দেখা হবে বিজয়ে
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস সময়টার কথা আমি ভাবি মাঝে মাঝে। সাড়ে সাত কোটি মানুষের অনিশ্চিত জীবন, উৎকণ্ঠার জীবন, বেদনার সময়, সামনে মৃত্যু, পেছনে অনিশ্চয়তা- এভাবেই কেটেছে সবার জীবন। যারা জীবনের মায়া না করে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, যে এক কোটি মানুষ ভারতের বিভিন্ন ক্যাম্পে ছিল সবারই অনিশ্চিত জীবন। অবরুদ্ধ বাংলাদেশে আটকা পড়েছিল যে সাড়ে ৬ কোটি মানুষ, তাদের অনেককেই বারবার অবস্থান বদল করতে হয়েছে। যারা নিজের ঘরে ছিলেন, উৎকণ্ঠায় তারাও ঘুমাতে পারতেন না।
মুক্তিযুদ্ধের সময়টা আমরা দাউদকান্দির সালিয়াকান্দি রঘুনাথপুরের নানাবাড়িতে ছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের দুইবছর আগে সেখানেই আমার জন্ম হয়েছিল। আমাদের গ্রামের বাড়ি শহীদনগর ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের একদম পাশে। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী দ্রুতই আমাদের এলাকায় ক্যাম্প করে। তারা আমাদের এলাকার মানুষের হাস, মুরগী, গরু, ছাগল, ফল, সবজি সব লুটে নিতো। হানাদারদের ভয়েই আমরা পালিয়ে গিয়েছিলাম রঘুনাথপুরে। এখন সেখানে গাড়ি যায়। কিন্তু একাত্তরে সেটি সত্যি দুর্গম ছিল। বর্ষায় নৌকা, শুকনায় হাঁটা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।
মুক্তিযুদ্ধের ছোট্ট দুয়েকটা স্মৃতি চকিতে মনে পড়লেও বিজয়ের স্মৃতি মনে নেই। যোগাযোগের সব ধরনের সুবিধা বিবর্জিত সেই অজপাড়াগায়ে বিজয়ের খবরটি কীভাবে পৌঁছেছিল, তাও আজ আর মনে নেই। তবে আমি মাঝে মাঝে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের ক্ষণটির কথা ভাবি। এখনও ভাবতে গেলে আমি শিহরিত হই, আনন্দিত হই। নানান স্মৃতিকথা, গল্প-উপন্যাস, সিনেমায় বিজয় নিয়ে অনেকের অনেক কল্পনার কথা পড়ি। কেউ প্রিয়জনকে পাশে নিয়ে রাস্তায় দৌড়ে দৌড়ে হারমনিকা বাজাতে চেয়েছে, কেউ পোষা পাখি ছেড়ে দিতে চেয়েছিল, কেউ দম আটকে রাখা ঘড়িতে দম দিতে চেয়েছিল।
আসলেই গোটা বাংলাদেশেরই দম আটকে ছিল, ১৬ ডিসেম্বর সবাই নতুন করে দম নিয়েছে। বিজয় এসেছে একই সঙ্গে আনন্দ, বেদনা, স্বস্তি, কান্না নিয়ে। বিজয় এসেছিল ৩০ লাখ শহীদের রক্তে স্নান করে, বিজয় এসেছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের তাজা রক্তে পা ডুবিয়ে, প্রিয়জন হারানোর বেদনায় কাঁদবে না বিজয়ের আনন্দে হাসবে; এ এক অদ্ভুত মিশ্র অনুভূতি।
বিজয় অর্জেনর ৪৮ বছর পেরিয়ে গেছে। বাংলাদেশ এখন পূর্ণপ্রায়। কিন্তু যে আকাঙ্খায় মানুষ যুদ্ধ করেছে, বিজয় ছিনিয়ে এনেছে; তার কতটা পূরণ হয়েছে? এখনকার বাংলাদেশের জন্যই কি জীবন দিয়েছিলেন ৩০ লাখ মানুষ? প্রায় পাঁচ দশক পরও এই প্রশ্নে আমাদের মিশ্র অনুভূতি। ধর্মরাষ্ট্র পাকিস্তান ভেঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষ একটি দেশ গড়তে চেয়েছিলাম আমরা। আমরা চেয়েছিলাম একটি বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত, গণতান্ত্রিক, উন্নত বাংলাদেশ। কিন্তু স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে যে রক্ষা করা কঠিন। সেটা টের পেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু নিজেই। তিনি যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে ব্যস্ত; তখন একটি মহল থানা লুট, পাটের গুদামে আগুন, এমপি খুন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় গুলির মত ঘটনায় তাকে বিব্রত করেছে। আরেকটি মহল ব্যস্ত ছিল লুটপাট আর দুর্নীতিতে।
বঙ্গবন্ধু বারবার আফসোস করেছেন, চোরের খনি পাওয়ার কথা বলেছেন, নিজের কম্বলের খোঁজ করেছেন। এতকিছুর মধ্যেও বঙ্গবন্ধু লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা তাঁকে সাড়ে তিনবছরের বেশি সে লড়াইটা চালাতে দেননি। ৭৫ এর ১৫ সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আবার পেছনের পায়ে হাঁটতে থাকে বাংলাদেশ। যারা স্বাধীনতা চাননি, যাদের হৃদয়ে পাকিস্তান; শারীরিক ও মানসিকভাবে আটকে পড়া পাকিস্তানীরা বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র করতে থাকে। বারবার ছুরি চালিয়ে ক্ষতবিক্ষত করা হয় সংবিধান। সামরিক শাসকদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে ধর্মকে লাগে। এক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতাকে ছুড়ে ফেলেন।
আরেক সামরিক শাসক এরশাদ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করেন। দুয়ে মিলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অর্জিত ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশকে আবার ধর্মরাষ্ট্র বানানোর সকল আয়োজন সম্পন্ন করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে রাজাকাররা প্রধানমন্ত্রী হয়, তাদের গাড়িতে ওড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে আঁকা লালসবুজের পতাকা। জাতির জনকের খুনীদের বিচার করা যাবে না, এসন একটি জংলি আইনের বলে বঙ্গবন্ধর খুনিরা সংসদ পর্যন্ত কলঙ্কিত করে আসে। ২১ বছর পরা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ যখন আসে, তখন তাঁর সামনে অনেক কাজ। সংবিধানকে এতবার এতভাবে কাটাছেঁড়া করা হয়েছে যে তাকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়াই কঠিন। তবু শেখ হাসিনা সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাকে পুনঃস্থাপন করেছেন। তবে ভোটের হিসাবে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এখনও রয়ে গেছে। এই বৈপরীত্য নিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা নিজে একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম, কিন্তু সত্যিকার অর্থেই ধর্মনিরপেক্ষ চেতনাকে ধারণ করেন। কিন্তু রাজনীতির হিসেবে তাঁকে অনেকসময় অনেক অপ্রিয় কাজও করতে হয়। জামায়াতকে শায়েস্তাকে করতে কাছে টানেন হেফাজতকে। এটাই রাজনীতির বৈপরীত্য। তবুও আমরা একটি ধর্মনিরেপেক্ষ বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রাম চালিয়েই যেতে হবে।
এবারের বিজয় দিবসের প্রাক্কালে আরেকটি বড় কাজ করলো শেখ হাসিনার সরকার। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রথম ধাপে ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করেছেন। এই তালিকা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। যাচাই-বাছাই করে ধাপে ধাপে আরও তালিকা প্রকাশ করা হবে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘যাঁরা ৭১ সালে রাজাকার, আলবদর, আল শামস বা স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক নিয়োগ পেয়েছিলেন এবং যেসব পুরোনো নথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত ছিল, সেটুকুই প্রকাশ করা হয়েছে।
দালিলিক প্রমাণ সাপেক্ষে শতভাগ নিশ্চিত হয়েই কেবল নাম প্রকাশ করা হবে এবং অন্যায়ভাবে কেউ তালিকাভুক্ত হবে না। তার মানে এখানেও প্রতিহিংসার ব্যাপার নেই। শুধু ইতিহাস রক্ষার জন্যই এই তালিকা করা হচ্ছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী ২৬ মার্চের আগেই মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। আর আগামী শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আগেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকাও প্রকাশ করা হবে। ৭৫এর পরে বারবার ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। তাই ইতিহাসের সত্যটা তুলে ধরাও একটা বড় কাজ। এই তালিকাগুলো সঠিকভাবে করতে পারলে, বিকৃতির হাত থেকে ইতিহাসকে রক্ষা করা যাবে।
২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের উদ্যোগ নেন। কিন্তু পিতা হত্যার বিচারও তিনি করেছেন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শেষ করতে আওয়ামী লীগকে দুই দফায় ক্ষমতায় আসতে হয়েছে। অথচ চাইলে তিনি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল করে বিচারের নামে প্রহসন করে আত্মস্বীকৃত খুনিদের ফাঁসি দিতে পারতেন। তিনি তা করেননি। আস্থা রেখেছেন বিচারের প্রক্রিয়ায়। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করে তিনি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে তিনি নিয়েছেন আরো বড় রাজনৈতিক ঝুঁকি। শুরু করেছেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ। সে প্রক্রিয়া এখনও চলছে। ইতিমধ্যেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামান, মীর কাশেম আলী এবং সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর।
একসময় বাংলাদেশের কেউ বিশ্বাসই করতে পারেননি, এই দোর্দণ্ড প্রতাপশালী রাজনীতিবিদদের ফাঁসি দেয়া সম্ভব। শেখ হাসিনার দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকারের কারণেই সেটা সম্ভব হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রেও তিনি কোনো তাড়াহুড়ো করেননি। স্বাভাবিক বিচার প্রক্রিয়ায়, আপিল-রিভিউ সব সুবিধাসহ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলছে। এই দুটি ঘটনায় শেখ হাসিনা বিচার ব্যবস্থার প্রতি তার দৃঢ় আস্থার প্রমাণ রেখেছেন। এমনকি পিতা হত্যার বিচারেও তার মধ্যে কোনো প্রতিহিংসার ছাপ ছিল না। তিনি ন্যায়বিচার চেয়েছেন, প্রতিশোধ নয়। কিন্তু তাঁর সরকারের আমলেই ক্রসফায়ার, গুমের মত বিচারবহির্ভূত কর্মকাণ্ড বারবার আলোচনায় এনেছেন মানবাধিকার কর্মীরা। গণতান্ত্রিক স্পেস, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, বিরোধী রাজনৈতিক দলের তৎপরতা প্রসঙ্গেও সরকারের সমালোচনা করার অবকাশ রয়েছে। তবে একটা কথা মানতেই হবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশ্নে বাংলাদেশ গোটা বিশ্বেই বিস্ময় হয়ে আছে। পাকিস্তানের মানুষ এখন তাদের দেশকে বাংলাদেশের মত করে দেয়ার দাবি জানায়। অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে, তবে তা সমভাবে বণ্টিত হয়নি।
দারিদ্র্যের হার অনেক কমেছে। তবে এখনও প্রকট এবং প্রায় বিপদজনক বৈষম্য রয়েছে সমাজে। অল্প মানুষের হাতে অনেক বেশি সম্পদ পুঞ্জিভূত। পাকিস্তান আামলে ২১ পরিবারের গল্প বলা হতো। কিন্তু এখন বাংলাদেশে কোটিপতির সংখ্যা লাখের ওপরে। দুদিন আগে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশ বিপজ্জনক আয়বৈষম্যের পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। তিনি জানিয়েছেন, ১৯৭২ সালে গিনি সহগ ছিল শূন্য দশমিক ৩৩, এখন যা শূন্য দশমিক ৪৮। গিনি সহগ আয়বৈষম্য প্রকাশ করে। এই সূচক শূন্য দশমিক ৫ হলে তা বিপজ্জনক মাত্রায় চলে গেছে বলে ধরা হয়। তার মানে বাংলাদেশ এখন প্রায় বিপজ্জনক দেশ। এটা কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়া। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ‘সোনার বাংলা শশ্মান কেন?’ শিরোনামের একটি ছোট পোস্টার আওয়ামী লীগের বিশাল জয়ে বড় অবদান রেখেছিল। সেই পোস্টারে ১০টি খাতে বাংলাদেশ আর পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্যকে তুলে ধরা হয়েছিল। সেই বৈষম্য কিন্তু এখনও সমাজে রয়ে গেছে। এখন আমরা কার কাছে বিচার চাইবো, কার কাছে প্রশ্ন করবো?
দেশ এগুনোর পথে সবচেয়ে বড় বাধা দুর্নীতি। এটা বঙ্গবন্ধু বুঝেছিলেন, তাঁর কন্যাও বুঝেছেন। একে একে শেখ হাসিনা দেশকে গ্লানিমুক্ত করছেন, জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করছেন। এখন তিনি লড়াই শুরু করেছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে। ‘আপনি আচরি ধর্ম, অপরে শেখাও’ মেনে শেখ হাসিনা দুর্নীতির লড়াইটা শুরু করেছেন দলের ভেতর থেকে। অতীতে শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন, তিনি যেটা ধরেন, সেটা শেষ দেখে ছাড়েন। আশা করি দুর্নীতিরও শেষ দেখেই ছাড়বেন।
দুর্ধর্ষ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সাথে লড়াই করে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় পেয়েছিলাম। ভৌগোলিক স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে আমাদের আরো অনেকগুলো লড়াই জিততে হবে, অর্জন করতে হবে বিজয়। এবারের লড়াই দুর্নীতির বিরুদ্ধে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, গণতন্ত্র-মানবাধিকার অর্জনের লড়াই। এইসব লড়াই জিতলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হবে, মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ হবে। এ লড়াই জেতা কঠিন তবে অসম্ভব নয়। দেশের প্রতি সত্যিকারের ভালোবাসা থাকলে সহজেই পাওয়া যাবে সত্যিকারের বিজয়। দেখা হবে বিজয়ে।
এইচআর/এমএস