খুনিদের উল্লাস নৃত্য আর কতদিন?
নৃশংসতার চরম বহিঃপ্রকাশ দেখলো বরগুনার মানুষ। কতটা উদ্ধত ও বেপরোয়া হলে প্রকাশ্যে দিনের আলোর শত শত মানুষের সামনে একজন জলজ্যান্ত মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করা যায় সেটিই ভাবিয়ে তুলছে। খুনিদের উল্লাস নৃত্য আর কতদিন দেখতে হবে সেটিই এখনকার বড় প্রশ্ন।
স্ত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার এই নৃশংসতম ঘটনাটি ঘটে। বুধবার সকালে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে বের হন হত্যাকাণ্ডের শিকার রিফাত। বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে এলে প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে স্বামী রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করে বরগুনা পৌরসভার ধানসিঁড়ি সড়কের আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে নয়ন বন্ড এবং তার প্রতিবেশী দুলাল ফরাজীর ছেলে রিফাত ফরাজী। বুধবার সকাল ১০টার দিকে নয়ন নামে এক যুবকের নেতৃত্বে ৪-৫ জন সন্ত্রাসী রিফাতকে দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে যায়। এ সময় বারবার সন্ত্রাসীদের হাত থেকে স্বামীকে বাঁচাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।
একপর্যায়ে গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪টার দিকে রিফাত মারা যান। রিফাতের বাড়ি সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের উত্তর বড়লবণগোলা গ্রামে।
এ ধরনের হত্যাকাণ্ড অশনি সংকেত দিচ্ছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতার অভিযোগও উঠছে জোরেশোরে। অপরাধীরা শাস্তি পেলে অপরাধ প্রবণতা কমে। কিন্তু বিচারের দীর্ঘসূত্রতা এবং আইনের ফাঁক গলে অপরাধীর মুক্ত হয়ে যাওয়াও সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ফলে ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেই চলেছে। এভাবে একের পর এক ঘটনা ঘটার কারণে মানুষ আইন-আদালতের প্রতিও আস্থা হারিয়ে ফেলছে। প্রতিবাদ প্রতিরোধেও শামিল হচ্ছেনা। কারণ নিরাপত্তাহীনতা।
হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। একজন গ্রেপ্তারও হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন। দেশব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছে এই নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডে। এখন হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও যথোপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করার মাধ্যমেই কেবল এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধ করা যেতে পারে।
এইচআর/এমএস