ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে হলে...

সম্পাদকীয় | প্রকাশিত: ০৯:০১ এএম, ০৬ আগস্ট ২০১৯

আগামী ১২ আগস্ট পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। প্রতিবছরই বিপুল সংখ্যক মানুষ পরিবার পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য শহর ছেড়ে গ্রামে যায়। তাদের যাত্রা নিরাপদ এবং নির্বিঘ্ন করাটাই এখন সবচেয়ে বেশি জরুরি। বিশেষ করে ঈদযাত্রায় সড়ক-মহাসড়কে যানজট চরম আকার ধারণ করে। এ নিয়ে নিয়ে মানুষের দুর্ভোগের কোনো সীমা পরিসীমা নেই। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার এখন থেকেই।

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে কর্তৃপক্ষের নানা ধরনের পদক্ষেপ থাকে। এবার ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে যাত্রীদের জন্য এক ডজন সুপারিশ করেছে শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম (এসসিআরএফ)। এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি আশীষ কুমার দে ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সবুজ এই সুপারিশ উত্থাপন করেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঈদ-যাতায়াত পরিস্থিতির আলোকে সুপারিশগুলো তৈরি করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়। সুপারিশগুলো হলো- ১. দুর্ঘটনারোধে সারাদেশে রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস ও রুট পারমিটবিহীন সব ধরনের গাড়ি চলাচল বন্ধ করা; ২. বাস টার্মিনাল ও কাউন্টারগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ সকল টার্মিনাল ও মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ; ৩. বাসের ছাদ, ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে যাত্রী পরিবহন বন্ধে জাতীয় মহাসড়ক, আন্তঃজেলা সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা; ৪. সারাদেশে একযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সকল জেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে সম্পৃক্তকরণ; ৫. অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও টিকিট কালোবাজারি বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ; ৬. দূরপাল্লার সড়কে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চলাচল ও বেআইনিভাবে ওভারটেকিং বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ; ৭. জাল লাইসেন্সধারী ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের গাড়ি চালানো ও চলন্ত অবস্থায় চালকদের মুঠোফোন ব্যবহার বন্ধে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে ক্ষমতা প্রদান; ৮. জাতীয় মহাসড়ক ও আন্তঃজেলা সড়কে অটোরিকশা, ইজিবাইকসহ তিন চাকার সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করা; ৯. দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের অন্য জেলাগুলোর নির্বিঘ্ন সড়ক যোগাযোগের জন্য শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে নিরবচ্ছিন্ন ফেরি ও লঞ্চ চলাচল নিশ্চিতকরণ; ১০. ঈদের আগে শিমুলিয়া ও পাটুরিয়া এবং ঈদের পরে কাঁঠালবাড়ি ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে সাতদিন করে ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জোর তৎপরতা পরিচালনা; ১১. ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-মাওয়া ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুঃসহ যানজট রোধে সড়ক-সংলগ্ন অবৈধ সব স্থাপনা উচ্ছেদ ও ট্রাফিক আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং ১২. সকল আন্তঃজেলা রুটের নৈশবাস ছাড়ার আগে যাত্রীদের ভিডিওচিত্র ধারণ করে তা সংরক্ষণ করা।

দূরপাল্লার সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ ও সংস্কার কাজ চলমান থাকায় তীব্র যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। এবার ঝড়বৃষ্টির মৌসুমে ঈদ উদযাপিত হওয়ায় সড়কও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এ ছাড়া সারা বছর যে হারে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে তাতে জনমনে এক ধরনের আতঙ্ক তো রয়েছে। জননিরাপত্তার স্বার্থে আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে এই ১২ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের প্রতি আমরা আহ্বান জানাই।

বিপুল সংখ্যক মানুষ যারা মাটির টানে প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদ করতে গ্রামে যাবেন তাদের আনন্দ যেন যাত্রাপথের ভোগান্তিতে নষ্ট না হয়ে যায় সেইদিকে নজর দেওয়াই এখনকার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। এ ব্যাপারে কোনো উদাসীনতা কাম্য নয়। কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থায় মাটির টানে বাড়ি ফেরা মানুষজন নির্বিঘ্নে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে এটিই আমাদের প্রত্যাশা।

এইচআর/পিআর

আরও পড়ুন