গণপিটুনিতে হত্যা : এক ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুরতা
এটা খুবই উদ্বেগের বিষয় যে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা ঘটেই চলেছে। নিরীহ নিরপরাধ মানুষ এর শিকার হচ্ছে। অনেক সময় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেও টার্গেট করা হচ্ছে। এতে একদিকে নিরীহ মানুষের জান যাচ্ছে অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতি ঘটছে। আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার এই প্রবণতা বন্ধ করতে না পারলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। অবিলম্বে এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে এক নারীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। শনিবার (২০ জুলাই) সকাল পৌনে ৯টার দিকে উত্তর বাড্ডার কাঁচাবাজারের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত নারী স্বামী পরিত্যক্তা। তার দুই শিশু সন্তান রয়েছে। তাদের ভর্তি করানোর জন্য স্কুলে খোঁজ-খবর নিতে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু মানুষের নিষ্ঠুরতা তাকে বাঁচতে দিল না।
অন্যদিকে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পূর্বপাড়া আল-আমিন নগর এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হন সিরাজ। পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি সিরাজের ভাই ও এলাকাবাসীর। সহজ-সরল এ প্রতিবন্ধীর হত্যাকারীদের বিচার দাবি করে রোববার বেলা ১১টায় এলাকায় মিছিল করেছেন এলাকাবাসী।
গণপিটুনিতে হত্যা ফৌজদারি অপরাধ। এটি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। গুজবের ওপর ভিত্তি করে কাউকে সন্দেহবশত হত্যা করা মেনে নেয়া যায় না। কারো গতিবিধি সন্দেহজনক হলে অথবা কেউ যদি অপরাধের সাথে জড়িত থাকে তাহলে জনসাধারণের কাজ হচ্ছে তাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা। আইন হাতে তুলে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আস্থাহীনতায়ই মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নেয়- এমন অভিযোগও আছে। এই আস্থার সংকট দূর করতে হবে।
কেউ যেন কোনো গুজব রটাতে না পারে সেদিকেও জোর নজর দিতে হবে। যে কোনো মূল্যে গণপিটুনিতে হত্যা বন্ধ করতে হবে। নাহলে যে কেউ যে কোনো স্থানে এর শিকার হতে পারে।
এইচআর/পিআর