কোনো নেতা বা গ্রুপই ড. কামাল ও ঐক্যফ্রন্টের ওপর ভরসা রাখতে পারছেন না। জানা যায়, ড. কামাল বিএনপির একাংশের কাছে সমালোচিত, গ্রহণযোগ্য নন। এদিকে ঐক্যফ্রন্টে বিএনপি একবারেই সিরিয়াস নয়। ঐক্যফ্রন্টের অনেক নেতা জোট ছেড়েছেন। গণফোরাম দল ভাঙনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। কিন্তু এটাই বাস্তব যে, প্রকৃতির অন্যান্য কিছুর মতোই রাজনীতিতে কোনো প্রক্রিয়া যদি শুরু হয়, তবে তা শেষ হয়েও যেন শেষ হয় না। ইতোমধ্যে ড. কামাল খালেদা জিয়ার মামলায় আইনজীবী হবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি।

অর্থাৎ বিএনপি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। সম্প্রতি ড. কামাল বলেছেন, সরকারকে লাথি দিয়ে তাড়াতে হবে। লাথির জোর কার কতটুকু জনগণের জানা। তাই মানুষ এতে হাসে! এমন কথা ড. কামালের মতো সুশীল রাজনীতিকের মুখ দিয়ে বের হওয়ার কথা নয়। তাই প্রশ্ন থেকে যায়, এমন কথা তার মুখ দিয়ে বের হয়েছে কি বিএনপির সর্বমহলে নেতা হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার জন্য? কে জানে!

বলাই বাহুল্য, রাজনীতিতে হুবহু না হলেও ঘটনার মতো আবারো ঘটনা ঘুরে-ফিরে আসে। বলা হয়ে থাকে বিয়োগান্তক ও প্রহসনের নাটক ঘুরে-ফিরে আসে। বিএনপির জন্য বিয়োগান্তক ঘটনা এই পর্যায়ে মঞ্চস্থ হয়ে গেছে। ঐক্যজোট ও ড. কামালের জন্য ওই পর্বের নাটক সমাপ্ত হয়েছে। এখন কোনো নাটক হলে তা নিতান্তই হবে প্রহসনের। মানুষকে হাসিয়ে বিএনপি বা ড. কামালের কোনো লাভ নেই। এক্ষেত্রে পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের বছরের পর পর ক্ষমতার বাইরে থেকে ধৈর্য ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলার শিক্ষাটি বিএনপি বিবেচনায় নিতে পারে।

সবশেষে এটাও বলতে হয়, পরিস্থিতি বিবেচনায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগেরও কি বেশি খেলা সঙ্গত?

প্রতিদ্বন্দ্বীকে ত্রিশঙ্কু অবস্থায় রাখলে নিজেরও কিন্তু ওই অবস্থায় পড়ার আশঙ্কা থাকে। লেবু বেশি চিপলে তিতা হয়। মুজিববর্ষ তাই বঙ্গবন্ধুর কথা দিয়ে কলামটা শেষ করছি : ‘আমি অনেকের মধ্যে একটা জিনিস দেখেছি, কোনো কাজ করতে গেলে শুধু চিন্তাই করে। চিন্তা করতে করতে সময় পার হয়ে যায়, কাজ আর হয়ে ওঠে না। আমি চিন্তাভাবনা করে যে কাজটা করব তা করেই ফেলি। যদি ভুল হয়, সংশোধন করে নেই। কারণ যারা কাজ করে তাদেরই ভুল হতে পারে, যারা কাজ করে না তাদের ভুল হয় না।’

লেখক : রাজনীতিক।

এইচআর/এমকেএইচ