ভিডিও EN
  1. Home/
  2. মতামত

নির্বাচনে জয়লাভই মুখ্য বিষয়

শেখর দত্ত | প্রকাশিত: ০১:১৪ পিএম, ০৯ জানুয়ারি ২০১৯

মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের ভেতর দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন সম্পন্ন হলো। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচন হলো সাংবিধানিক-নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর যুদ্ধ বিশেষ। যুদ্ধে জয়লাভের জন্য যেমন লক্ষ্য-নীতি-কৌশল ঠিক করা, সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করা, সপক্ষে ঐক্য-সংহতি বজায় রাখা, মিত্র বাড়িয়ে শত্রুকে বিচ্ছিন্ন করা, প্রচারে শত্রুকে কাবু করা, শত্রুর সীমাবদ্ধতা ও দুর্বলতাকে সর্বতোভাবে ব্যবহার করা, আক্রমণাত্মক ও রক্ষণাত্মক কৌশলের সম্মিলন ঘটানো, ভারসাম্যকে নিজ পক্ষে আনা এবং সর্বোপরি সেনাপতি সামনে রাখা প্রয়োজন; ঠিক তেমনি নির্বাচনে বিজয়ের জন্যও এ ধরনের সবকিছুই প্রয়োজন।

যুদ্ধ বা খেলায় যেমন তেমনি নির্বাচনেও জয়লাভই মুখ্য বিষয়। দলকে রাজনৈতিক-সাংগঠনিকভাবে গুছিয়ে নিয়ে বিরোধী পক্ষকে আক্রমণাত্মক কৌশল প্রচার ও কর্মকান্ডে সম্পূর্ণ কাবু ও বিচ্ছিন্ন করে লক্ষ্য অর্জনে সক্ষমতা, সাহস, বিচক্ষণতা দেখিয়ে জনগণকে পক্ষে রাখা সম্ভব হলেই কেবল নির্বাচনে বিজয়ের মালা গলায় পরা সম্ভব। বর্তমান বিশ্বে বিশেষত আমাদের মতো দেশের জন্য বিজয়ী দলের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত বলা যায়, আমেরিকার নির্বাচনে রাশিয়া কীভাবে কতটুকু নাক গলিয়েছিল, ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের নির্বাচনে সাম্প্রদায়িকতা কতটুকু ব্যবহার হয়েছিল কিংবা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড একমুখী করতে পুঁজিপতিরা অর্থ দিয়ে কোন দলকে সাহায্য করেছিল, চীনে কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হয় প্রভৃতি শেষ বিচারে ক্ষমতার প্রশ্নে কোনো বিষয় নয়।

একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী যুদ্ধে উল্লিখিত সবদিক থেকেই আওয়ামী লীগের তুলনায় বিএনপি একশ আশি ডিগ্রি পিছিয়ে ছিল। বাংলাদেশের নির্বাচনের পর ভারতের প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কলাম লেখক সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, বিগত ভারতীয় নির্বাচনে ‘নেতৃত্বের প্রশ্নটি কংগ্রেস উহ্য রেখেছিল।

দেশবাসীকে তারা জানাতে পারেনি, ভোটে জিতলে ওদের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন। মানুষ তাই ওদের ভোট দেয়নি।’ ভারতে নির্বাচনের সময়ে কংগ্রেসের চাইতেও এবারের নির্বাচনের সময় বিএনপির অবস্থা ছিল সবদিক থেকে বহুগুণে কাহিল।

যে ফ্রন্টের সেনাপতি বা প্রধানমন্ত্রী নেই কিংবা পলাতক আসামি, একদিকে জামায়াত আর অন্যদিকে কামাল থাকায় লক্ষ্য অস্পষ্ট ও কুয়াশাচ্ছন্ন এবং সংগঠন বহুধাবিভক্ত ও মাঠে নিষ্ক্রিয়; সেই দল কখনো জিততে পারে না। বিএনপি এসব কারণে গো-হারা হারবে বলে নির্বাচনের আগেই এ কলামেও লেখা হয়েছিল। নির্বাচনে যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। বর্তমান দিনগুলোতে অবস্থা পর্যবেক্ষণে বলা যায়, নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতিতে ওই ত্রিভঙ্গমুরারীরূপী ঐক্য পড়েছে আরো ফাটা বাঁশের চিপায়।

ঐক্যফ্রন্টের কোন নেতা কি বলেছেন তা নিয়ে আলোচনায় না গিয়েও অবস্থাদৃষ্টে বলা যায়, অন্তত গণফোরামের দুই বিজয়ী প্রার্থী (একজন জিতেছে নিজ দলের মার্কা সূর্য নিয়ে আর অন্যজন ধানের শীষ ধার করে) শপথ নিয়ে সংসদে যেতে ইচ্ছুক। অনুমান করা যায়, নেতৃত্বহীন ও বহুধাবিভক্ত বিএনপি রয়েছে শাঁখের করাতের মধ্যে, সংসদে গেলে দল ভাঙবে আর না গেলে বিগত ৫ বছরের মতো বাইরে কিংকর্তব্যবিমূঢ় ও ছন্নছাড়া হয়ে ঘুরে বেড়াবে।

এদিকে ভোটের পরও মহাজোটের কৌশলের কাছে তারা আরো কোণঠাসা হয়ে আছে। জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের ভূমিকা নিবে বলে অবস্থান গ্রহণ করায় বিএনপির প্রধান বিরোধী পক্ষ হওয়ার আর সুযোগ নেই। ক্ষমতার সোনার চামচ মুখে নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে প্রতিষ্ঠিত এবং সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনের ভেতর দিয়ে দুবার ক্ষমতায় যাওয়া দলটির জন্য এমন অবস্থা হচ্ছে যথার্থভাবেই স্বর্গ থেকে পতন।

এ ক্ষেত্রে বলতেই হয়, নির্বাচনী পর্বের শেষ অঙ্কে মন্ত্রিসভা গঠনে কুশলতা বা চমক দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি ও তার বাম-ডান মিত্রদের মুখ আরো বন্ধ এবং বাস্তবে আরো বিপর্যস্ত করে দিয়েছেন। মন্ত্রিসভায় অনেকের যেমন প্রস্থান, তেমনি কয়েকজনের অবস্থান ও অনেকের প্রবেশের ঘটনা ঘটেছে।

এমনটা মানেই হচ্ছে গতি ও অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ, যা সদ্য নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত মন্ত্রিসভাকে প্রদত্ত অঙ্গীকার ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ অর্জনে অনুপ্রেরণা জোগাবে। প্রসঙ্গত বিগত সময়ের বিতর্কিত-সমালোচিতরা যেমন মন্ত্রিসভায় নেই, তেমনি নেই হেভিওয়েট নেতা এবং আত্মীয়রা।

প্রথম রাতে বিড়াল মারার মতো সমালোচনার সব উৎসমুখ প্রধানমন্ত্রী বন্ধ করে দিয়েছেন। সহজেই ধারণা করা যায়, দলের বর্ষীয়ান নেতাদেরও প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনার কাজে যথাযথভাবে পদ-পদবি দিবেন। তবে ১৪ দলীয় জোটভুক্ত ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদকে কীভাবে সামাল দিবেন তা এখনো অস্পষ্ট। নিঃসন্দেহে এই দিকটিও প্রধানমন্ত্রী বিবেচনায় নিয়েই নতুন সরকারের কাজ নতুন উদ্যমে অগ্রসর করে নিবেন।

সার্বিক বিচারে এই নির্বাচনের ভেতর দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রাপ্তি হচ্ছে- দলটি গণসমর্থনের বিস্তৃতি ঘটিয়ে পক্ষভুক্ত জনগণকে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করে সক্রিয় করতে যেমন সক্ষম হয়েছে, তেমনি গণসম্পৃক্ত প্রবীণ-নতুন নেতা, যাকে বলে ‘গ্যালাক্সি অব লিডার্স’, জনগণের কাছে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে।

নির্বাচনী ইশতেহারের আওয়ামী লীগ বলেছে যে, বিগত ১০ বছরে ‘বিশ্বস্ততার সঙ্গে কাজ’ করা ও ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের’ ফলে সৃষ্টি হয়েছে সরকার, আওয়ামী লীগ ও জনগণের মেলবন্ধন, যাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে আরো সুদৃঢ় ও সুসংহত করতে হবে। নেতা-জনতার এই পবিত্র মেলবন্ধনকে যদি সরকার ও দলের কর্মকান্ডের ভেতর দিয়ে অগ্রসর করে নিতে পারে, তবে আওয়ামী লীগের পক্ষে সব চ্যালেঞ্জকেই মোকাবেলা সম্ভব।

এটা তো ঠিক যে, বিজয় যত বড় জনগণের প্রত্যাশা তত বেশি, দায়িত্ব তত বিশাল। কবিগুরু গেয়েছিলেন, ‘তোমার পতাকা যারে দাও তারে বহিবারে দাও শকতি।’ শক্তির প্রমাণ সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ তিনবারের শাসনামলে দেখিয়েছে।

সাফল্য ও অর্জন এমনি এমনি আসেনি, বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করেই ছিনিয়ে আনতে হয়েছে। তাই সঞ্চিত শক্তি ও সামর্থ্যকে সবক্ষেত্রে যথাযথভাবে ব্যবহার করে অগ্রসর হওয়া ভিন্ন আওয়ামী লীগের অন্য কোনো বিকল্প নেই। স্বাভাবিকভাবে বিরাট জয়ের কারণে মানুষ এখন থাকবে প্রতিনিয়ত কিছু প্রাপ্তির জন্য উন্মুখ এবং অনভিপ্রেত কিছুর জন্য হবে স্পর্শকাতর।

সরকার ও দলের পক্ষ থেকে কোনো বিঘ্ন-বিপত্তি ও অনভিপ্রেত কিছু ঘটলে বা প্রত্যশা অনুযায়ী প্রাপ্তি না হলে বা মন্ত্রী-নেতারা বাড়তি বেফাঁস কথা বললে এবারে মানুষের প্রতিক্রিয়া হবে বেশি।

নির্বাচনের পর বিজয় মিছিল না করে এবং বিশেষভাবে ২০০১ সালের বিজয়ী বিএনপির মতো বিরোধী পক্ষের প্রতি মারমুখী না হয়ে আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে বেশ দূরদর্শিতা ও পরিপক্বতার স্বাক্ষর রেখেছে। নির্বাচনের পর ফরিদপুরের ভাঙা ছাড়া আর কোথাও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়নি।

একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, সুবর্ণচরে একটি গণধর্ষণের কারণে জনমনে তীব্র বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে। প্রথম আলো পত্রিকা সম্পাদকীয়তে লিখেছে যে, সুবর্ণচরের ঘটনায় ‘কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশি রিমান্ডে নেয়া হয়েছে এটা নির্বাচনের পরে সংঘটিত অপরাধগুলোর ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের প্রথম দৃশ্যমান পদক্ষেপ।

এর মধ্য দিয়ে অন্তত এটা মনে হতে পারে যে এসব অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশ পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েনি।… এই সক্রিয়তা থেকে তাদের কাছে এমন বার্তা যেতে পারে যে অপরাধ করে পার পাওয়া যাবে না। সারাদেশে এমন বার্তা পৌঁছে দেয়া দরকার।’

সুবর্ণচরের ব্যাপারে এমন ত্বরিত গ্রেপ্তার-রিমান্ড তৎপরতা ইশতেহারে বর্ণিত ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিরই যথার্থ প্রতিফলন। শুরুটা আওয়ামী লীগ ভালোই করল। ইতোমধ্যে শহর-গ্রামে যোগাযোগ করে জেনেছি, ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ এবং ‘তারুণ্যের শক্তি- বাংলাদেশের সমৃদ্ধি’- এই দুই প্রধান স্লোগানসহ অর্থনৈতিক কর্মসূচি আওয়ামী লীগ সরকার বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে কর্মী-সমর্থকসহ জনগণ দৃঢ়ভাবে মনে করে।

তেমনি অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ও উপমহাদেশীয় কূটনীতির ভারসাম্য পারদর্শিতার সঙ্গে রক্ষা করতে সরকার সক্ষম বলেও বিশ্বাস করে। কিন্তু দুর্নীতি ও সন্ত্রাস বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করে সরকার তা টিকিয়ে রাখতে পারবে কিনা প্রশ্ন নিয়ে অনেকেই সন্দিহান।

তবে একান্ত ভরসা রাখছে কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি। বলার অপেক্ষা রাখে না, যে পরিমাণে বিরোধী শিবিরের লোক আওয়ামী লীগে ঢুকেছে তাতে এই নীতি ধারাবাহিকভাবে কার্যকর করা হবে বেশ জটিল ও কঠিন। কেউ কেউ এমনটাও বলছেন যে, বিএনপি-জামায়াত জোট বা ঐক্যফ্রন্ট যদি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে তৎপর হয় এবং সরকার যদি এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তবে মানুষ সরকারের পক্ষে দাঁড়াবে।

কিন্তু দলীয় কেউ অনিষ্টকর ও অনভিপ্রেত কোনো কাজ করলে এবং করে পার পেয়ে গেলে এবার হবে দারুণ বিরূপ ও তীব্র প্রতিক্রিয়া। প্রসঙ্গত বলতেই হয় যে, গত শনিবার রাতে সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা ছিনতাইয়ে জড়িত থাকায় দলীয় সঙ্গীরাই তাকে মারধর করে হল থেকে বের করে দেয়।

পত্রিকার খবর অনুযায়ী এই নেতা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরীর অনুসারী ও অনুগত। নির্বাচনের আগে কখনো ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের এমন প্রতিরোধ-প্রতিবাদের ঘটনা শুনিনি। নির্বাচনে বিরাট বিজয়ের পর ছাত্রলীগের ভালোরা এখন খারাপের বিরুদ্ধে কতটা তাতিয়ে আছে, এই ঘটনা তা থেকে সুস্পষ্ট।

নিঃসন্দেহে এই যাত্রার গণমেজাজ হচ্ছে ‘জিরো টলারেন্স’। এই অবস্থায় দুর্নীতি-সন্ত্রাস বিষয়ে সরকার ও দল যদি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি কার্যকর না করে তবে বিজয়ে অর্জিত বিরাট প্রাপ্তি বিরাট বিপদ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, স্বাধীনতার পর প্রত্যাশার পারদ যখন সুউচ্চে তখন দল ও সরকারে ওপর থেকে নিচে চেইনসহ গড়ে ওঠা ‘চাটার দল’-এর সর্বনাশা উৎপাত বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এ ক্ষেত্রে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হোক, তা জনগণ চায় না।

আরো একটি দিক থেকেও বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। তাহলো আকস্মিকভাবে কোনো বিশেষ শ্রেণি-পেশা মানুষের আন্দোলন। যা বিগত সময়ে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা আন্দোলন প্রভৃতির ভেতর দিয়ে ব্যাপক রূপ নিয়েছিল। ইতোমধ্যে গত রবিবার পূর্ব ঘোষণা ছাড়া বকেয়া বেতনভাতা ও সরকারের নির্ধারিত মজুরির দাবিতে বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা ৫ ঘণ্টা বিমানবন্দর সড়ক বন্ধ করে রেখেছে।

টঙ্গীতেও একই দাবিতে কারখানা-দোকানপাট ভাঙচুর এবং শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ধরনের স্বতঃস্ফূর্ত ঘটনায় পুলিশি অ্যাকশন যে কোনো ধরনের বড় বিক্ষোভের সৃষ্টি করতে পারে।

আওয়ামী লীগের সংগঠন আছে সর্বত্র ছড়িয়ে, সরকারি প্রশাসনের হাতও কম প্রসারিত নয়। তাই এমন সব ধরনের ঘটনা ঘটার আগে কিংবা সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগ সংগঠন ও সরকার যদি তৎপর হয়, তবে অনেক ক্ষেত্রেই অনভিপ্রেত ক্ষোভ-বিক্ষোভ এড়ানো সম্ভব। এটা এখন সময়ের দাবি।

সবশেষে এটুকুই বলতে হয়, বিরোধী শিবির যখন গণবিচ্ছিন্ন কিংকর্তব্যবিমূঢ়, বিধ্বস্ত ও দিকনির্দেশহীন, তখন আওয়ামী লীগই প্রকৃত বিচারে আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জ। কতটুকু পারবে আওয়ামী লীগ? ইশতেহারের শেষে বিপ্লবী কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যয় ও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ/প্রাণপণে পৃথিবীর সরাবো জঞ্জাল,/এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি-/নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’ উল্লিখিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে নেত্রীর আবেগ-অনুভূতি-অঙ্গীকারের সঙ্গে কতটুকু থাকতে পারবে আওয়ামী লীগ, তার ওপরেই নির্ভর করবে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ সামনের পাঁচ বছরে কতটুকু অগ্রসর হবে।

লেখক : রাজনীতিক।

এইচআর/পিআর