ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

ম্যাশ এবং এমএস কি একই পথযাত্রী

অঘোর মন্ডল | প্রকাশিত: ০৯:৩০ এএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২০

প্রতিবেশী দুটি দেশের ক্রিকেটে হঠাৎ করে একই রকম দুটি ঘটনা ঘটল। তবে কাকতালীয় ভাবার কোনো কারণ নেই। প্রেক্ষাপটও ভিন্ন। মিল শুধু দুটি জায়গায়। মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি- দুজনই দুই দেশের অধিনায়ক ছিলেন। একজনকে অবশ্য এখনই ‘ছিলেন’ বলা যাচ্ছে না। কারণ মাশরাফির জায়গায় ওয়ান ডে দলের অধিনায়ক হিসেবে কারও নাম ঘোষণা করেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। তবে ধোনি এবং ম্যাশ দুজনই দুই বোার্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে নেই। এটাই আপাতত মিল।

ম্যাশকে বাইরে রেখেই বিসিবি ক্রিকেটারদের কেন্দ্রীয় চুক্তি করেছে। এ রকম খবর গণমাধ্যমে চাউর হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক কথার স্রোত বইয়ে গেছে। অনেকের ক্ষোভ-হতাশাও ছিল। কিন্তু সবকিছুতে জল ঢেলে দিলেন ম্যাশ নিজেই। সাফ জানিয়ে দিলেন, তিনি নিজেই বিসিবিকে বলেছেন- কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকায় তার নাম না রাখতে। সেখানেই শেষ সেই তর্কের। কিন্তু প্রশ্ন, মাশরাফি কি যাচ্ছেন পাকিস্তানে?

প্রশ্নটা বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, কারণ পাকিস্তান সফরে যাচ্ছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর একটা ওয়ানডে ম্যাচও খেলবে তারা। তারপর দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজ। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ দলকে কে নেতৃত্ব দেবেন? সাকিব আল হাসান টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক ছিলেন। কিন্তু তিনি ক্রিকেটে নিষিদ্ধ। সুতরাং টেস্টে হয়তো সেই মুমিনুল আর টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু ওয়ানডের এখনও নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি। পাকিস্তানে কি এক ম্যাচ ওয়ানডেতে তিনি-ই টস করতে নামবেন পাক অধিনায়কের সঙ্গে?

বাংলাদেশ ক্রিকেটে মাশরাফি এখন এমন একটা নাম- যিনি নিজেই বলতে পারেন তিনি যাবেন কি না। কারণ তাকে বাদ দেয়ার সাহস বিসিবির নির্বাচকরা দেখাবেন না। কারণ যে ভদ্রলোক বঙ্গবন্ধু বিপিএলে বাঁহাতে ১৪টা সেলাই নিয়ে দলের জন্য মাঠে নামতে পারেন, তার ক্রিকেটীয় কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। কবে খেলবেন, কবে যাবেন, তা তিনি নিজেই ঠিক করতে পারেন। তবে সেখানেও কোনো ধোঁয়াশা তৈরি হোক সেটা কেউ চান না। মাশরাফি নিজে অবশ্য নিজের অবসরের বিষয়েও পরিষ্কার কিছু বলছেন না।

তবে বিষয়টা ক্রিকেট। ক্রিকেট আপনাকে অনেক কিছু দেয়। আবার অনেক কিছু কেড়েও নেয়। তাই মাশরাফির কাছ থেকে কাউকে কিছু কেড়ে নিতে দেখলে কষ্ট বাড়বে তার ভক্ত সমর্থকদের। হয়তো অস্ফুটস্বরে আতর্নাদও বেরিয়ে পড়বে তাদের মুখ থেকে। যেমন, এমএস ধোনি একসময় ভারতীয় ক্রিকেটে ধোনিরাজ চালু করেছিলেন। কিন্তু সেই ধোনি গত বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালের পর থেকে অদৃশ্য ভারতীয় ক্রিকেটে। শেষ পর্যন্ত মনে হলো তিনি তার ক্যারিয়ারে দাঁড়ির আবছায়া দেখে ফেলেছেন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়লেন এমএস ডি। এর আগে ধোনি নিজের নামের পাশে বাদ শব্দটা দেখেননি। এবার সৌরভ গাঙ্গুলির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে তাকে বাদ দিল। ধোনির অনুসারী এবং তার ভক্তদের কাছে এর প্রভাব ‘ইলেকট্রিক শক’ লাগার মতোই।

ভারতীয় ক্রিকেট দলে একসময় প্রায় সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন এমএস ডি। খানিকটা শ্রীনিবাসের সৌজন্যে। কিন্তু সময় পাল্টেছে। ক্ষমতার সমীকরণ বদলেছে। এখন ধোনিরও সময় আর ভাগ্য বোধহয় বদলে গেল। মাশরাফি অবশ্য বাংলাদেশ ক্রিকেটে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন কোনো বোর্ড সভাপতির সৌজন্য ছাড়াই। বরং মাশরাফির নেতৃত্বের দক্ষতা অনেক বোর্ড সভাপতি বলতে পারেন, আমার সময় বাংলাদেশ বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন ট্রফির সেমি ফাইনালে খেলেছে!

তবে সময় অনেকের দরজায় এসে হাজির হয়; অনেক কিছুর ওপর দাঁড়ি টেনে দিতে। সেটা নিশ্চিয়ই ম্যাশ জানেন।

লেখক: সিনিয়র জার্নালিস্ট ও কলামিস্ট।

এইচআর/বিএ/পিআর